ক’দিন পরেই পুজো। মা তাঁর বাহন সিংহের পিঠে চড়ে চার ছেলে মেয়েকে নিয়ে আসবেন বাপের বাড়ি। ছেলে মেয়েদেরও নিজেদের বাহন রয়েছে। কার্তিকের বাহন যেমন ময়ূর, গণেশের ইঁদুর, স্বরসতীর রাজহাঁস আর লক্ষীর পেঁচা। পুরাণ মতে, প্রায় সব দেব-দেবীরই একটি করে বাহন রয়েছে। আর সেই বাহনের পিছনে রয়েছে একটি করে কাহিনিও।
তেমনি দশভূজার বাহন কেন সিংহ, এই নিয়েও রয়েছে নানা প্রচলিত কথা। পুরাণ মতে, মহাদেবকে স্বামী রূপে পাওয়ার আশায় দীর্ঘ তপস্যায় লিপ্ত হন দেবী পার্বতী। তপস্যায় তুষ্ট হয়ে দেবীর ডাকে সাড়া দেন মহাদেব। বিয়ে করেন দেবীকে। হাজার বছর ধরে তপস্যায় মগ্ন হয়ে থাকায় দেবী অন্ধকারে মিশে গিয়েছিলেন। আর এই কারণেই বিয়ের এক দিন পরেই পার্বতীকে কালী বলে সম্বোধন করেন মহাদেব। তখন দেবী অভিমানে কৈলাস ত্যাগ করে আবার তপস্যায় মগ্ন হয়ে পড়েন।
এই সময়ে এক ক্ষুধার্ত সিংহ দেবী পার্বতীকে শিকারের আশায় তাঁর দিকে যায়। কিন্তু দেবীকে ধ্যান মগ্ন দেখে সেখানেই চুপ করে বসে পড়ে। তপস্যা শেষে দেবী তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করবেন এই আশায়। এ দিকে তপস্যা শেষে দেবী পার্বতী গঙ্গায় স্নান করলে আর্বিভাব হয় দেবী কৌশিকীর। তখন এই সেই দেবী অপেক্ষারত সিংহকে তাঁর বাহন রূপে গ্রহণ করেন।
আবার শ্রী শ্রী চণ্ডী অনুসারে দেবতাদের তেজ রশ্মি থেকে জন্ম হয় দেবী দুর্গার। জন্মের পর অসুর বধের জন্য সব দেবতারা তাদের অস্ত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলেন দেবীকে। তখন গিরিরাজ হিমালয় দেবীকে দান করেন তাঁর বাহন সিংহ। সিংহ প্রচণ্ড বল এবং শক্তির প্রতীক। সাবেকি মূর্তিতে দেবীর পায়ের তলায় মহিষ বধ করতে দেখা যায় সিংহকে। আবার দেবী জগদ্ধাত্রী, দেবী কাত্যায়ণী এবং দেবী স্কন্ধমাতাকেও সিংহের উপরে চড়াও রূপে দেখা যায়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।