মাটিতে বসে খাওয়াদাওয়ার চল হোক বা প্রিয়জনদের সঙ্গে মাটিতে বসে জমিয়ে বৈঠকি আড্ডা— এই রেওয়াজ আর বাঙালির বাড়িতে নেই বললেই চলে। সময়ের অভাবে এমন অনেক ইচ্ছেই আজ ভাবনার অতীত। আচ্ছা বলুন তো, শেষ কবে ময়দানের সবুজ ঘাসের উপর বসে আড্ডা জমিয়েছিলেন? মনে পরছে না তো? সামনেই পুজো। আর এই পুজোতেই মিটবে আপনার যাবতীয় আক্ষেপ। উৎসবের মরসুমে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সুন্দর আয়োজন করে রেখেছে দক্ষিণ কলকাতার ‘বিউন-দ্য কফি রুম’।
কাফেতে ঢুকেই চক্ষু একেবারে চড়কগাছ! টেবিল আছে তবে চেয়ারের পাত্তা নেই! আসলে জাপানি কায়দায় চেয়ারের কাঠামোয় নরম কুশনের উপর বসে নীচু ডাইনিং টেবিলে খাওয়াদাওয়ার আয়োজনেই এই কাফে বাজিমাত করেছে, যা মন কাড়তে পারে আপনারও!
গত বছরের শেষেই ‘বিউন’ কাফের পথ চলা শুরু। আজকাল কাফে বলতে শুধু কফি আর স্ন্যাক্স তা মোটেই বোঝায় না। কাফেতে বসেও বাঙালি পছন্দ করে পেট ভরানো চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল। শুধু কি তাই? এই কাফেতে আরও পাবেন বাঙালির সাধের সাদা ভাত আর কষা মাংসও। এক কাফেতেই যদি আপনি ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার সবই সারতে পারেন তা হলেই বা মন্দ কী! ‘বিউন’ আপনার জন্য রেখেছে সেই সুবিধাই। পুজোয় থাকছে বিউন স্পেশাল পুজোর মেনু। সেই মেনুতে পাবেন টুনা স্যালাড, চিকেন মোমো, ফিশ ফিঙ্গার, হরেক রকম পাস্তা, চাইনিজ কম্বো। পুজোয় প্যান্ডেল হপিংয়ের ফাঁকে যদি আপনার দুপুরের আবার নিয়ে মাথাব্যথা থাকে, সে ক্ষেত্রেও এই কাফে আপনাকে নিরাশ করবে না। চিকেন কড়াই, মটন কারি, পনির মাখনি, জিরা রাইস ছাড়াও রকমারি সুস্বাদু খাবারের সম্ভার মিলবে এই কাফেতে।
এখন শহরে কাফেগুলির বেশ রমরমা। একটা কফি সঙ্গে কিছু মুখরোচক স্ন্যাক্স নিয়ে ঘণ্টাখানেক আড্ডা! এই ধারণাতেই মজেছে বাঙালির মন। ‘বিউন’-এর মেনুতে স্ন্যাক্সের প্রচুর সম্ভার থাকলেও ফিশ ফিঙ্গার বা ফিশ ফ্রাইয়ের চেয়ে অন্য স্ন্যাক্সই বেশি ভাল লাগবে। তাই স্ন্যাক্সের অর্ডার করলে বরং পাতে তুলে নিন ফিশ চপ বা চিকেন ক্রকেটস। তবে এদের মেন কোর্সের মেনু ট্রাই না করলে ঠকবেন কিন্তু! পুজোতে সকাল এগারোটা থেকে রাত দুটো পর্যন্ত এই খোলা পাবেন এই কাফে।
একটা কথা না বললেই নয় এই কাফের একটা সেকশনে চেয়ার-টেবিলে বসে খাওয়াদাওয়ারও ব্যবস্থা আছে। তাই বাড়ির বয়স্কদের নিয়েও একবার ঢুঁ মারতেই পারেন ১৪এ, লেক ভিউ রোডের ‘বিউন-দ্য কফি রুম’-এ।
‘বিউন’-এর স্ন্যাক্সের রেসিপির মধ্যে জিভে জল আনা চিকেন ক্রকেটস আপনি বাড়িতেও বানিয়ে ফেলতে পারেন। আপনার জন্য রইল সেই স্পেশাল স্ন্যাক্স রেসিপিটি।
আরও পড়ুন: ‘আবার বৈঠক’-এর মগনলালের ঘরে উঁকি দেবেন নাকি! রইল পুজোর মেনু, রেসিপিও!
চিকেন ক্রকেটস
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
প্রণালী:
প্যানে মাখন দিয়ে কুচানো পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম, কাঁচা লঙ্কা, ধনেপাতা, নুন ও মরিচ দিয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করে নিন। এগুলো সেদ্ধ হয়ে ভাজা ভাজা হয়ে এলে গ্যাস থেকে নামিয়ে রাখুন। এর পর এই মিশ্রণটি চিকেন কিমার সঙ্গে মিশিয়ে লম্বাটে আকারে গড়ে নিন। তার পর সেই ক্রকেটসগুলি প্রথমে ময়দায় কোট করুন। তার পর ডিমে চুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বসে পুনরায় কোট করে ডুবো তেলে ভেজে নিন। ককটেল সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন চিকেন ক্রকেটস্।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজ-রসুন ছাড়াই বানিয়ে ফেলুন এই কাশ্মীরি মাটন রেসিপি!
আজকাল সবাই খুব বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। পুজোর ক’দিন ডায়েটকে বাইবাই করলেও তার পরে শরীরের উপর বাড়তি নজর তো দিতেই হবে। লাঞ্চে এক বাটি স্যালাড আপনার পুজো পরবর্তী ডায়েটের জন্য আদর্শ। আর তা যদি হয় সুস্বাদু টুনা মাছের স্যালাড, কেমন হয়? রইল ‘বিউন’ স্পেশাল ‘টুনা স্যালাড’ রেসিপি।
টুনা স্যালাড
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
প্রণালী:
বাজার থেকে টাটকা টুনা মাছ না পেলে আপনি ব্যবহার করতে পারেন ক্যানড টুনা। প্রথমে মাছে নুন ও মরিচ মাখিয়ে হালকা ভেজে নিন। তার পর একটি পাত্রে সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে তাতে ভাজা মাছটি যোগ করুন। হালকা হাতে নাড়াচাড়া করুন যাতে মাছ ভেঙ্গে না যায়। এই ভাবে সহজেই বানিয়ে ফেলুন ‘টুনা স্যালাড’ রেসিপি।