হাঁটার গতি ও দূরত্ব উভয়ে থাকবে সামঞ্জস্য।
ব্যস্ত জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শরীর সুস্থ রাখার বড়ো চাবিকাঠি হল হাঁটা। হাঁটলে যে শুধু ওজন কমতে পারে তা নয়, হার্টের অসুখ থেকে শুরু করে ব্লাড-সুগার,আর্থারাইটিস, কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিস এসব রোগকে হাতের মুঠোয় আনতে পারা সম্ভব।
তবে যদি ভেবে থাকেন এই হাঁটা কেবল অফিস ফেরত বা অবসরের হাঁটা তবে তা একেবারেই নয়। আপনি ভাবছেন অফিস থেকে বাড়ি ফিরবেন পায়ে হেঁটে, আর তাতেই সুস্থতার খাতায় নাম থাকবে তা হলে এ আপনার ভুল ধারণা। রোজ নিয়ম করে হাতে সময় নিয়ে সকাল বিকেল হাঁটতে হবে আপনাকে। হাঁটা শুরুর আগে কিছু পদ্ধতিও অনুসরণ করতে হবে।
প্রথমেই নজর দিতে হবে জুতোর ব্যবহারের উপর। জুতো কেনার ব্যপারে কোনও রকম কৃপণতা করা চলবে না। রানিংশু বা কমফর্টেবল স্নিকার্স জাতীয় জুতো আবশ্যক। জুতো যেন শক্ত প্রকৃতির না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। তাতে পায়ের পেশীর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হাঁটার গতি ও দূরত্ব উভয়ে থাকবে সামঞ্জস্য। কোনও রকম তাড়াহুড়ো নয়। পথ হাঁটা শুরু করুন ধীরে-সুস্থে। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়াতে পারেন হাঁটার গতি এবং দূরত্ব। সময় মেপে বিশ্রাম এবং হাঁটা দুইই অভ্যাস করতে হবে।
ব্যস্ত জীবনে হাঁটা সে ভাবে হয়ে ওঠে না বলে অনেকে হাল ছেড়ে দেয়। কিন্তু কখনই এমন ভুল করবেন না। হাতে থাকা অল্প ফুরসতকেই কাজে লাগান। তবে হাঁটার শত গুণাবলী থাকালেও কলকাতায় মেলে না প্রাতর্ভ্রমণের সঠিক পরিবেশ। কংক্রিটের সারি আর রাস্তার যানবাহনের মাঝে পা ফেলার অবকাশ মেলে না। তবে কলকাতার বেশ কিছু জায়গা কিন্তু প্রাতর্ভ্রমণের জন্য খুব উপযুক্ত। রইল তেমনই কিছু জায়গার হদিশ।
প্রিন্সেপ ঘাট হতেই পারে আপনার প্রাতর্ভ্রমণের উপযুক্ত স্থান।
রবীন্দ্র সরোবর/লেক গার্ডেন: যদি আপনি দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা হয়ে থাকেন তবে ঢাকুরিয়া চত্বরের রবীন্দ্রসরোবর তথা লেক গার্ডেন হতেই পারে আপনার প্রাতর্ভ্রমণের আদর্শ ঠিকানা। লেক ছাড়াও এখানে রয়েছে বিভিন্ন উপজাতির গাছ, লেকের মধ্যে আছে একটি দ্বীপও যেখানে বহু প্রজাতির পাখির রয়েছে আনাগোনা। এ ছাড়াও হাঁটার জন্য বাধানো রাস্তা ও বিশ্রামের জন্য গাছের তলায় বসার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। যেখানে বসে আপনি করতে পারেন প্রানায়ামও। লেকটির চমকপ্রদ দৃশ্য এবং আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশ নগর জীবনের হুড়োহুড়ি থেকে দিতে পারে আপনাকে স্বস্তি। তাই দেরি না করে, রোজ সকালে বেড়িয়ে পরুন প্রাতর্ভ্রমণের উদ্দেশ্যে।
দেশপ্রিয় পার্ক: রাসবিহারী এভিনিউ এবং শরৎ বোস রোডের মধ্য স্থানে অবস্থিত এই পার্কটি। খেলার মাঠ হিসেবে বিশেষ পরিচিত এই পার্কটি।বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত পার্কটি আপনার প্রাতর্ভ্রমণের একটি আদর্শ স্থান হতেই পারে।
ময়দান: মধ্য কলকাতার কেন্দ্র জুড়ে রয়েছে এই উদ্যানটি। উন্মুক্ত বাতাসের বিচরণ ও সবুজ ঘাসের সংস্পর্শে মনে যেমন আসে সতেজতা, তেমনই আপনার শরীরচর্চার সঠিক স্থানও হতে পারে ময়দানের গড়ের মাঠ। ভিক্টোরিয়া ছাড়াও দ্বিতীয় হুগলী সেতু এবং ইডেনের অপরূপ দৃশ্য দেখার সুযোগও রয়েছে। তাই এটিও হতেই পারে আপনার প্রাতর্ভ্রমণের একটি অন্যতম স্থান।
এলিয়ট পার্ক: শুধু ময়দানই নয়, মধ্য কলকাতায় প্রাতর্ভ্রমণের তালিকায় আপনার জন্য রয়েছে সুসজ্জিত উদ্যান যাকে পার্কও বলা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এটাও হতেই পারে আপনার পছন্দের প্রাতর্ভ্রমণের স্থান।
প্রিন্সেপ ঘাট: গঙ্গার দিলখোলা হাওয়া, জোয়ার-ভাটার অপূর্ব খেলা সব মিলিয়ে আপনার প্রাতর্ভ্রমণের তালিকায় প্রথম স্থান নিতেই পারে এই প্রিন্সেপ ঘাট চত্বরটি। গঙ্গা ছাড়াও রয়েছে বাধানো গঙ্গার ঘাট যা কিনা হতেই আপনার প্রাতর্ভ্রমণের উপযুক্ত ক্ষেত্র।
দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি প্রাতর্ভ্রমণেরও উত্তম ঠিকানা ভিক্টোরিয়া
ভিক্টোরিয়া: প্রাতর্ভ্রমণের তালিকা থাকে বাদ দেওয়া যায়না ভিক্টোরিয়াকেও। পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি প্রাতর্ভ্রমণেরও একটি আদর্শ স্থান হতে পারে। মেমোরিয়াল হলের পাশাপাশি রয়েছে সজ্জিত বাগানের অপরূপ সৌন্দর্য। যা আপনার শরীরের পাশাপাশি আপনার মনে আনতে পারে সজীবতা। তাই প্রাতর্ভ্রমণের জন্য মন্দ নয় এই স্থানটিও।
হেদুয়া পার্ক: উত্তর কলকাতার বুকে প্রাচীন কংক্রিট ঠেলে হেদুয়া পার্কও হতে পারে আপনাদের প্রাতর্ভ্রমণের অন্যতম ঠিকানা। পার্কের মাঝে একটি সুইমিং পুলও আছে। এটিও প্রাতর্ভ্রমণের একটি আদর্শ ক্ষেত্র।
সেন্ট্রাল পার্ক/বনবিতান: বিধাননগরের সল্টলেক এলাকাভুক্ত এই পার্কটি বিস্তর জায়গা জুড়ে রয়েছে। একটি লেক ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন রকম ফুলের বাগান, সেখানে আনাগোনা ভিন্ন প্রজাতির পাখির।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই পার্কটিও প্রাতর্ভ্রমণের অন্যতম সেরা ঠিকানা।