বাঙালি পদ হিসাবে পরিচিত কিন্তু...
বাঙালি মানেই ভোজন রসিক। বেশ কিছু পরিচিত পদ আমাদের পাতে প্রায়শই জায়গা করে নেয়। শুধু তাই নয়, উৎসবের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টি অঙ্গাঙ্গি ভাবে ভাবে জড়িয়ে থাকে। এই যেমন, পুজোর খাওয়া-দাওয়া অথবা গোটা সেদ্ধ পার্বণ, দু’ধরনের খাবারের চল রয়েছে দু’টি উৎসবে।
কিন্তু জানেন কি, এমন অনেক খাবার বা পদ রয়েছে, যেগুলি বাঙালি খাবার হিসাবে পরিচিতি বা খ্যাতি পেলেও তাদের উৎস কিন্তু এই বাংলা নয়। এই প্রতিবেদনে রইল তেমনই কিছু খাবারের হদিস।
শুক্তো
শুক্তো
শুক্তোবাড়ির খাওয়াদাওয়াই হোক অথবা অন্য কোনও অনুষ্ঠান বাড়ি – শুক্তোকে এড়িয়ে চলতে মোটেই রাজি নয় বাঙালি। কিন্তু এই পদের আসল উৎস হল কেরল। ওখান থেকেই সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে এই পদ এবং বাংলায় বিপুল ভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আবার অন্য দিকে জানা যায়, প্রাচীন কালে পর্তুগীজদের রোজকার খাবার ছিল শুক্তো।
সিঙাড়া
সিঙাড়া
সময়টা দশম শতাব্দী। সিঙাড়ার উদ্ভব ঘটে মধ্যপ্রাচ্যে, নাম ‘সাম্বোসা’। সিঙাড়া শব্দের উৎপত্তি ফার্সি শব্দ ‘সংবোসাগ’ থেকে। ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীতে মধ্য এশিয়ার ব্যবসায়ীদের হাত ধরে সিঙাড়ার প্রচলন ঘটে ভারত এবং উপমহাদেশের অন্যান্য দেশে।
জিলিপি
জিলিপি
জিলিপি খেতে ভালবাসে না, এমন বাঙালি পাওয়া ভার। তবে এই জিলিপির সৃষ্টি এই বাংলায় তো নয়ই, এমনকি এই দেশেও নয়। মধ্যযুগে তুর্কিরা যখন ভারত আক্রমণ করে, তাঁদের হাত ধরেই এ দেশে জিলিপির আগমন। আরবি শব্দ ‘জুলেবিয়ার’ এবং পার্সি শব্দ ‘জুলবিয়া’ থেকে মূলত পশ্চিম এশিয়ার খাবার এই জিলিপি শব্দটির উৎপত্তি।
চা
চা
কথায় আছে, চা-পাগল বাঙালি। ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা মূহূর্তে বাঙালির অবসর সময় অথবা আড্ডা জমিয়ে তুলতে পারে। আবার কাজের চাপ লাঘবেও এর ভূমিকা রয়েছে। বাঙালির অতি প্রিয় এই চায়ের উৎপত্তি কিন্তু সুদূর চিন দেশে। জানা যায়, চা চাষে চিনের একচেটিয়া আধিপত্যে ভাগ বসানোর উদ্দেশ্যেই ভারতে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৬০০ শতাব্দীতে ডাচ ব্যবসায়ীরা ফুজিয়ান অঞ্চল থেকে চা নিয়ে পাড়ি দেন বিদেশে। এবং তার পরেই ধীরে ধীরে চা ছড়িয়ে পড়ে সারা পৃথিবীতে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের অংশ।