ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়
পুজো নিয়ে আমি চিরকালই খুব উত্তেজিত থাকি। পুজো মানে আমার কাছে বন্ধুবান্ধব এবং পরিবার।
আপাতত আমার কোনও প্রেমিকা নেই। আমার স্কুলের যে প্রেমটি ছিল, সেটা ছিল অনেক বছরের সম্পর্ক, কলেজে চলে যাওয়ার পর সেই সম্পর্কের ইতি ঘটে। তার পর থেকে আমার পুজো প্রেমবিহীনই বলা যেতে পারে। তবে ইউনিভার্সিটিতে আমার অনেক বান্ধবী আছে। এই যা!
ইউনিভার্সিটির কথা উঠলে যাদবপুরের কথা আসবেই। কিছুদিন আগে ওখানে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা সবাই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। পুজো আসতে চলল, কিন্তু ঘটনার রেশটা এখনও মিলিয়ে গেল না। যথার্থ কারণেই! এ নিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে আমার কিছু বলার আছে। হয়তো সেখানে সরাসরি পুজো জড়িত নয়, কিন্তু বলাটা খুব দরকার বলে মনে হয়। পুজোর আগে এমন একটা ঘটনা বড্ড ধাক্কা দিয়ে গেল।
যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে ক’দিন ধরে সালিশি সভা মার্কা ব্যাপারস্যাপার বসিয়ে যে ভাবে ফেসবুকের সবাই ‘স্বয়ংঘোযিত বিচারক’ হয়ে গিয়েছিল, খুব অসুবিধা হচ্ছিল তাতে। এর সঙ্গে তাল দিচ্ছিল কিছু টেলিভিশন মাধ্যম। এর পর আমি একটি চ্যানেলে আমার ও আমার বন্ধুদের কথা স্পষ্ট করে বলি। তার পর শুরু হয়, আমায় ‘ট্রোল’ করা। তার ভাষাটি শুনুন।
আমাকে সম্বোধন করতে বাজারে একটা চালু শব্দবন্ধ আছে। আমি যেহেতু শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের ছেলে, সেই সূত্রে। এতে অবশ্য আমার কিছু যায় আসে না। মজাই পাই। এ বার ওই শব্দবন্ধটাকে নিয়ে ‘ট্রোল’ শুরু করেছিল অনেকে, ওই অনুষ্ঠানটির পর। আমি বলব, এটা একটা মানসিকতার সমস্যা। সামাজিক সমস্যা। একটা গালাগালিকে সাধারণীকৃত করে দেবার চেষ্টা।
আমি মজা করে থাকতে ভালবাসি। পুজোতেও সবাইকে নিয়ে মজা করাটাই আমার লক্ষ থাকে। এ প্রসঙ্গে বলি, আমার একটা মজার নাম আছে। ডাক নাম। ঘেঁটকু। চন্দন কাকাইয়ের (নাট্যজন চন্দন সেন) দেওয়া। আমাদের থিয়েটার দল ‘নাট্য আনন’-এর সবাই আমাকে ওই নামেই ডাকে। টুম্পাপিপি (সুদীপ্তা চক্রবর্তী) তো আরও বদলিয়ে ‘ঘেঁটকুমার’ বলে। আমি জানি তারা আমার খুবই কাছের।
পুজোর কথায় ফেরা যাক। পুজোয় আমি ঘুরতে পছন্দ করি। চুটিয়ে ঠাকুর দেখি। উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা, মধ্য কলকাতা সব আলাদা আলাদা দিন থাকে। দিনের শেষে ফিরে আসি বেহালার সরশুনায়। আমার বাড়িতে। অ্যাদ্দুরে থাকি বলে, অনেকে বলে, ‘এ বার বাড়ি-টাড়ি কিনে ফেল। কত দিন আর অদ্দুর থেকে আসবি, কাজ করতে।’ যেন আমার কত পয়সা!
তবে আমি একটি গাড়ি কিনেছি। এ বছর মার্চ মাসে। আমার গাড়ি চালাতে ভাল লাগে, সেটা নিয়ে আমি ঘুরি। পুজোতেও হয়তো টুকটাক গাড়ি নিয়ে বেরব।
এই বছর আমার বড় বাজেটের কাজ ‘সাবাস ফেলুদা’। তা ছাড়া অন্য যে কাজটি আমি করেছি, সেটা হল ‘সমরেশ বসুর প্রজাপতি’। ওটা একটি ইন্ডিপেনডেন্ট কাজ।
কাজের ব্যাপারে একটা জিনিস মাথায় রাখি, আমার নাম দিয়ে টিকিট বিক্রি হবে বলে একের পর এক বাজে কাজ যেন না করি। সব সময় মানুষকে ভাল কিছু দেখাতে চাই। নতুন কিছু দেখাতে চাই। সকলের পুজো আনন্দে কাটুক।
(অনুলিখন : মেঘদূত)
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।