অভিনেত্রী অনুষা বিশ্বনাথন
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে উদযাপনের ইচ্ছে এ বার নেই, লিখলেন অনুষা বিশ্বনাথন
দুর্গাপুজো আমাদের, বাঙালিদের কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। জীবনের প্রতিটা অনুভুতি এই সময়ে যেন খুব দৃঢ় ভাবে জেগে ওঠে। রাগ, দুঃখ, অভিমান, আনন্দ, হাসি, মজা— সবটাই একেবারে উঁচু তারে। ছোটবেলার দুর্গাপুজোয় রাইড্স চড়তে ভালবাসতাম খুব। দাদু থাকত সঙ্গে। কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে কখনও খুব একটা রাত জেগে ঠাকুর দেখা হয়নি আমার। মা-বাবা অনুমতি দিতেন না বলে সেই নিয়ে ক্ষোভও ছিল। কিন্তু এখন শহর কলকাতাকে দেখলে মনে হয়, মা-বাবার এই ঘেরাটোপের যথেষ্ট কারণ ছিল।
কলকাতা নিয়ে আমার খুব গর্ব ছিল। রাত করে বাড়ি ফিরলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতাম না। কিন্তু সেই বিশ্বাসে চিড় ধরেছে এখন। আর জি করের ঘটনা ছাড়াও আরও অনেক সাম্প্রতিক ঘটনা অসহায় করে তুলছে। তবু এই প্রতিবাদ মিছিল, স্লোগান আমাকে ইতিবাচক শক্তি জোগায়।
দুর্গাপুজোকে নারীশক্তির উদ্যাপন মনে করা হয়। তাই হয়তো সবাইকে উৎসবে ফেরার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সব সময়ে তা হয় না। আমিও হয়তো বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা করব, আড্ডা মারব, অঞ্জলি দেব। কিন্তু উদ্যাপনের বাহুল্য থাকবে না তাতে। এ বছর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে দুর্গাপুজো উদযাপনের ইচ্ছে নেই আমার। যে ঘটনা নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে, তাকে শ্রদ্ধা, সম্মান জানাতেই এ বারের উৎসব উদ্যাপনে বিরত থাকব।
দুর্গাপুজো অনেকের কাছেই অর্থ উপার্জনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাঁদের সেই সুযোগটা দেওয়া উচিত। মানুষের জীবন কখনও থেমে থাকে না। কিন্তু জীবনে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, সহানুভুতি ও সহমর্মিতা পোষণ করেই এগোনো উচিত বলে আমার মনে হয়।
এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।