প্রতীকী চিত্র
বাঙালির উৎসব যেন শেষ হয় না। দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজোর পরে কালীপুজো, পেরিয়ে এসে, বাঙালির সামনে এখন ভাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। বারো মাসে তেরো পার্বণের অন্তিম লগ্নে এসে উপস্থিত প্রায়। আর ভাইফোঁটা বা ভাতৃ দ্বিতীয়ায় বাঙালি বাড়িতে ভাইদের জন্য থাকে এলাহি আয়োজন। কারও ভাই শহরের বাইরে, কারও ভাই দেশের বাইরে, কারও দিদি আবার প্রবাসী। তাঁরা অবশ্য ভাইফোঁটার চিরন্তন স্মৃতি নিয়েই থাকেন। আর আশায় আশায় দিন গুনতে থাকেন, কবে দিদিরা ভাইদের এবং ভাইরা দিদিদের কাছে পাবেন।
ভাইফোঁটায় জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া বঙ্গ জীবনের অঙ্গ। দিদিরা ভাইদের কত ভাল রেঁধে খাওয়াতে পারে, তার প্রতিযোগিতা চলে বাড়িতে বাড়িতে। আর ঘরে বানানো সহজ কোনও রান্না দিয়ে যদি ভাইয়ের মন আপনি জয় করতে পারেন, তা হলে তো তার কোনও তুলনাই হয় না। তাই ভাইফোঁটার ঠিক আগেই এমন একটি রেসিপির সন্ধান দেওয়া হল, যা বানানো সহজ এবং খেতে হবে দুর্দান্ত। এক কথায় আপনার ভাইফোঁটা জমে পুরো ক্ষীর।
হায়দ্রাবাদি 'মটন মারাগ' রেসিপিটা হায়দ্রাবাদের একটি পুরনো ও জনপ্রিয় রেসিপি। সাধারণত রেস্টুরেন্টে স্টারটার বা একদম প্রথম পদ হিসেবে পরিবেশন করা হয়। আগে মটনের লাল অথচ পাতলা ঝোল বা স্টু হিসেবে এই পদ পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে এই স্টু সাদা ঝোল হিসেবে জনপ্রিয়তা পায়। ক্রমে পুষ্টি ও ক্যালরিতে ভরা এই 'মটন মারাগ' বাঙালির ভাত, রুটি, পরোটা বা বিরিয়ানির পাশে জায়গা করে নিয়েছে।
তাহলে দেখে নেওয়া যাক রেসিপিটি -
উপকরণ- ঘি, সাদা তেল, গোটা গরম মশলা, শাহী জিরে, শাহী মরিচ, কবাব চিনি, কুঁচো করে কাটা পেয়াঁজ, রসুন কুচি, কুঁচো করে কাটা ধনেপাতা এবং পুদিনা পাতা, কাজুবাদাম, আমন্ড বাদাম, টক দই, দুধ এবং পরিমাণ মতো মটন।
কড়াইতে ঘি বা সাদা তেল দিয়ে, গোটা গরম মশলা, কবাব চিনি, শাহী জিরে, শাহী মরিচ দিয়ে দিন। তেলে ভাল করে ফোড়ন ভাজা হয়ে গেলে, কেটে রাখা কুচনো পেঁয়াজ দিয়ে দিন। এর পর পরিষ্কার করে ধুয়ে রাখা মটনের টুকরোগুলো দিয়ে দিন। ভাল করে ভাজতে হবে মটনটা। এর পর তাতে আদা কুঁচি এবং রসুন কুঁচি দিয়ে দিন। তার পর পুদিনা পাতা এবং ধনে পাতা কুঁচি দিয়ে দিন। কড়াইতে ঢাকনা দিয়ে ভাল করে সেদ্ধ হতে দিন মটনটা। কিছু ক্ষণ পর ঢাকনা খুলে মিহি করে বেটে রাখা কাজুবাদাম, আমন্ড এবং দইয়ের পেস্ট দিয়ে দিন। খানিক নাড়াচাড়া করুন। এ বার খানিকটা উষ্ণ দুধ মিশিয়ে দিন। সঙ্গে দিন কেটে রাখা কাঁচালঙ্কা। নুন ও মিষ্টি পরিমাণ মতো দিন। এরপর উষ্ণ গরম জল ঢেলে দিন। কড়াইয়ে ঢাকনা দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। সেদ্ধ হয়ে গেলে, আরও কিছুটা ধনেপাতা কুঁচি মিশিয়ে দিন। ব্যস তৈরি হয়ে গেল আপনার এবং আপনার ভাইয়ের প্রিয় মটন মারাগ।
এ বারের ভাইফোঁটায় আপনাকে এই অভিনব পদটি রাঁধতেই হবে। তাই না?
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।