Actress Madhumita Sarcar Horrifying Experience

মুখ ধুয়ে আয়নায় তাকাতেই সারা শরীর কেঁপে উঠল, ভয়াবহ! ভূতচতুর্দশীর আগে লিখলেন মধুমিতা

এক মুহূর্তের জন্য মনে হল যেন কারও প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম আয়নায়। আলগা করে ঘোমটা দেওয়া থাকলেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ওই মহিলাটির মাথায় একটি চুলও নেই। তবে পটলচেরা চোখ। চোখেমুখে নেই কোনও বয়সের ভার।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:২৮
Share:

ধরুন আপনি তাড়াহুড়ো করে স্নানঘরে গেলেন মুখ ধুতে, কিন্তু আয়নার সামনে মুখ তুলে তাকাতেই দেখলেন অন্য প্রতিচ্ছবি! কী করবেন ওই মুহূর্তে? মানুষের মৃত্যুর পর শতাব্দীপ্রাচীন বস্তুগুলিকে ঘিরে তো কত গল্পই না জড়িয়ে থাকে। কিন্তু শুধুই কি গল্প? কোনওদিন যদি সাক্ষাৎ ঘটে যায় তাঁদের সঙ্গেও, কী করবেন তখন? ভাবুন ভাবুন। ততক্ষণ আমি গল্পটা শুরু করি। তখন ২০১২ সাল। আমিও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। আমার ঠিক জায়গাটা মনে নেই। তবে সম্ভবত আমরা সবাই মিলে আমার বাবার মামার বাড়ি ঘুরতে গিয়েছিলাম।

Advertisement

জীবনে প্রথমবার আমি সেখানে গিয়েছিলাম। একেবারেই মফঃস্বল এলাকার মধ্যবিত্ত পরিবার। আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে দেখা হয়ে বেশ ভাল লাগছিল। কথাবার্তার ফাঁকে আমি স্নানঘরের দিকে যাই। সেখানে সবথেকে বেশি যে জিনিসটা আমার নজর কেড়েছিল তা হল ওই স্নানঘরের বেসিনের সামনের একটা আয়না। না না, কোনও সাধারণ আয়না নয়। বহু প্রাচীন লোহার কারুকার্য করা অ্যান্টিক আয়না। মনে হচ্ছিল কোনও অ্যান্টিক শপ থেকেই নিয়ে আসা হয়েছে এটিকে। ঘষা কাঁচের উপরে চেহারার প্রতিফলনও খুব একটা ভালভাবে বোঝার মতো নয়।

আমি যথারীতি মুখ ধুতে শুরু করি। জলের ঝাপটা দেওয়ার পর আয়নার দিকে মুখ তুলে তাকাতেই এক মুহূর্তের জন্য মনে হল যেন কারও প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম আয়নায়। আলগা করে ঘোমটা দেওয়া থাকলেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ওই মহিলাটির মাথায় একটি চুলও নেই। তবে পটলচেরা চোখ। চোখেমুখে নেই কোনও বয়সের ভার। স্বাভাবিকভাবেই আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। তবুও মনকে সান্ত্বনা দিই যে হয় তো সবটাই আমার মনের ভুল। যাকে বলে ‘হ্যালুসিনেশন’।

Advertisement

বাড়ি এসে মাকে পুরো ঘটনাটা খুলে বলি। কিন্তু তারপরে আমি যা জানতে পেরেছিলাম তা আমি নিজের কানে না শুনলে হয়তো বিশ্বাসও করতাম না। আমি জানতে পারি ওই আয়নাটা আমার বাবার ছোটঠাকুমার। যিনি আমার জন্মের ৩ বছর আগেই মারা গিয়েছিলেন। এই খানে আমাকে আশা করি আর বলে দিতে হবে না যে সেদিন যাকে দেখেছিলাম, তার চেহারার সঙ্গে ছোটঠাকুমার মিল আছে কি নেই! অদ্ভুত বিষয় হল আমার জীবনদ্দশায় আমি তাঁকে একটি বারের জন্যেও দেখিনি। এমনকি তাঁর সম্পর্কে কোনও বিষয়ই আমার জানার কথা নয়।

শুধু ওই ঘটনাটা বলার পর জানতে পারি খুবই দুঃখজনকভাবেই নাকি মৃত্যু বরণ করেছিলেন তিনি। শেষ সময়ে কেবল তাঁর ঘরে খাবার দিয়ে আসা, নিয়ে আসা করতেন ওই বাড়ির পরিচারিকারা। মৃত্যুর আগে শেষ কয়েকদিন তিনি নাকি খাওয়াদাওয়াও সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়েছিলেন। অথচ এত বড় পরিবারে কারও সময়ও ছিল না তাঁর দিকে নজর দেওয়ার। তিন-চার দিন পর ঘরের আশপাশ থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করলে পরিবারের লোকজনদের হুঁশ ফেরে। তারপর যা হয় আর কি! তাঁর সম্পত্তি, জিনিসপত্রের ভাগ বাটোয়ারা হতে শুরু হয়। আয়নাটা থেকে যায় ওই বাড়িতেই…

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement