এ বার পুজোয় আমেরিকা যাচ্ছি। ওয়েস্টকোস্টে। কলকাতায় থাকলে আজকাল বাড়িতে অনেকটা সময় কাটাই বা অন্য অনেকের সঙ্গে, যাঁদের সঙ্গে সরাসরি রক্তের সম্পর্ক নেই। হইহই করে পুজো কাটাই।
পুজোয় আমার পুরনো দিনের পুজোর গান শুনতে ভাল লাগে। পুজো বার্ষিকী তো পড়িই। আর ভাল লাগে অলস সময় কাটাতে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা দেখব যতক্ষণ খুশি। ঘরদোর সাজাবো।
আমার ছোটবেলার পুজোর সময়টা খুব আনন্দের ছিল। রাত জেগে ঠাকুর দেখতাম। বিধান শিশু উদ্যানের কাছে যে আবাসনে বড় হয়েছি, সেখানকার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমি তিন চার বছর বয়স থেকে আবৃত্তি করি। প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হতাম।
১৯৯৭ সালের পুজোয় একটা কাণ্ড ঘটে। এইচ এম ভি-র শারদ অর্ঘ্যতে আমার 'আমি সেই মেয়ে' কবিতা আবৃত্তি প্রকাশ পায়। শারদ অর্ঘ্য বইতে আমার ছবি ছাপা হয়েছিল। সে কী রোমাঞ্চ! মিউজিক ওয়ার্ল্ড থেকে প্রত্যেক সপ্তাহের অ্যালবাম বিক্রির সংখ্যা দেখে টপার্স লিস্ট বেরোত। কোনও এক সপ্তাহে দেখলাম আমার অ্যালবাম সেই লিস্টের টপে আছে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পী থাকতে আমার অ্যালবাম টপার!
সেই সময় পুজো প্যান্ডেলে মান্না দে’র গান বাজত। মনে পড়ে, রকে বসে ছেলেরা মেয়েদের দেখে গাইত, ‘ইশশ্ কি দারুণ দেখতে...’! কাজী সব্যসাচীর আবৃত্তি বাজত। যা কিনা আজও আমার কানে আর মনে বেজে চলে।
মনে পড়ে পাশের চারতলা বাড়িটির সেই ঝকঝকে চৌখশ স্মার্ট ছেলেটার কথা। মনে পড়ে কী রকম ছিলাম! কত সহজে কাউকে ভাল লেগে যেত। এখন সব মিলিয়ে হই হই করে কেটে যায় চারদিন আবাসনের পুজোয়। মনে পড়ে 'ঠাকুরদাদার ছুটি' কবিতাটি। ‘তোমার ছুটি নীল আকাশে/ তোমার ছুটি মাঠে/ তোমার ছুটি থই হারা ওই/ দীঘির ঘাটে ঘাটে।’
অনুলিখন: সংযুক্তা বসু
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।