একইমণ্ডপ। একচালার তিনটি দুর্গা প্রতিমা। পাশাপাশি তিনটে দুর্গা মূর্তিতে পৃথক ভাবে পুজো হচ্ছে। কয়েক শতাব্দী ধরে এই নিয়মই মেনে চলছে নবগ্রামের রায়চৌধুরী পরিবার। পুজো শুরুর কয়েক বছর পর থেকেই আজও তাই একই মণ্ডপে তিনটি দুর্গাপুজো হয় নবগ্রামের গুরাপাশলা গ্রামের রায়চৌধুরী বাড়ির পুজোয়।
পরিবারের এক সদস্য নিখিল রায়চৌধুরীর মতে, তাঁদের বাড়িতে এই দুর্গাপুজো সাড়ে তিনশো বছর ধরে হয়ে আসছে। তবে, এই দুর্গাপুজোর শুরু ঠিক কবে থেকে, তা জানা যায়না। তিনি জানান, প্রথমে এই দুর্গাপুজো করতেন ‘ভৈরবীমা’ নামে এক তন্ত্র সাধিকা। ওই সময়ে পুজো হত শুধু বেদীর উপরে। কোনও মন্দির ছিলনা, দুর্গাপ্রতিমাও ছিলনা। পরে 'ভৈরবীমা' এর কাছ থেকে দুর্গাপুজোর দায়িত্ব পান তৎকালীন জমিদার মথুরানাথ রায়। মথুরানাথ রায়ের সময়ে এক পুরোহিত ওই দুর্গাপুজো করতেন। তিনিই ধ্যানস্থ অবস্থায় দুর্গার যে প্রতিমা কল্পনা করেন, সেই অনুসারে মূর্তি বানিয়ে তখন থেকেই শুরু হয় প্রতিমা পুজো।
অন্যত্র দেবী দুর্গা দশভুজা হলেও রায়চৌধুরী বাড়ির তিনটি প্রতিমাই তাই চারহাত বিশিষ্ট। শোনা যায়, মথুরানাথের ভাইদের মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছিল পুজো। তারপরে থেকে একই মণ্ডপে একসঙ্গে তিনটি দুর্গামূর্তির পুজোশুরু হয়।
আরও পড়ুন: কুমোরটুলি থেকে প্যান্ডেল, চার দিনে চুটিয়ে ঘুরুন অনলাইনে
তিনটি দুর্গা প্রতিমা পুজো করেন তিনজন পুরোহিত। আলাদা ভাবে তিনটি মূর্তির জন্য ফল কাটা হয়। ভোগ নিবেদনও করা হয় আলাদা ভাবেই। প্রথম থেকেই এখনও রায়চৌধুরী বাড়ির পুজোয় বলি প্রথা চালু আছে। তবে তিনটি দুর্গামূর্তির একই সঙ্গে, আলাদা আলাদা ভাবে পুজো হলেও পুজো শেষের হোমযজ্ঞ একই যজ্ঞকুণ্ডেই হয়। সেখানে তিনজন পুরোহিত মিলে একসঙ্গে যজ্ঞ করে এক হাজার আটটি বেলপাতা
আহুতি দেন। নিখিল বাবু বলেন, ‘‘পুরনো প্রথা মেনেই এখনও পুজো হয়। আমাদের বাড়ির পুজোয় বাইরে থেকে কোনও চাঁদা তোলা হয়না৷’’
আরও পড়ুন: স্লগ ওভারে ব্যাটে রান, খুশি কুমোরটুলি
প্রতীকী ছবি