শাঁখের করাতের মতো দ্বিমুখী চালেই সক্রিয় অ্যালার্জেন, ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়ারা।
আবহাওয়া পরিবর্তন ঘরে ঘরে ডেকে আনে জ্বর। কলকাতার মতো শহর, যেখানে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি, সেখানে শীতের শেষে বসন্তের শুরুতে, মরসুমের পরিবর্তন শরীরে প্রভাব ফেলে। এই সময় কোনও দিন ঠান্ডা, কোনও দিন একটু চড়া তাপমাত্রায় জাঁকিয়ে ধরে ফ্লু, সর্দি-কাশি। শাঁখের করাতের মতো দ্বিমুখী চালেই সক্রিয় অ্যালার্জেন, ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়ারা।
অনেক সময় আমরা বুঝে উঠতে পারি না, কী ধরনের জ্বর এবং তা থেকে সেড়ে ওঠার উপায়। তাই সাধারণ জ্বরব্যধির ওষুধ খেয়েই সপ্তাহ খানেক সময় নষ্ট করে রোগীরা।সে কারণেই জ্বরের উপসর্গের ফারাক জেনে রাখা খুবই জরুরি।
আগে সাধারণত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াদাওয়া, ওষুধপথ্য নিয়ম মেনে করলেই মুক্তি পাওয়া যেত ভাইরাল ফিভারের হাত থেকে। তবে সময় বদলের সঙ্গে জীবাণুরাও তাদের চরিত্র বদলাচ্ছে। তাই ভাইরালের প্রভাব বাড়লে বাড়াতে হচ্ছে সতর্কতাও। বিশেষ করে ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার ও কিডনির অসুখে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই সচেতনতা আরও বাড়ানো দরকার।
হালকা গা গরম থেকেও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ভাইরাল ফ্লু
কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন ?
• এ সময় যে খুব বেশি জ্বর হবে এমন কোনও কথা নেই। হালকা গা গরম থেকেও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ভাইরাল ফ্লু।
• জ্বরের সঙ্গে গা-হাত-পায়ে ব্যথা অনুভব বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই থাকে।
• অ্যালার্জির প্রবনতা থাকলে নাক দিয়ে কাঁচা জল ঝরা, সর্দি-কাশির এই দেখা দিতে পারে।
জ্বরের সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা, দুর্বল লাগা, স্বাদে অরুচি এগুলি অসুখের অন্যতম লক্ষণ।
ভাইরাল হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিকেও জ্বর তিন-চার দিনে না কমলে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে বেশ কিছু সতর্কতাও অবলম্বন করতে হবে।
মেনে চলুন এ সব
• যতটা সম্ভব ঠান্ডা না লাগানোর চেষ্টা করুন। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় অল্পেইঠান্ডা লাগতে পারে। তার হাত ধরে জ্বরে পৌঁছে যাওয়া নতুন কিছু নয়।
• ঠান্ডার ধাত থাকলে গোটা শীত ও বসন্ত কাল জুড়েই গা সওয়ানো উষ্ণ জলে স্নান করুন।
• চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য কোনও ওষুধ নয়।
• পাতে রাখুন সবুজ শাক-সব্জি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এমন খাবারদাবার।
• শরীরে জলের পরিমাণ কমিয়ে ফেললে চলবে না। ঠান্ডা পানীয়, মদ্যপান এ সব থেকে দূরে থাকুন। কারণ এই সব তরল শরীরের জল শোষণ করে শরীরকে শুষ্ক করে দেয়।
• বেশি দূষণযুক্ত এলাকায় থাকলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
• কাশি হলেদোকান থেকে কিনে আনা যে কোনও কাফ সিরাপ নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এ সব ব্যবহার করুন।