কালীপুজো জুড়ে আছে অসংখ্য অলৌকিক কাহিনি। যা শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে। তেমনই এক গল্প আছে উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটের শ্যামসুন্দরী কালীকে নিয়েও। মানুষের বিশ্বাস, এই মন্দিরে কালী মায়ের জীবন্তরূপ বিরাজ করে। তাই অনেকে এই মন্দিরকে জীবন্ত কালীর মন্দিরও বলে থাকেন। এখানে কালীকে একটি ছোট্ট মেয়ে রূপে পুজো করা হয়। তাই এই মন্দিরে পালিত হয় না অম্ববাচি। এখানে ঠাকুরকে কোনও রকম মাছ-মাংস ভোগ দেওয়া হয় না। প্রত্যেক ভক্তের বিশ্বাস, এই শ্যামসুন্দরী মা কখনও কাউকে খালি হাতে ফেরান না। সবার মনের কথা তিনি শোনেন।
গর্ভগৃহের ভিতর মায়ের অপরূপ ছোট মূর্তি চোখে পড়ে। মায়ের সঙ্গে দেখা যায় জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামকে। তা ছাড়াও এখানে মায়ের পাশে আছেন ভৈরব। বর্তমানে এই উত্তর কলকাতার মন্দিরের কথা দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। দু’বেলা মন্দিরে ভোগ রান্না করা হয়। এবং ভক্তদের সেই ভোগ বিতরণ করা হয়। মন্দিরের সেবায়েতরা বলেন, ‘‘যত মানুষই মন্দিরে আসুন, কেউ প্রসাদ না নিয়ে যান না এখন থেকে। মায়ের স্বপ্নাদেশ ছিল কেউ যেন খালি হাতে না যায়। কোনও দিন প্রসাদের উপাদান কম পড়লে ভিক্ষা করে হলেও ভক্তদের হাতে প্রসাদ তুলে দিতে হবে এমনই নির্দেশ মায়ের।’’
এই মন্দিরে সকাল থেকেই বহু ভক্তের ভিড় দেখা যায়। সবাই বিশ্বাস করে, মা তাঁদের মনবাঞ্ছনা পূরণ করবেনই। তা ছাড়াও মানুষের বিশ্বাস এই কালী জীবন্ত। অনেকে নাকি মাকে চোখের পলক ফেলতে দেখেছেন। মন্দিরের সেবায়েতরাও নাকি এই বিষয়টি বহু বার অনুভব করেছেন। তাঁদের কাছে জানা যায়, অমাবস্যার রাতে নাকি কালী গোটা মন্দির জুড়ে হেঁটে বেড়ান, কথাও বলেন ফিস ফিস করে। সেই শব্দ বহু বার শুনেছেন তাঁরা। প্রতি অমাবস্যায় মাত্র একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবীর আরাধনা করা হয়। পুজোর সময় শোনা যায় মায়ের নিশ্বাস। শুধু পুরোহিতরাই নন, অনেকেই নাকি শ্যামসুন্দরীর উপস্থিতি অনুভব করেছেন। প্রত্যেক অমাবস্যাতে ভক্তরা দূর থেকে ছুটে আসেন এই মন্দিরে। আপনিও ঘুরে আসতে পারেন উত্তর কলকাতার এই অলৌকিক মন্দিরে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।