ঘরের নিরাপত্তায় নজর দিন।
আমরা আমাদের ঘর ইচ্ছা মতো সুন্দর করে সাজাতেই পারি। অন্য কারও ঈর্ষার কারণ হতে পারি। দিনান্তে নিজেদের সুন্দর, সাজানো ঘরে এসে স্বর্গীয় অনুভূতি উপভোগ করতেও পারি। কিন্তু কখনওই প্রয়োজনীয়তা এবং নিরাপত্তাকে এড়িয়ে কিচ্ছু করতে পারি না।ঘর সাজানোর চেয়েও ঘরের নিরাপত্তার বেশি গুরুত্ব পাওয়া দরকার।
অন্দরসজ্জা করার সময় তাই সবসময়ই নিরাপত্তার ব্যাপারটার দিকেও নজর দেওয়া দরকার।যেমন ধরুন, ফ্রেঞ্চ উইন্ডো দেখতে খুবই সুন্দর।ঘরের মধ্যে এমন একখানা বড় মাপের জানালা হলে মনটাই ভাল হয়ে যায়।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এমন সুযোগ কি আমরা খুব একটা পাই?পাই না।কারণ আট ফুট বাই আট ফুট মাপের এমন একটা দেওয়াল জোড়া জানালা করতে গেলে আগে-পিছে অনেক কথাই ভাবতে হয়।যেমন ভাবতে হয়, বাইরে গ্রিল না দিলে শুধু কাচ দেওয়া জানালা কতটা নিরাপদ হবে।এ ধরনের বড় মাপের জানালা বা ফ্রেঞ্চ উইন্ডোতে বাইরের গ্রিল সাধারণত দেওয়া হয় না।দেখতে ভাল লাগে না।সুতরাং নিরাপদ জোন বাদ দিয়ে এ ধরনের জানালা আমরা ব্যবহার করতেই পারি না।তবে এখন যেমন অনেক হাউজিং কমপ্লেক্স হচ্ছে চারপাশে,যেগুলো সিকিউরিটির দিক থেকে সেফ,সে সব জায়গায় ফ্রেঞ্চ উইন্ডো লাগানো হচ্ছে আজকাল।
বাড়ির অলংকার বা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বস্তু অথবা দামী কিছু সাধারণত সবাই ব্যাঙ্কের লকারেই রাখেন।কিন্তু লকারে রাখার পরেও এমন অনেক কিছু থেকে যায় যেগুলোকে খুব গোপনীয় কোনও স্থানে রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।এখন বাজারে সেফটি বক্স পাওয়া যায়।মেটালিক ভারী চেহারার এবং নম্বর লক করা।সুতরাং খুব সহজে এটি খোলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।তবে আসল কাজটি হচ্ছে এই সেফটি বক্সটিকে কোনও গোপনীয় জায়গায় রেখে দেওয়া।যেমন, এমন হতে পারে ওয়ার্ডরোবের কোনও বিশেষ জায়গার গোপনীয়তা বজায় রেখেবক্সটাকে রেখে দেওয়া।বাইরে থেকে যেন কোনও ভাবেই বোঝা না যায়।শুধু তাই নয়, খুব বিশ্বস্ত কোনও কাঠের মিস্ত্রি দিয়েই এই পুরোপদ্ধতিটা করাবেন,নাহলে বিষয়টি গোপন থাকবে না।
আরও পড়ুন: কার্পেটে সাজানোর শখ? কিন্তু নিয়ম জানেন তো?
নিজেদের ফ্ল্যাট কিংবা ঘরের মধ্যেও খুব সহজে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়ে নিতে পারেন।বাড়ির বা ফ্ল্যাটের প্রবেশ দরজার সামনে এবং ডাইনিং রুমে বসিয়ে নিলে ভাল।একটু ভাল কোয়ালিটির ক্যামেরা বাজারে খুব একটা বেশি দামও নয়।মেমরি স্টোর করে রাখার জন্য মেমরি কার্ড লাগিয়ে নেবেন।এবং বাড়ির ইন্টারনেট কানেকশনটা সবসময় অন থাকলে আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, আপনার বাড়িতে কী হচ্ছে,বাইরের লোক ঢুকছে কিনা সবটাই নিজের মোবাইল কিংবা ল্যাপটপেই জানতে পারবেন।বাড়ির নিরাপত্তার জন্য এটি আধুনিক বিকল্প।
প্রবেশ দরজা আই কনট্যাক্টে খুলবে,এমনটাও কিন্তু কলকাতায় চলে এসেছে।সুতরাং দরজার লক ভেঙে ঘরে প্রবেশ করা সেক্ষেত্রে সম্ভব নয়।যদি কেউ অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আপনার ঘরে প্রবেশ করতেও চায় তাহলে তাকে দরজা ভাঙতে হবে।আর তাতে শব্দ হবে।সফল হবে না অসৎ উদ্দেশ্য।তাই প্রবেশ লকে আই কন্ট্যাক্ট লক ব্যবহার করতেই পারেন।
ফায়ার সেফটির দিকে নজর রাখাটা খুবই দরকার।ওয়্যারিংয়ের তার সঠিক এবং ভালমানের লাগাবেন।এখন প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই এসি।ইলেকট্রিক অফিসে না জানিয়ে এসি কিনবেন না।বাড়ির আর্থিং ঠিক আছে কিনা দেখে নেবেন।দরকারে একটু খরচসাপেক্ষ হলেও ভাল করে আর্থিং করিয়ে নেবেন।ইলেকট্রিক ডিস্ট্রিবিউশন বক্সটা সহজে নাগাল পাওয়া যায় এমন জায়গায় লাগাবেন।সামান্য শর্ট সার্কিট হলেই ইলেকট্রিক লাইন অফ হয়ে যাবে,এমন সার্কিট লাগিয়ে রাখবেন।বাড়ির বাইরের কলিং বেলটার উপরে শেড রাখবেন, যাতে বৃষ্টির জলে যখন তখন শক খাওয়ার সম্ভবনা থাকবে না।
আরও পড়ুন: জিনিসপত্র বেড়ে গিয়েছে? এমন নকশাদার কুলুঙ্গি বানিয়ে নিন
সুতরাং বাড়ি সাজানোর সঙ্গে বাড়ির নিরাপত্তার দিকটিও খতিয়ে দেখুন, তবেই কিন্তু ঘর সাজানোর আভিজাত্যে যোগ হবে বিবেচনার ছাপ।