—প্রতীকী ছবি।
ইদ উপলক্ষে জামাকাপড় কেনার জন্য বন্ধুকে স্কুটারে বসিয়ে কলকাতার মেটিয়াবুরুজের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ১৪ বছরের তাজ মণ্ডল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইদের জামাকাপড় কেনা হল না তার। গলি থেকে বেরিয়ে ভাঙাচোরা ফুটপাত দিয়ে বড় রাস্তায় ওঠার মুখে স্কুটারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যেতেই পিছন থেকে দ্রুত গতিতে আসা তেলের ট্যাঙ্কারের নীচে পড়ে গুরুতর ভাবে জখম হয়েছিল ওই কিশোর। যদিও পিছনের আসনে বসা তাজের বন্ধু রাস্তার বাঁ দিকে পড়ায় তার আঘাত ততটা গুরুতর নয়। দু’জনকেই হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাজকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, ১৪ বছরের এক কিশোর, যার লাইসেন্স নেই বা সেই বয়সও হয়নি, রাস্তা দিয়ে স্কুটার চালিয়ে যায় কী করে? পুলিশই বা সব দেখেও তাকে আটকায়নি কেন? যদিও পুলিশের তরফে এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, উনসানির বাসিন্দা ওই কিশোর আন্দুল রোড ধরে চুনাভাটির দিকে যাচ্ছিল। উদ্দেশ্য ছিল, নাজিরগঞ্জ বা পোদরা ঘাট থেকে লঞ্চে নদী পেরিয়ে মেটিয়াবুরুজে গিয়ে ইদের জামাকাপড় কেনার। কিন্তু আন্দুল রোডের নিমতলার কাছে এসে ভাঙাচোরা ফুটপাত থেকে রাস্তায় ওঠার সময়ে স্কুটারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ওই কিশোর। স্কুটার-সহ আছাড় খেয়ে পড়ে রাস্তার ডান দিকে। তখনই একটি তেলের ট্যাঙ্কার পিছন থেকে এসে তাকে পিষে দেয়। রাস্তার বাঁ দিকে পড়ায় কোনও মতে বেঁচে যায় তাজের বন্ধু।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় নাজিরগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ। তারাই সঙ্কটজনক অবস্থায় রক্তাক্ত ওই কিশোর এবং তার বন্ধুকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাজকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আর তার বন্ধুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পরেই ট্যাঙ্কার-সহ চালককে আটক করে পুলিশ। ইদের আগে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে ওই কিশোরের পরিবারে। শোকস্তব্ধ তার পাড়াও। পরিবারের কেউই এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক কী ভাবে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।