কলকাতার সেন্ট জন’স চার্চের বিখ্যাত তৈলচিত্রটির কথা মনে পড়ে? শিষ্যদের নিয়ে জিশুর শেষ বারের মতো আহারের দৃশ্য এঁকেছিলেন জার্মান শিল্পী জোহান জ়োফানি। আর্থিক দুরবস্থায় পড়ে জ়োফানি ভারতে আসেন অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে। মাত্র কয়েক বছরেই এ দেশের ইউরোপীয় ও ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকদের ফরমায়েশি ছবি এঁকে বেশ বড়লোক হয়ে ফিরে যান। সে সময় এমন বহু ইউরোপীয় শিল্পী ভাগ্যপরীক্ষায় এসেছেন এ দেশে। ইংরেজ, ওলন্দাজ, ফরাসি, দিনেমার উপনিবেশগুলিতে পৌঁছেছে তাঁদের আঁকা ছবি। কলকাতা ছাড়াও চন্দননগর, চুঁচুড়া, নশিপুরের স্থানীয় কিছু মানুষ সে সময় ইউরোপীয়দের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের সূত্রে মেলামেশার সুযোগ পান। জীবনে আসে আর্থিক সমৃদ্ধি, রুচিতে ইউরোপীয় প্রভাব। ইউরোপীয় তৈলচিত্র নিয়ে তাঁদের আগ্রহ জন্মায়, নিজেদের গৃহসজ্জায় তৈলচিত্র ব্যবহার করার উৎসাহও।
এই কাজে ডাক পড়ল স্থানীয় দরবারি, সূত্রধর, পটুয়া শিল্পীদের। তাঁরা তেলরঙে বাঙালি বাবুদের পছন্দের পুরাণ, মহাকাব্যভিত্তিক ভারতীয় বিষয়ে ছবি আঁকা শুরু করলেন। সৃষ্টি হল এক নতুন ধারার শিল্প, যেখানে ভারতীয় মিনিয়েচার ও লোকশিল্পের প্রভাব মিশে গেল পাশ্চাত্যের তেলরঙ মাধ্যমে। আঠারো শতকের মাঝামাঝি থেকে উনিশ শতকের শেষ পর্যন্ত চলে এই ধারা, এর সঙ্গে ‘ডাচ-বেঙ্গল’ বা ‘ফ্রেঞ্চ-বেঙ্গল’ নামগুলি জুড়ে থাকলেও, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যকলা বিভাগের শিক্ষক খোকন রাউতের মতে, ‘আর্লি বেঙ্গল অয়েল পেন্টিং’ পরিচয়টি গত শতকের শেষার্ধে চালু হয়। তাঁর গবেষণায় উঠে আসা দু’শো বছরের এই বিশেষ চিত্রধারার ইতিহাস প্রকাশিত হল গ্রন্থাকারে, আর্লি বেঙ্গল অয়েল পেন্টিংস নামে (প্রকা: আয়ু পাবলিকেশনস, দিল্লি), গত ১২ অগস্ট বিকেলে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্ক-এর প্রেমানন্দ হল-এ। আনুষ্ঠানিক প্রকাশে স্বামী সুপর্ণানন্দ, ছিলেন অমলেন্দু ভুঁইয়া প্রশান্ত দাঁ নিরঞ্জন প্রধান-সহ বিশিষ্টজন।
প্রথম দিকে এদেশীয় শিল্পীদের তেলরঙ ব্যবহারে কিছু ঘাটতি ছিল, ধীরে ধীরে তাঁরা এই চিত্রধারায় পারদর্শিতা আয়ত্ত করেন। একটু পরের দিকের শিল্পীদের কাজে ইউরোপীয়দের প্রায় সমমানের উৎকর্ষ দেখা যায়। সেই আত্তীকরণ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপগুলিও চিহ্নিত হয়েছে এই বইটিতে। ক্রমে ছাপাই ছবি বাজারে এসে যাওয়ায় তথাকথিত ধর্মীয় বিষয়ে তৈলচিত্র আঁকানোর রেওয়াজ উঠে যায়। অন্য দিকে শিল্প-পৃষ্ঠপোষকেরা উৎসাহী হয়ে পড়েন স্বদেশি রীতির বেঙ্গল স্কুল-এর চিত্রধারা নিয়ে। পাল্টে যাওয়া শিল্পরুচি ও শিল্পমাধ্যমের আবহে, উনিশ শতকের শেষে তেলরঙে আঁকার এই ধারাটি মুছে যায়। তা সত্ত্বেও এই শৈলীর প্রতিটি ছবিই যে বাংলার শিল্প-ঐতিহ্যের স্মারক, তাদের বয়স পেরিয়েছে দেড়শো-দু’শো বছর, মনে করিয়ে দেয় অবলুপ্ত এই শিল্পধারা নিয়ে প্রকাশিত বইটি। শিল্পোৎসাহীদের সচেতনও করে এই অমূল্য ঐতিহ্য সম্পর্কে। প্রাকৃতিক কারণ তো আছেই, অপটু হাতের সংরক্ষণেও বিপন্ন এই ধারার বহু ছবি, সেই সূত্রে বিজ্ঞানসম্মত সংরক্ষণ নিয়ে আলোকপাত রয়েছে বইয়ে। ছবিতে তেলরঙে আঁকা রাধাকৃষ্ণ, প্রচ্ছদ থেকে।
কত অজানারে
সত্যজিৎ রায়ের ‘সেপ্টোপাসের খিদে’-র অন্যতম উৎস যে হেমেন্দ্রকুমার রায়ের ‘পিশাচ’ গল্প, ক’জনের জানা? এইচ জি ওয়েলস, আর্থার কোনান ডয়েল তো বটেই, প্লেটোর অ্যাটলান্টিস-ও নবজীবন পেয়েছে হেমেন্দ্রকুমারের কলমে। বহু নৃতত্ত্ববিদ ও ভূতাত্ত্বিকের অভিযান তাঁর লেখার প্রেরণা, অবাধ বিচরণ কল্পবিজ্ঞান ভূত গোয়েন্দা রহস্য-সহ নানা পরিসরে। কিন্তু সব রচনার সূত্র, প্রথম প্রকাশ-তথ্য, কালানুক্রম পাওয়া যায় না চলতি বইগুলিতে। প্রদোষ ভট্টাচার্যের সম্পাদনা ও টীকায় এ বার প্রকাশ পেল দু’খণ্ডে হেমেন্দ্রকুমার রায় কল্পবিজ্ঞান রচনা সমগ্র (প্রকা: কল্পবিশ্ব), হেমেন্দ্রকুমারের কল্পবিজ্ঞানধর্মী গল্প-উপন্যাস সঙ্কলন। রয়েছে গল্পগুলির মূল পাঠ, প্রথম প্রকাশ-তথ্য, বহু ছবি। গত ১২ অগস্ট আশুতোষ মেমোরিয়াল হল-এ আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হল বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে। ছবিতে বাগবাজারের বাড়িতে হেমেন্দ্রকুমার, ছবি সৌজন্য: লেখকের দৌহিত্রী সুদেষ্ণা চক্রবর্তী।
প্রাসঙ্গিক
একচেটিয়া আগ্রাসন বিরোধী মঞ্চ (ফামা)-র প্রতিষ্ঠা ২০০৭-০৮’এ, বিজ্ঞানী অভী দত্ত মজুমদার-সহ বিশিষ্টজনের নেতৃত্বে। ভারতে কৃষি ও ব্যবসা-সহ সামাজিক ক্ষেত্রে বৃহৎ পুঁজির একচেটিয়া আগ্রাসন, জিন-পরিবর্তিত শস্যের অনুপ্রবেশ, প্রকৃতি ধ্বংস, প্রান্তিক মানুষের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী গণ-উদ্যোগ করেছে এই মঞ্চ। প্রতি ২৬ জুলাই ফামা-র প্রতিষ্ঠাদিবসে একটি বক্তৃতা হত, ২০১৩-তে প্রতিষ্ঠাতার প্রয়াণের পর থেকে এটি ‘অভী দত্ত মজুমদার স্মারক বক্তৃতা’ নামে পরিচিত। আগে নানা বছরে বলেছেন পুষ্পমিত্র ভার্গব সতীনাথ সরেঙ্গী দেবেন্দ্র শর্মা বন্দনা শিবা পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা প্রমুখ, নবম বর্ষে এ বছর বললেন অনিল সদগোপাল (আন্তর্জালে) ও নিবেদিতা মেনন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০: মুখোশের অন্তরালে’ প্রসঙ্গে— গত ২৬ জুলাই, মৌলালি যুব কেন্দ্রে।
চার দশকের যাত্রা
