পুজোর সময় কলকাতায় ইমনকে ছাড়া থাকার কোনও মানেই হয় না। একাকীত্ব ভুলতে পুজোয় পঞ্জাবে যাওয়ার প্ল্যান করছে নীলাঞ্জন।
জুলাইতেও লাস ভেগাসে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিল ইমন, সেই সময় উত্তরপ্রদেশ সফরে ছিল নীলাঞ্জন। ইমনকে ছাড়া ওই সময়টুকু নিজের মত করে কাটিয়ে নেওয়া। আরও একটা কারণ অবশ্য আছে।
গরম, রোদের তাপ সহ্য করতে পারে না ইমন। পাহাড়ই ওর বেশি পছন্দ। যেখানে গরম, সেখানে ঘুরতে যেতে হলে একাই প্ল্যান করতে হবে, এত দিনে এটা জেনে গিয়েছে নীলাঞ্জন।
তাই বলে পুজোর সময় কলকাতা ছেড়ে পঞ্জাবে? বেশ অবাক করা ব্যাপার। রহস্যের জট খুললো নীলাঞ্জন নিজেই।
বাড়ির নীচেই দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল। ভোর চারটে থেকে রাত বারোটা পর্য়ন্ত ঢাকের আওয়াজ, মাইকের গান শুনতে হয়।
ছোটবেলা থেকে একই গল্প। এখন আর ভাল লাগে না। ছুটির ক’টা দিন একটু নিরিবিলি, একান্তে সময় কাটাতে চায় মন।
পুজোর শপিংও তাই কলকাতা থেকে দূরে, চন্দননগরে। ‘১৪৫ ইস্ট’-এ। সারাদিন কেনাকাটা সঙ্গে, একান্তে সময়যাপন।
সনাতনী গামছা পোশাক ইমনের খুব পছন্দ। সেই খোঁজেই কলকাতা থেকে চন্দননগরে আসা। নীলাঞ্জনও গামছার ধুতি-পঞ্জাবি পরুক, এমনটাই চায় ইমন। দু’জনেই বেছে নিয়েছে চার ধরনের পোশাক।
লম্বা বারান্দার এক কোণে বা একসঙ্গে হেঁটে যাওয়া, সঙ্গে টুকরো কথা, পরস্পরের আরও কাছে আসা, একটু ছুঁয়ে দেখা।
বেগুনী রংয়ের ক্রপ টপ ও সঙ্গে গামছার ফ্রিল দেওয়া কালো র্যাপ স্কার্টে ইমন, নীলাঞ্জন পরেছে গামছা প্যাচের কালো শার্ট ও প্লিটেড কালো ধুতি।
দত্তবাড়ির আলপনা আঁকা লাল সিমেন্টের সিঁড়িতে কোথাও যেন ছোটবেলার স্মৃতির ছোঁয়া। সেখানে বসেই শুরু হল গল্প, ছোটবেলাকে ফিরে দেখা, আরও গভীরে যাওয়া। যুগলের পোশাকে তখন আগাম আগমনী।
সাদা-লাল গামছার কাফতানের সঙ্গে-সাদা ও লাল গামছা চেকের পালাজো ইমনের পছন্দ। নীলাঞ্জন পরেছে গামছা চেকের বর্ডার দেওয়া সাদা ধুতি, সঙ্গে লাল গামছা চেকের শর্ট কুর্তা। ঠিক যেন অষ্টমীর সকাল।
মেঘলা আকাশ,পুরনো বাড়ির দাওয়া, পাশে সবুজ ঘেরা বাগান, এমন পরিবেশে মুগ্ধ ইমন। মন আজ বাউল। গলায় নতুন সুর। ইউকুলেলে নিয়ে পাশে নীলাঞ্জন। পোশাকেও একই ছন্দ।
লাল গামছা চেকের লং-স্কার্টের সঙ্গে ইমন পরেছে প্রায় একই রকম ব্লাউজ টপ। নীলাঞ্জন পরেছে লাল-সাদা গামছা চেকের কুর্তা। ধুতিতে ধূসর ও লাল চেকের দুরন্ত কম্বিনেশন।
ঘরের কোণে খোলা জানলা, জানলা বেয়ে নেমে এসেছে আদুরে রোদ। নিভৃত কোণে দু’জনে ব্যস্ত পছন্দের গয়না নিয়ে।
কোনটা ভাল মানাবে এই পোশাকের সঙ্গে, সেই কাজের দায়িত্ব আজ নীলাঞ্জনের।
পলকা ডিজাইনের শাড়ি, সঙ্গে গামছা লুকের ব্রালেটে ইমন তখন আরও মোহময়ী পাল্লা দিতে ডেনিমের সঙ্গে কটকি কুর্তায় নীলাঞ্জন।
লাল চেকের কড়ি দেওয়া গয়নাটাই বেশি পছন্দ ইমনের। ‘দারুণ মানাবে তোমায়’ । নীলাঞ্জনের চোখে তখন শুধুই মুগ্ধতা।
মডেল: ইমন চক্রবর্তী, নীলাঞ্জন ঘোষ, পোশাক: ১৪৫ ইস্ট, রূপটান ও কেশসজ্জা: অভিজিৎ চন্দ, গয়না: আলোলিকা ক্রিয়েশন, ১৪৫ ইস্ট, ছবি: সহেলী দাস মুখোপাধ্যায়, স্থান: দত্তবাড়ি, চন্দননগর পরিকল্পনা: শ্যামশ্রী সাহা