প্রতীকী ছবি
বাঙালি উৎসবে মাতবে আর কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া হবে না? দুর্গাপুজো, কালীপুজো এবং ভাইফোঁটা- রকমারি পদে জমিয়ে পেটপুজো হয়েছে, যথেচ্ছ পরিমাণে খেয়েছেন বাইরের খাবারও। উৎসবের দিনগুলো পেরিয়ে এ বার পেটের সমস্যা বেশ ফাঁপরে ফেলছে প্রায়শই? কী করণীয় এই সমস্যা এড়াতে?
আনন্দ উৎসবের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললেন টেকনো ইন্ডিয়া ডামা হসপিটালের কনসালট্যান্ট তথা গ্যাস্ট্রো সার্জেন চিকিৎসক শুদ্ধসত্ত্ব সেন। তাঁর কথায়, “উৎসবের সময়ে খাওয়ার অনিয়ম হয়েই থাকে। ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তো রয়েছেই। অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা বা ডায়াবেটিস থাকলে সেগুলির মাত্রাও ওঠানামা করতে থাকে। হরমোনের সমস্যা থাকলে তারও স্থিতিশীল অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যায়। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়েরিয়াও হতে পারে। তাই সব সময়ে সীমিত খাবার খাওয়া উচিত। প্রয়োজনে হজমের ওষুধ খেতে পারেন।“ ওই চিকিৎসকের মতে, এক দিন যদি ভুলভাল খাওয়া হয়ে যায়, তা হলে পরের কয়েক দিন একটু স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ভাল। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা বা হাঁটা জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম, যোগব্যায়ামের সঙ্গে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকারও চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিত ধূমপান বা মদ্যপান অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস, লিভারের সমস্যা ডেকে আনে। তাই এই অভ্যেসগুলি ছাড়তে পারলেই ভাল। পুজোর দিনগুলোয় শরীরে বেশি ক্যালোরি জমে থাকলে এ বার তা ঝরানোর দিকটি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
প্রতীকী ছবি
নজর দিতে হবে ডায়েটের দিকেও, জানাচ্ছেন কনসালট্যান্ট ডায়েটিশিয়ান স্বাতী সমাদ্দার। অ্যাপোলো ক্লিনিক, ঠাকুরপুকুর, পাল্স, মোহন মেডিক্যাল, ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে যুক্ত তিনি। স্বাতীর কথায়, “এই কয়েক দিনে বাইরের খাবার এবং জল খাওয়া, তৈলাক্ত খাবার বেশি খাওয়া ছাড়াও অন্যান্য অনেক অনিয়ম হয়েছে। এখন সময় আবার পুরনো রুটিনে ফিরে যাওয়ার। প্রচুর জল খেতে হবে। প্রয়োজনে পাতিলেবু মেশানো জল খেতে পারেন। কারণ জল আমাদের শরীরকে ডিটক্স করে। এছাড়াও ডায়েট চার্ট অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। কোন সময়ে কোন খাবার খাচ্ছেন, সে দিকে নজর রাখতে হবে। জলখাবারে হয়তো চিঁড়ে, মুড়ি, অফিসে বেরনোর থাকলে ভাত বা রুটি খেলেন। সঙ্গে থাকল সবজি আর একটা ডিম সেদ্ধ। দুপুরের খাবারে থাকল ভাত, ডাল, তরকারি, মাছ বা চিকেন যে কোনও একটি। সঙ্গে থাকল টক দই। সন্ধ্যায় স্ন্যাকসে রাখতে পারেন এক স্লাইস পাউরুটি, সঙ্গে স্যালাড অথবা সুজির উপমা। ডিনারে রাখুন রুটি বা ভাত, সঙ্গে নানা রকমের সবজি অথবা প্রোটিন জাতীয় খাবার। ডায়েটে রাখতে হবে নানা রকমের ফল। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে পারলে ভাল। না হলে নিদেন পক্ষে, জোরে জোরে হাঁটতে পারেন নিয়ম করে।”
বাড়ির ছোট সদস্যদের ক্ষেত্রে কী হবে? চিকিৎসকেরা জানান, বাচ্চারা সব সময়েই কোনও না কোনও অ্যাক্টিভিটির মধ্যে থাকে। তাই আলাদা ভাবে কোনও শরীরচর্চার তেমন প্রয়োজন নেই তাদের। কারণ মূলত ছোটাছুটির মধ্যেই তাদের দিন কাটে। তবে খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। বাইরের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যতটা সম্ভব খাওয়াতে হবে পুষ্টিকর খাবার।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।