“বাঙলা নাট্যকর্মীদের এখনো অনেক-কিছু করতে বাকি আছে। এমন একটা নাট্যভঙ্গি আয়ত্ত করতে হবে যা একেবারে ভারতের, একেবারে বাঙালীর,” বলেছিলেন শম্ভু মিত্র। ২২ অগস্ট তাঁর জন্মদিনের সন্ধ্যায় অ্যাকাডেমি মঞ্চে ঘরে বাইরে-র নাট্যাভিনয় পঞ্চম বৈদিক-এর, অর্পিতা ঘোষের নির্দেশনায়। শাঁওলী মিত্র প্রতিষ্ঠিত নাট্যদলটির এ বার চল্লিশ বছর পূর্তির উৎসব। প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্র। প্রথম পর্বের উৎসব শুরু আজ মধুসূদন মঞ্চে সন্ধ্যা ৬টায়, আঙ্গিক নাট্যগোষ্ঠীর বিনোদিনী অপেরা (নির্দেশনা: অবন্তী চক্রবর্তী) দিয়ে। রবিবার সেখানেই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় থিয়েটার প্ল্যাটফর্ম-এর নূরজাহান (নির্দেশনা: দেবাশিস), ২১ অগস্ট সন্ধ্যায় অ্যাকাডেমিতে সংসৃতি নাট্যদলের প্রযোজনা খোক্কস, দেবেশ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত।
সাহসিনীরা
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে নারীদের অবদান কোনও অংশে কম নয়, অথচ তাঁদের নিয়ে আলোচনা নিতান্ত কম। মাতঙ্গিনী হাজরা কল্পনা দত্ত বীণা দাস প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার যদি বা চর্চিত, সারা বাংলা জুড়ে খুঁজলে মেলে ননীবালা দেবী সুহাসিনী গঙ্গোপাধ্যায় মাতঙ্গিনী পাল-সহ অগণিত মহিলা সংগ্রামী ও বিপ্লবীর অসমসাহসিকতা, সঙ্কল্প, ত্যাগ, আত্মবলিদানের কাহিনি। স্বাধীনতার ছিয়াত্তর পেরিয়েছে, ‘স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গনারী’দের মনে রেখেছি কি? সেই আলোচনাই তুলে ধরবে ‘রবিবাসর’, আগামী কাল ২০ অগস্ট এক অনুষ্ঠানে। সাহিত্যচর্চার ইতিহাসে এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বও কম নয়, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র থেকে শুরু করে বাংলার বহু যশস্বী লেখক জড়িয়ে তার সঙ্গে। ৩৮, গল্ফ ক্লাব রোডে পি এন রায় ট্রাস্ট এস্টেট-এ, বিকেল ৫টায়।
সৃজনছন্দে
মণিপুরি নৃত্যশৈলীকে ভারতের নানা প্রদেশে জনপ্রিয় করেন গুরু বিপিন সিংহ। ইম্ফল, মুম্বই ও কলকাতায় গড়ে ওঠে মণিপুরি নর্তনালয়, সেই প্রতিষ্ঠান পঞ্চাশ ছুঁল। বিপিন সিংহের শিষ্যেরা— দর্শনা ঝভেরি থেকে শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায়— এখন তৈরি করছেন নতুন প্রজন্মের নৃত্যশিল্পীদের। পেয়েছেন সঙ্গীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার-সহ নানা স্বীকৃতি। ‘গুরুজি’-র ১০৫তম জন্মদিন উপলক্ষে এমন বহু প্রতিষ্ঠিত শিল্পী তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন আগামী ২৩ অগস্ট, আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে, আয়োজনে ‘শ্রুতি পারফর্মিং ট্রুপ।’ বিপিন সিংহের নানা ‘কম্পোজ়িশন’-এ দর্শনা ঝভেরি শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায় লতাসেনা দেবী পৌষালি চট্টোপাধ্যায় সোহিনী রায় প্রমুখ, থাকবেন বিপিন সিংহের সহধর্মিণী গুরু কলাবতী দেবী; প্রীতি পটেল-ও।
বিস্মৃতপ্রায়
