জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি
অনেকগুলি ধাপ পেরিয়ে ভাবে, ভক্তিতে, অঙ্গসজ্জায় ধীরে ধীরে একটি মাটির প্রতিমা মৃণ্ময়ী থেকে চিন্ময়ী হয়ে ওঠে। পরম যত্নে এক-একটি তুলির টানে প্রতিমায় প্রাণসঞ্চার করেন শিল্পী। দেশমাতৃকার ভাবনা থেকে ভারতবর্ষ যদি একটি প্রতিমা হয়, তবে তার প্রাণভোমরা হল ভারতীয় সংবিধান। ভাবছেন পুজোর সঙ্গে সংবিধানের যোগ কোথায়? আছে, কারণ এ বছর এমনই অবাক করা থিমে সেজে উঠছে সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্কের পুজো। এ বার এই পুজোর ৭৫ বছর পূর্তি। ভারতীয় সংবিধানেরও এটি ৭৫তম বছর। তাই এই দুইয়ের মেলবন্ধনেই গড়ে তোলা হচ্ছে পুজোর থিম।
ভারতীয় সংবিধান ও পুজোর ৭৫ বছরকে একত্রে উদ্যাপন করার ভাবনা থেকেই সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্কের পুজোয় থিমের নামকরণ হয় ‘উদ্যাপন’। মূল সংবিধানের পাতায় পাতায় রয়েছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। রয়েছে নিখুঁত সব নকশা। সংবিধানে অলঙ্করণের দায়িত্বে ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী নন্দলাল বসু। সেই অলঙ্করণকেই মণ্ডপসজ্জায় থিম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। ইট, লোহা, কাঠ, কাগজে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে সংবিধানে থাকা নকশাগুলিকে। শিল্পচেতনার সঙ্গে উদ্যাপিত হচ্ছে দেশপ্রেমের অনুভূতিও। সমসাময়িকের সঙ্গেই ছুঁয়ে যাওয়া হচ্ছে ইতিহাসকে।
পুজোর প্রধান শিল্পী অসীম পাল আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “এ বছর আমাদের ক্লাবের ৭৫ বছর। সবাই আমরা উদযাপনের মেজাজে রয়েছি। তার পরে জানলাম যে দেশের সংবিধানেরও এ বার ৭৫ বছর। সেখান থেকেই ভাবনাটা শুরু হয় যে, আমরা তা হলে সংবিধানকেও উদযাপন করতে পারি।”
অসীম বাবু বলেন, “সংবিধানের ডিজাইনের উপরেই আমি জোর দিয়েছি। তাকেই নানা ফর্মে আনার চেষ্টা করছি। কখনও ইটে করছি, কখনও প্রিন্টে, কখনও বা ছবি এঁকে।”
এই পুজোর শৈল্পিক উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন জয়শ্রী বর্মণ, সমগ্র ভাবনায় অসীম পাল, প্রতিমাশিল্পী সুরজিৎ পাল। আবহে আছেন দীপময় দাস এবং আলোকসজ্জায় দেবব্রত মাইতি।
কী ভাবে যাবেন?
এই ‘উদ্যাপন’এর সাক্ষী হতে চাইলে জেনে নিন কী ভাবে যাবেন সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্কে। বাইপাস ধরে এলে সুকান্ত সেতুর মুখে বাঁ দিকে পড়বে এই পুজো। যদি যাদবপুর হয়ে যান, তবে সুকান্ত সেতু পেরিয়ে ডান দিকে মণ্ডপ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।