তিয়াসা রায়
পুজো মানেই কয়েক দিন ছুটি। পুজো মানেই প্রতি দিনের রুটিন থেকে মুক্তি। পুজো মানেই কলকাতার অদূরে গোবরডাঙার আকাশ।
হ্যাঁ, ছুটির কটা দিন গোবরডাঙা চলে যাব। ওখানে আমার বর সুভানদের বাড়ি। ওখানে পুজো কাটানোর মজাই আলাদা। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরবো। সুভানদের পাড়ায় পুজো হয়। অঞ্জলি দিতে যাব। সবার সঙ্গে দেখা হবে। অবশ্যই আলাদা একটা মজা। আমার প্রচুর ফ্রেন্ড আছে ওখানে। তাদের সঙ্গেও ঘুরতে বেরবো।
পুজোর ক’টা দিন কবে কী পোশাক পরবো সব প্ল্যান করে রাখা আছে। এমনিতে তো বাড়িতে থাকাই হয় না। স্বাভাবিক ভাবেই পুজোর ক’টা দিন বাড়ির সবার সঙ্গে কাটানোর প্ল্যান থাকে। সুভানের সঙ্গে আলাদা করে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু দেখলাম সবার সঙ্গে সময় কাটানো, আড্ডা মিস করব। সারা বছর কাজ আর কাজ। তাই এ বছর বাইরে ঘুরতে যাওয়া বাতিল করলাম।
আমি সুভানকে বলে রেখেছি রাত্রিবেলা ঘুরতে বেরবো। কিন্তু বাইরে বেরোলেই সবাই এত সেলফি তুলতে থাকে যে নিজের ছবিই আর তোলা হয় না। এ বার সুভানকে বলে রেখেছি নিজেদের ছবি তুলবোই তুলবো।
সাজুগুজুর বিষয়ে আমি আগে থেকে প্ল্যান করে রেখেছি। আমি আর সুভান ম্যাচ করে পোশাক পরবো। আগের বার এক রকম ভাবে সেজেছি। এ বার ওকে বলেছি আর একটু অন্য রকম ভাবে সাজবো। আমার আবার গয়নার প্রতি বেশি ঝোঁক। আগের বার যে গয়না পরেছি এ বার সেগুলো পরবো না। নতুন গয়না পরবো। সুভানকে বলে রেখেছি কিনে দিতে। ও আবার মজা করে বলে, ‘এটা কিনে নাও, ওটা কিনে নাও।’ এ রকম একটা ব্যাপার।
পুজোর সময় অন্তত একটা দিন শাড়ি পরতেই পছন্দ করি। ষষ্ঠীতে হয়তো পুজো ওপেনিং থাকবে। সে দিন সালোয়ার পরে নিজের মতো করে সাজবো। সপ্তমীর জন্য হোয়াইট কালার গাউন টাইপ চুড়িদার পরবো। কেনাও হয়ে গিয়েছে। এটার সঙ্গে অন্য রকম ভাবে একটা লুক করবো। একটু পাঞ্জাবি লুকে সাজতে চাই সে দিন। চূড়া পরবো এই ড্রেসের সঙ্গে। অষ্টমীতে ঠিক করেছি নতুন গয়নার সঙ্গে পুরো হোয়াইট শাড়ি পরবো। হোয়াইটের উপর রেড, অন্য রকম সিকোয়েন্সের ব্লাউজ পরবো। আর নবমীর সাজ আবার সুভান ডিসাইড করে। একটা গাউন পরবো। একেবারে অন্য রকম একটা ওয়েস্টার্ন লুকে আমাকে সাজাবে সুভান। দশমীতে রেড শাড়িই পরতে চাই। শাড়ির মধ্যে আমার সবথেকে পছন্দের ঢাকাই শাড়ি। মানে প্রত্যেক বছর পুজোর যে কোনও একটা দিন আমি ঢাকাই শাড়ি পরবোই পরবো। আগের বার আমি সপ্তমীতে ঢাকাই পরেছিলাম। ঢাকাই মাস্ট। পরতেই হবে। শাড়ির দোকানে গিয়ে ঢাকাই ছাড়া আর কিছু দেখতেই পাই না।
রিসেন্টলি চুল কেটেছি। চুল অনেকটা ছোট হয়ে গিয়েছে। সুভানকে বলেছি, ‘সুন্দর করে একটা লং হেয়ার স্ট্রিপ বানিয়ে দেবে?’ সুভান বলেছে, রেডি করে রাখবে। এটা জুড়ে আমি লং হেয়ার করবো সপ্তমীর দিন। অষ্টমীতে চুলটা পুরো ছেড়ে স্ট্রেট অন করবো। আর নবমীতে যেহেতু একটা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরবো তো সেই অনুযায়ী হেয়ার স্টাইল করবো। আর দশমীতে চুলটা খোঁপা করে একদম অন্য রকম টুইস্ট করে বাঁধবো।
অষ্টমীর দিন আমাকে গোল্ডেন জুয়েলারি পরতেই হবে। বিয়ের আগে এটা ছিল না। বিয়ের পর থেকে শুরু হয়েছে।
আর খাওয়াদাওয়া? আমি মাটন খাই না। কিন্তু সুভান বলে, আমি নাকি খুব ভাল মাটন রান্না করি। ও খুব পছন্দ করে। ও ঠিক করেছে, সপ্তমী বা নবমীর দিন আমি মাটন রান্না করবো। সুভান ওর ফ্রেন্ডদের ডাকবে, ফ্যামিলির সবাইকে ডাকবে। সে দিন সবাই জমিয়ে খাওয়াদাওয়া করবে। কিন্তু জানি না রান্না করতে গিয়ে সাজবো কখন। তবে সাজার বিষয়ে সুভানও খুব হেল্প করে। শাড়ি পরাতে পারে না। কিন্তু শাড়ি পরতে হেল্প করে। মানে কুঁচিগুলো ঠিক করে দেয়, আঁচল ঠিক করে দেয়। যদিও মাঝে মাঝে বিরক্তও হয়। কিন্তু ওই... শেষমেশ হেল্প করতেই হয় ওকে!