বিশ্বকর্মার বৈদিক রূপের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এই প্রশ্নের উত্তর। দুর্গা পূজার সঙ্গে যেন জড়িয়ে আছে এই দেবতার আরাধনা। কারণ, ভাদ্রের সংক্রান্তি হল বিশ্বকর্মা পূজার নির্দিষ্ট তিথি। শরত ঋতুর আগমনে দেবী পূজার জন্য সকল মানুষের মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
বৃহদ্দেবতা গ্রন্থ অনুসারে বিশ্বকর্মা হলেন, ‘বর্ষাকালীন সূর্য’। গ্রীষ্মকাল শেষ হয়েছে। মাটি শুষ্ক, রুক্ষ হয়েছে। বর্ষার জল ব্যতিরেকে শস্য উৎপাদন সম্ভব নয়। যিনি বিশ্বের কর্ম বা কৃষিকর্ম সৃষ্টি করেন, সূচনা করেন, তিনিই বিশ্বকর্মা। ধরিত্রী শস্য শ্যামলা না হলে দেবী মহাশক্তির আবির্ভাব হবে কী করে?
তাই বিশ্বকর্মা আসেন, ধরিত্রীকে সজ্জিত করেন, তবেই দেবী উপস্থিত হন আমাদের দুয়ারে। বিশ্বকর্মা পূজার ঢাকের বাদ্দি আমাদের মনকে মাতৃমুখী করে তোলে। আশ্বিন শুরু হয়, সূচনা হয় আগমনী গানের।
অরন্ধন কী?
বিশ্বকর্মা পূজার সঙ্গে বেশ কিছু আচার যুক্ত হয়ে আছে যার সঙ্গে বিশ্বকর্মা আরাধনার কোনও সম্পর্ক নেই। যেমন অরন্ধন। ভাদ্র সংক্রান্তির দিন, অর্থাৎ বিশ্বকর্মা পূজার দিন অরন্ধন পালিত হলে সেই অরন্ধনকে ‘বৃদ্ধারন্ধন’ বলে। আর ভাদ্র মাসের অন্য যে কোনও দিন হলে তাকে ‘ইচ্ছারন্ধন’ বলা হয়।
অরন্ধন মূলত একটি ব্রত। অরন্ধন দিনে কোনো রান্না করা যাবে না। এই ব্রততে বাসি অন্ন-ব্যঞ্জন দেবী মনসাকে উতসর্গ করে গ্রহণ করা হয়। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে বিশ্বকর্মা পূজার সম্পর্ক নেই। কিন্তু পরবর্তীকালে তা সংযুক্ত হয়ে গিয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।