প্রায় একক প্রচেষ্টায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠাই হোক বা প্রথম সচিত্র বাংলা বই, ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল-এর প্রকাশ— প্রথম বাঙালি মুদ্রক-প্রকাশক হিসাবে ইতিহাসে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের নাম থাকলেও জনমানসে তিনি বিস্মৃতপ্রায়। ১৮১৮-তে বেরোয় তাঁর বাঙ্গাল গেজ়েটি, প্রথম কোনও বাঙালির সম্পাদিত সংবাদপত্র— দু’শো বছর আগে যা সোজা কাজ ছিল না মোটেই। লন্ডনের এশিয়াটিক জার্নাল-এ উল্লিখিত তাঁর নাম, তবু সমকালে মর্যাদা পাননি তিনি, পাওয়া যায় না তাঁর কোনও ছবি বা সম্পাদিত সংবাদপত্রের কপি। এই মানুষটির জীবন ও কাজকেই তুলে ধরেছে পুলক মণ্ডলের বই উপেক্ষিত নায়ক গঙ্গাকিশোর (প্রকা: ভাষাপথ)। জরুরি নানা তথ্য, দুষ্প্রাপ্য ছবি সম্বলিত বইটির ভূমিকা লিখেছেন রামকুমার মুখোপাধ্যায় ও সুদীপ চক্রবর্তী। ছবিতে বহড়া গ্রামে গঙ্গাকিশোরের স্মৃতিফলক ও ভগ্ন বসতবাটি, লেখকের সৌজন্যে প্রাপ্ত।
আবার দেখা
অ্যাশলে ইডেন-এর আর্থিক সাহায্যে, ১৮৮৬ সালে তৎকালীন হিন্দু কলেজের (অধুনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ছাত্রদের থাকার জন্য প্যারীচরণ সরকার স্ট্রিটে গড়ে ওঠে ইডেন হিন্দু হস্টেল। ছাব্বিশ হাজার স্ক্যোয়ার ফুটের, লাল রঙের বাড়িটি কলকাতার যাপন-অস্তিত্বে গুরুত্বপূর্ণ, স্বাধীনতার লড়াই থেকে নকশাল আন্দোলন— ইতিহাসের আঁতুড়ঘর ছিল শতবর্ষ অতিক্রান্ত বাড়িটি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরণ্যক উপন্যাসে এই ছাত্রাবাসের বর্ণনা রয়েছে, দূরদূরান্ত থেকে আসা অগণিত ছাত্রকে ঠাঁই দিয়েছে এই ছাত্রাবাস (ছবি)। মেরামত-কাজে দীর্ঘ দিন ছাত্রাবাসটির সিংহভাগ বন্ধ থাকলেও, গত ১২ অগস্ট আবার তা মুখর হয়ে উঠেছিল প্রবীণ-নবীন ও বর্তমান আবাসিকদের নিয়ে, পুনর্মিলন উৎসবকে কেন্দ্র করে। বিশ্ববিদ্যালয়, হস্টেল, ছাত্রমৃত্যু ঘিরে বিষাদে ডুবে থাকা এ শহরে একটু আশার আলো।
চার নক্ষত্র
অগস্ট দেবব্রত-মাস, ছুঁয়ে আছে শিল্পীর জন্ম ও প্রয়াণদিন— দু’টিকেই। আর সামনেই সেপ্টেম্বর, সুচিত্রা মিত্রের জন্মশতবর্ষের সূচনালগ্নটিও সমাগত। এই আবহেই ‘রবীন্দ্রনাথের গানের চার জ্যোতিষ্ক: সুচিত্রা কণিকা জর্জ ও হেমন্ত’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানের উদ্যোগ করেছে ‘দেবব্রত বিশ্বাস স্মরণ কমিটি’ আর ‘টেগোর সোসাইটি কলকাতা’, আগামী ২২ অগস্ট শিশির মঞ্চে, বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে। প্রকাশিত হবে সুচিত্রা-কণিকা শতবর্ষ স্মরণ গ্রন্থ; ১৯৫৭ থেকে ১৯৮৬ সময়কালে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, এবং ১৯৬১ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে সুচিত্রা মিত্রের গাওয়া কিছু গানের অডিয়ো সিডি: প্রথমটির নাম ‘আবার আসি ফিরে’, দ্বিতীয়টির— ‘দেখা দিক আর-বার’। থাকবেন তুষার তালুকদার ও পঙ্কজ সাহা; রয়েছে স্মারক বক্তৃতা, অলকানন্দা রায়ের নৃত্য পরিবেশনা, বিশিষ্ট শিল্পীদের কণ্ঠে রবীন্দ্রগান, কবিতা পাঠ, গণনাট্যের গানও।