অগ্নিমিত্রা পাল ফ্যাশন
গায়ত্রী দেবীর ব্লাউজ
পুজো এ বার সনাতনী ধাঁচে ঢালা। সনাতনী মেজাজে নিজের সম্মোহন ছড়িয়ে দিন শিউলি ফুলের আকাশে। শাড়িতেই পুজোর মহিমা। একদম ট্র্যাডিশনের সঙ্গে থাকুন। পুজো, তাই হাতে ধরলেন একটা শকিং পিঙ্ক জর্জেটের বেনারসি। বেনারসির ব্লাউজ একদম কাটবেন না। ভাল হয় কালো ভেলভেটের ব্লাউজ, সঙ্গে হালকা জরদৌসীর কাজ থাকলে। একটু জয়পুরের রানি গায়ত্রী দেবীর ব্লাউজ ভাবুন। ক্লোজ গলা, মোটেও ডিপ নয়। কিন্তু পেট দেখা যাচ্ছে, হাত দেখা যাচ্ছে। টোনড লোয়ার অ্যাবডমেন হলে অসম্ভব সেনসুয়াস লাগবে। জোর করে কিছু খুলে দেখানো, কাটাকাটা পোশাক বা ব্লাউজ না-ই বা পরলেন। বরং এই বাঁধনে অনেক বেশি রহস্য ও কৌতূহল তৈরি হয়।
এ বার সময় কনজারভেটিভ এলিগেন্ট হওয়ার। কলারওয়ালা ব্লাউজ খুব চলছে এ বার। কটনের এই ব্লাউজ পরলে শাড়ি খুলে পরবেন না। বাজে দেখাবে। শাড়ি প্লিট করে পরে আঁচল ছোট করুন। প্লিটটা গায়ে এমন ভাবে ফেলুন যে পুরো ব্লাউজটা যাতে দেখা যায়। মোটাদের ক্ষেত্রে বেল স্লিভ ব্লাউজ একদম নয়। যতই তার চল হোক এ বারের পুজোয়। লুজ ব্লাউজ পরলেও ব্যাগি হাত একদম নয়। বেশি ভলিউলুমের ব্লাউজ পরলে মোটাদের আরও মোটা লাগে। আর মোটাদের গায়ে লেগে থাকা শাড়ি পরা ভাল।
কিন্তু ঢাকাই তো ফুলে থাকা শাড়ি। তা হলে কি পুজোতে মোটারা ঢাকাই পরবেন না? পরুন, কিন্তু ভেলভেটের ব্লাউজ দিয়ে পরুন। ভেলভেটের ব্লাউজ শরীরটা চেপে দেয়। শরীর টানটান লাগে। এই পুজো বেনারসি, জামদানি, গাদোয়াল, পচমপল্লি আর লিনেনের পুজো।
আরও পড়ুন:পোশাক ও গয়নায় ‘উমার সাজে’, আয়োজনে অপরাজিতা আঢ্য
পুজোয় এ বার...
ধোতি প্যান্টসের সবচেয়ে বেশি চল। তার সঙ্গে লং কুর্তা। কুর্তার সঙ্গে জ্যাকেট। বা সি থ্রু চান্দেরি ওড়না। যদি মোটারা পরেন তবে তাঁদের কুর্তা ফিটেড হতে হবে। উপর-নীচ দুটোই ভলিউম হলে মোটা লাগবে। ধুতি নিলেন শকিং পিঙ্ক। নীচের গ্রে। এখন মিন্ট গ্রিন অ্যাকোয়া কালারের চল বাড়ছে। তবে ভারতে অরেঞ্জ ইজ নিউ ব্ল্যাক। মনে রাখবেন, এটা ফ্যাশন দুনিয়ার ট্রেন্ড। শারারা আর পালাজো এ বার হই হই করে জায়গা করে নিচ্ছে। এর সঙ্গে ছোট কুর্তি। রঙে এক্সপেরিমেন্ট করুন নিশ্চিন্তে। শকিং পিঙ্ক, পার্পল, অলিভ গ্রিনের সঙ্গে পার্পল এই কম্বিনেশন পুজোতে বেশ ভাল।
নাকছাবিটি হারিয়ে গেছে হলুদ বনে...
এ বার পুজোর যত চাওয়া, আলগা হাতের ছোঁওয়া ঘন চোখের কাজল পেরিয়ে নাকছাবিতে এসে থেমে যাবে। নথ, নাথনি, নোলক নিদেনপক্ষে নাকছাবি হতে পারে এ বার পুজোর প্রেমভোমরা। ধোতি প্যান্ট আর কুর্তার মাঝে কেবল একটা নাকছাবি! ব্যস আপনার সম্মোহনের দরজা হয়তো দেখলেন দমকা হাওয়ায় খুলে গেল।
আঙুল তো মনের কথা বলে। শাড়ি বা শারারা যাই পরুন আঙুলে চাই একটা বড় আংটি। ওঁর আবেদন একার। যে খোঁজার, সে পথ পাবে ওখানেই। একটা লম্বা সিলভার হার, নাহ্ দুলের প্রয়োজন নেই। পরনে ঢাকাই শাড়ি... মিশে যাবে ঢাকের সুরে। কোনও বিশেষ একটা গয়না দিয়ে নিজের গাঢ় মনজমিকে ভরে রাখুন... মন বনে মউ জমে যাবে।
মোদি আর উত্তমকুমার
ছেলেদের মোদি জ্যাকেট এ বার খুব জনপ্রিয়। ধুতির সঙ্গে কুর্তা তার সঙ্গে মোদি জ্যাকেট। এই কম্বিনেশন চলতে পারে। ভাবুন উত্তমকুমারকে। ভাবলেই চলে আসে সেই ছোটো শার্ট। ওই ছোট শার্টে ফ্ল্যাট আপামর বাঙালি। সেই ছোট শার্ট পরুন এ বার আপনি আর তার সঙ্গে মোদি জ্যাকেট আর প্যান্টের মতো পাজামা। দড়ি থাকবে না। প্যান্ট লুকে পাজামা। আবার লং কুর্তা মোদি কোট তার সঙ্গে ধুতিও চলতে পারে।
ছেলেদের পোশাকেও হই হই করে প্রিন্ট এসেছে এ বার। প্রিন্টেড মোদি কোট। প্রিন্টেড প্যান্ট। যেমন রণবীর সিংহ পরেন। খুব সাহসী হতে হবে এ ক্ষেত্রে। কেউ সে রকম না চাইলে ডেনিমের সঙ্গে প্রিন্টেড কোট পরতে পারেন। লিনেন প্যান্ট পরুন, প্রিন্টেড প্যান্টের জায়গায়। ছেলেদের প্যান্টের কাটেও চমক। চলছে ছোট আর ফিটেড প্যান্ট। সঙ্গে অ্যাঙ্কেল লেংথ মোজা। এ ছাড়া লাইট কুর্তা তো পুজোতে আছেই। তবে তালগাছ আঁকা পঞ্জাবির দিন শেষ।
আরও পড়ুন:পুরুষের ফ্যাশনেও ঢুকে পড়েছে নানা বিকল্প, এ বার কোন ট্রেন্ড ‘ইন’?
পুজোয় চলবে না
জরির কাজ, জরির আট ওয়ার্ক এগুলো এ বার সব বাদ। কোনও পোশাকেই অধিক এমব্রয়ডারি, ঔজ্জ্বল্য এ সব পুরনো হয়ে গিয়েছে। সে পুরুষের পোশাক হোক বা নারীর শাড়ি।
আমাদের এখানে এখন ওয়েস্টার্ন গাউনও কিন্তু চলছে না। গাউন পরলে কলমকারি, মধুবনী বা কটন প্রিন্টেড এর মধ্যে তৈরি ইন্ডিয়ান গাউন বা ম্যাক্সি ড্রেস পরা যেতে পারে। সঙ্গে ইন্দো-ওয়েস্টার্ন অ্যাকসেসরিজ।
নিজের ব্যাক্তিত্বকে সিম্পল ফিটেড পোশাকে বার করে আনুন। পুজোর সেলফি থেকে ইন্সটাগ্রামে আপনিই হয়ে উঠবেন সবচেয়ে আলাদা।