Rupankar Bagchi

কলকাতার জ্যাম, মানুষজনের চিৎকার, অকারণ হর্ন ভাল লাগে

কলকাতার প্রতি আমার একটা অদ্ভুত টান। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়তো এমনটা হয়। যখনই বাইরে যাই বার বার কলকাতায় ফিরে আসতে ইচ্ছে করে। শুধু বাড়ি নয়, গোটা শহরটাই যেন আমাকে টানে।

Advertisement

রূপঙ্কর বাগচী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:০০
Share:

কলকাতা আমার কাছে ‘শান্তি’।

মধ্য কলকাতার শ্যামবাজারে বড় হয়ে ওঠা। প্রথমে বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুল, পরে হেয়ার স্কুলে পড়েছি। তারপর সিটি কলেজ। কলকাতাকে ঘিরেই আমার গান, সুর আর ছন্দ। আমি একজন আরবান ফোক সিঙ্গার। শ্যামবাজারের বাড়িতে জেঠুর কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শোনা থেকে শুরু করে ডোভারলেন সঙ্গীত সম্মেলন, জাতীয় সঙ্গীত সম্মেলন... এছাড়াও সুমনের, অঞ্জন দত্তের, নচিদার গান শোনা, সবই তো কলকাতায়। ছোটবেলায় যখন আর ডি বর্মনকে নিয়ে উত্তেজিত হয়েছি সেটাও কলকাতায়। আবার যখন সলিল চৌধুরীকে নিয়ে মাতামাতি করেছি, সেটাও কলকাতায়।

Advertisement

কলকাতার প্রতি আমার একটা অদ্ভুত টান। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়তো এমনটা হয়। যখনই বাইরে যাই বার বার কলকাতায় ফিরে আসতে ইচ্ছে করে। শুধু বাড়ি নয়, গোটা শহরটাই যেন আমাকে টানে। কলকাতার ভাল-মন্দ সবই আমার ভাল লাগে। যেমন, কলকাতার জ্যাম ভাল লাগে, কলকাতায় মানুষজনের চিৎকার ভাল লাগে, অকারণে হর্ন বাজানো ভাল লাগে। আসলে কলকাতা আমার কাছে ‘শান্তি’।

কলকাতা এত সুন্দর একটা শহর, অথচ, প্রতিনিয়ত মানুষ তার নিজের শহরকে নোংরা করে চলেছে। চোখের সামনে রোজ দেখছি, তবুও কিছু বলে উঠতে পারি না। কিন্তু মাঝেমধ্যে মনে হয়, এই শহরটাকে পরিষ্কার করে রাখার কথা কেন কেউ ভাবে না? সবাই একেবারে শৌচাগার করে তুলেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাস্তার ধারের চা-ফুচকা আর পান আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

কলকাতাকে জুড়ে কফি হাউজের আড্ডা, উত্তেজনাকে ভুলতে পারি না

কলকাতাকে জুড়ে স্মৃতি অনেক... কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব? কলকাতাকে জুড়ে কফি হাউজের আড্ডা, উত্তেজনাকে ভুলতে পারি না। অ্যাকাডেমি চত্বরে ঘুরে বেড়ানো ভুলতে পারি না। রাজনৈতিক মিছিলের স্লোগানগুলো ভুলতে পারি না। এই বিষয়গুলো আজও আমাকে ভীষণ ভাবে টানে। মহানগরীর সব রূপই আমার বারংবার ভাবিয়ে তোলে।

আরও পড়ুন: কলকাতা, ভেবে দেখো যাবে কি না আমার সাথে

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মনে পড়ল, শহর জুড়ে উৎসবের মরসুম চললে আমরা এখন সপরিবারে রেস্তরাঁ যাই, ভাল-মন্দ খাই, বা পাবে গিয়ে আড্ডা দিই। কিন্তু আমার ছোটবেলাটা ছিল একদম অন্যরকম। পুজো হোক বা বড়দিন, বাড়ির সবাই মিলে ঘুরতে যেতাম ধর্মতলায়। তার সঙ্গে নিউ এম্পায়ার, লাইট হাউজ, মেট্রো, নিউ মার্কেট ঘুরে বেড়ানো এবং সবশেষে অনাদি কেবিনে মোগলাই পরোটা খাওয়া। আজ যেন কথায় কথায় হঠাত্ করে খুব মনে পড়ে গেল পুরনো সেই দিনের কথা।

কলকাতার খাওয়াদাওয়ার প্রসঙ্গে বলি, কলকাতার স্ট্রিট ফুড আমার খুব ভাল লাগে। চাউমিন, রোল, মোগলাই প্রথম তো কলকাতার রাস্তাতেই খেয়েছিলাম। আমি প্রচুর বিদেশবিভুঁই ঘুরেছি, কিন্তু কোথাও আমি কলকাতার মতো স্ট্রিট ফুডের বাহার আর স্বাদ পাইনি।

বিদেশি বন্ধুর যদি কলকাতায় আগমন ঘটে, তাকে সোজা ডালহৌসিতে নিয়ে গিয়ে অফিসপাড়ার খাবার খাওয়াব। ভাত–ডাল–তরকারি–মাছ, রুটি–তরকা, কলকাতার মিষ্টি, বিশেষত বিবাদী বাগের মিষ্টি খাওয়াব। তাকে দেখাব কলকাতার অফিসপাড়ায় কী কী খাবার পাওয়া যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement