গৌরব রায়চৌধুরী
আমার কাছে পুজো মানেই প্রচুর খাওয়াদাওয়া, ডায়েট ফ্রি ডেজ, শুটিং স্কিডিউল থেকে বেরিয়ে হইহুল্লোড়, আড্ডা, রেস্তরাঁয় বসে পছন্দের ডিশ কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া।সঙ্গে অবশ্যই অক্লান্ত ঘোরাঘুরি, শহরের প্রত্যেকটি প্রান্তে দল বেঁধে হাজিরা। আলোকিত শহরের সব রস শুষে নেওয়া।ভিড়ভাট্টার মুখগুলো থেকে খুঁজে নেওয়া ঠিকরে আসা আলো। চোখের তারায় ধরে রাখা চলমান দৃশ্যাবলী।যেন কিছু বাদ না পড়ে। যেন কিছু হারিয়ে না যায়।
আগে ভীষণ মজা করতাম।বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখতাম। এমনকি,গত চার-পাঁচ বছরও সেই চেষ্টাটা করেছি। কিন্তু দর্শক আমাকে এত ভালবাসেন যে আগের মতো লাইনে দাঁড়িয়ে হইহুল্লোড় করা আর সম্ভব হয় না। ফলে ছোটবেলায় যে মজাটা ছিল, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখব, সারারাত ঘুরবো, সেটা আর এখন হয় না। খুব মিস করি। তবে সময় পেলে এখনও পাস নিয়ে কলকাতার ভাল থিমের পুজোগুলো দেখার চেষ্টা করি। তারমধ্যে আছে সুরুচি, নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ, দমদম... সাউথ টু নর্থ সব ভাল ভাল প্যান্ডেলে ঘুরবোই। গত বছরেও এভাবে ঘুরেছি।
আর অঞ্জলির দিন তো বন্ধুদের সঙ্গে পাড়ার পুজোয় থাকবোই। পাড়ার পুজো খুব এনজয় করি।তাছাড়াও মায়ের সঙ্গে যতটা সম্ভব টাইম কাটাই। বাবাকে খুব মিস করি। বাবা বেঁচে থাকতে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা মেরে রাতের দিকে পাড়ার প্যান্ডেলে মা-বাবার সঙ্গে সময় কাটাতাম।
অন্য লুকে গৌরব
পুজো এমন একটা বিষয় যে সবার সারা বছরের ব্যস্ততা এই সময়ে শিথিল থাকে। পুজোর সময় ছোট থেকে বড়, পরিচিত সবার সঙ্গে দেখা হবেই হবে। নানা রকম আড্ডা চলতে থাকে। আমার অনেক বন্ধু কলকাতায় থাকেই না। তারা পুজোতে ঘরে ফেরে। তাদের সঙ্গে আড্ডা চলে জমিয়ে।আমরা রিইউনিয়ন করি। সবাই মিলে রেস্তরাঁয় খেতে যাই। এমনকি, আমি আগে যেসব সিরিয়াল করেছি সেইসব সিরিয়ালের সহ-অভিনেতাদের সঙ্গেও রিইউনিয়ন করি। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া চলে। তাতে ‘তোমায় আমায় মিলে’, ‘শুভদৃষ্টি’-র অভিনেতারা থাকেন। ‘ত্রিনয়নী’ সিরিয়ালের অভিনেতাদের সঙ্গে এটা হবে কিনা এখনও জানি না। দেখা যাক। প্ল্যান তো করছিই।এইসব আড্ডার মেজাজই আলাদা!
বরাবর হইহুল্লোড় করেই পুজো কাটে আমার। ছোটবেলায় সবার কাছ থেকে পুজোর গিফট পেতাম। খুবই ভাল লাগত উপহার পেতে। তার বেশিরভাগই অবশ্য নতুন পোশাক। এখন আমিও সবাইকে উপহার দিতে ভালবাসি। বিশেষ করে জামাকাপড় তো দেবই দেব।
পুজো আসার আগে একটা অদ্ভুত ফিলিং মনের মধ্যে জন্মাতে থাকে। যদিও আগের মতো শরৎকাল আর বোঝা যায় না প্রায়। কিন্তু এখনও যেটুকু অনুভূতির রূপ সাজিয়ে রাখে প্রকৃতি সেটুকুই অদ্ভুত এক আনন্দ দেয়। রাস্তায় যেতে যেতে কখনও হয়তো চোখে পড়ে নিজের খেয়ালে ফুটে আছে গোছা গোছা কাশ ফুল।ঠিক মা দুর্গা আসার আগেই তারা কানায় কানায়ভরিয়েতুলবে রূপের ডালি।
সবার জন্য থাকল শুভকামনা। সবাই যেন সুন্দরভাবে কাটাতে পারেন পুজোর দিনগুলো। উৎসব যেন উৎসব হয়েই আসে সবার জীবনে।