‘‘কলকাতার সবুজ মানেই আমার কাছে রবীন্দ্র সরোবর। ’’
কলকাতার বিষয়ে আমার কোনও খারাপ লাগা নেই। সবটাই ভাল লাগা। নিজে যে শহরে থাকি তার সব ভাল লাগবেই। কলকাতারযে কোনও জায়গাই ভাললাগে। তবে আমাকে থাকার জন্য ইচ্ছেমতো একটা জায়গা বাছতে বললে এমন কোনও জায়গা বাছবো যেখানে গাড়ির শব্দ পাওয়া যাবে না।
কলকাতার সব পছন্দ বললাম ঠিকই। কিন্তু এই একটা জিনিস, মানে গাড়ির শব্দ ভাল লাগে না। এমন কিছু কি করা যায় না যাতে গাড়ি ব্যবহার করেও ধোঁয়া, ধুলো, শব্দ কমে যেতে পারে? আধুনিক জীবন স্পিড ছাড়া তো সম্ভব নয়। গাড়ি ব্যবহার করতেই হবে। তবে একটু শৃঙ্খলা মেনে ব্যবহার করলে শহরটা বসবাসের আরও উপযোগী হয়ে উঠবে বলে মনে করি।
রাত্রিবেলা রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অনেক কমে আসে। রাত্রিবেলা ঘুরতে তাই দারুণ লাগে। আমার স্বামী সুবানের (রায়) সঙ্গে সুযোগ পেলে মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়ি। বেশিরভাগ সময় সারাদিন শুটিং থাকে। আমরা দু’জনেই দিনের বেলা ব্যস্ত থাকি শুটিংয়ে।রাতেই আমরা ঘোরার সময় পাই। আমাদের দু’জনের ঘোরাঘুরির নির্দিষ্ট কোনও জায়গা নেই। দু’জনে একসঙ্গেবেরোলেই নতুন নতুন ঘোরার জায়গা খুঁজি। একসঙ্গে বেরোলেই আমার প্রশ্ন থাকে, ‘আজ কোন জায়গায় যাওয়া যায়?’ ঠিক নতুন একটা জায়গা খুঁজে বের করে সুবান। এই দায়িত্বটা ওর।
‘‘আমার স্বামী সুবানের সঙ্গে সুযোগ পেলে মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়ি’’
কলকাতার সব খাবারই আমার খুব পছন্দ। কিন্তু ফুচকা বেশি ভাল লাগে। অবশ্য বিরিয়ানিও আমার খুব পছন্দের। আমরা প্রায় রোজই ‘কৃষ্ণকলি’র মেকআপ রুমে বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খাই। মাঝে মাঝে ফুচকাও নিয়ে আসি। এত ভালবাসি ফুচকা।
প্রথম কলকাতায় আসি শপিং করতে। ক্লাস ফাইভ কি সিক্সে পড়ি। তখন বনগাঁয় থাকতাম। দিদি-দাদাদের সঙ্গে এসেছিলাম। শপিং করতে এসে আমার সাইজের কোনও পোশাক পাইনি। খুব দুঃখ হয়েছিল।
প্রথম দেখা কলকাতা আর এখনকার কলকাতার মধ্যে একটা তফাৎ চোখে পড়ে। তখন রাতের কলকাতায় লাইট কম ছিল। এখন লাইট অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগে রাতে এই শহরের অনেক অলিগলি অন্ধকার ছিল। কোনও কারণে সন্ধের পর সে সব রাস্তায় যেতে গেলে গা ছমছম করত।এখন এত লাইট যে আর রাত সেভাবে বোঝা যায় না। মনে হয় সব সময় দিন হয়ে আছে কলকাতায়।
কলকাতার সবুজ মানেই আমার কাছে রবীন্দ্র সরোবর। জায়গাটা খুব ভাল লাগে। বিশেষ করে ব্রিজটা ক্রস করেই যে রাস্তাটা আছে সেটা আরও ভাল লাগে। সরোবরের জল, গাছপালা, পাখির ডাক... সব মিলিয়ে বাকি কলকাতার থেকে অন্যরকম।
কলকাতা এখনও পর্যন্ত সেফ সিটি বলে মনে হয়। আমার বা আমার বন্ধুদের সঙ্গে কখনও খারাপ কিছু ঘটেনি। মেয়েদের জন্যও শহরটা সেফ। আমি শীতকালের গভীর রাতেও অনেক সময় শুটিং প্যাক আপের পর বাড়ি ফিরেছি।কিছু ঘটনা নিশ্চয়ই ঘটে মেয়েদের সঙ্গে। খবরে পড়েছি বা বন্ধুদের কাছে শুনেছি। আশা করব, খুব তাড়াতাড়ি আমার শহর এমন একটা শহর হয়ে উঠবে যে আর একটাও এরকম ঘটনা ঘটবে না।