খাবারের জন্য যুদ্ধ হতেই পারে। সৃষ্টির আদি যুগ থেকেই তো খাবারের লড়াই আসলে টিকে থাকারই লড়াই। এবং তার জন্যই এলাকা দখলের লড়াইও।
কিন্তু খাবার কি কখনও যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারে? হ্যাঁ, ইতিহাসে তেমন উদাহরণও আছে। এবং এই খাবারটি আর কিছুই নয়। মিল্ক স্যুপ। কী ভাবে যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিল এই স্যুপ?
জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে ১৫২৯ সালে। তখন খ্রিস্টধর্মের ওপর কাদের আধিপত্য থাকবে, তা নিয়ে যুযুধান ইউরোপের দুই পক্ষ। জুরিখের প্রোটেস্ট্যান্ট এবং জুগের ক্যাথলিক দল লড়ে চলেছে পরস্পরের বিরুদ্ধে।
যুদ্ধের দামামা বেজেই চলেছে সুইৎজারল্যান্ডের কাপেল এলাকায়। একের পর এক প্রাণ যাচ্ছে। যুদ্ধ চলতে চলতে তখন দুই পক্ষই ক্লান্ত। রণক্লান্ত সেনাদের পেটে ছুঁচোয় ডন মারছে খিদের চোটে। ফলে দুই পক্ষই ঠিক করল, কিছুটা বিশ্রাম নেবে।
আর এই সময়ে খাওয়া হবে স্যুপ। দুধের স্যুপ। কী ভাবে বানানো হয়েছিল সেই স্যুপ? সে রেসিপি এখন ইতিহাসের পাতায় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে ফলমূলের সঙ্গে কিছুটা মাংস দুধে ফেলে সেই স্যুপ বানানো হয়েছিল বলে মত বহু ঐতিহাসিকের।
যাই হোক, যুদ্ধের ময়দানে বানানো হল স্যুপ। খেতে বসল দুই পক্ষ। ঠিক হল, স্যুপ খাওয়া যত ক্ষণ চলবে, যুদ্ধও তত ক্ষণ থেমে থাকবে।
এমনই সেই স্যুপের মাহাত্ম্য, কয়েক ঘণ্টা যে যুদ্ধের থেমে থাকার কথা ছিল, তা থেমে গেল কয়েক বছরের জন্য।
পরবর্তী কালে সুইৎজারল্যান্ডের ইতিহাসে এই মিল্ক স্যুপ তাই এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসাবে স্থান করে নিয়েছে।
এখন অনেকেই এই স্যুপ তৈরি করেন বাড়িতে। পাওয়া যায় রেস্তরাঁতেও। কাপেলের মিল্ক স্যুপ নামে খ্যাত এই খাবার।
তবে কাপেলের যুদ্ধের ময়দানে সে দিন এই স্যুপের কেমন স্বাদ ছিল, তার সঙ্গে আজকের স্যুপের স্বাদের কতটা পার্থক্য— এ সব কথা এখন আর বিশেষ জানা যায় না। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।