‘শুটিং শেষে যখন ভোরবেলা বাড়ি ফিরতাম তখন খুব ভাল লাগত এই শহুরে ভোরটা’
আমি সে ভাবে কখনও মধ্য কলকাতার স্বাদ পাইনি। আমার জন্ম আর বেড়ে ওঠা বেলঘরিয়াতেই। আমার স্কুল ছিল বাড়ির একদম কাছে আড়িয়াদহ সর্বমঙ্গলা বালিকা বিদ্যালয়, আর কলেজ ছিল রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ছোটবেলা থেকেই কলকাতার যে জিনিসটা আমাকে খুব টানে, সেটা কলকাতার ভোর। শুটিং শেষে যখন ভোরবেলা বাড়ি ফিরতাম তখন খুব ভাল লাগত এই শহুরে ভোরটা। বিশেষ করে রেড রোডের ধরে প্রিন্সেপ ঘাট হয়ে যখন বাড়ি ফিরতাম। বহু বার গিয়েছি, আগামীতেও যাব। এই যাওয়া আসা যেন চিরকালের। এই ভালবাসা যেন কখনওই ফুরিয়ে যাওয়ার নয়।
আমি লেখালিখি করতে ভালবাসি। টুকটাক গল্পের বইও পড়ি। তবে সেটা যে অনেক পুরনো তা একদমই না। কলকাতাকে ভালবেসেই, কলকাতার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথেই আমার প্রথম কবিতা লেখা।
প্রেম বা ভালবাসা যা-ই বলি, সবটাই কলকাতাকেন্দ্রিক। কখনও হয়তো সেভাবে হাতে খানিকটা সময় নিয়ে প্রেমটা করা হয়নি। হাত ধরে হাঁটা হয়নি কলকাতার রাস্তায়। তবে প্রথম দেখা হওয়া থেকে শুরু করে ডেটিং, সবটাই কলকাতার সঙ্গে জড়িয়ে। মোদ্দা কথা, ছোট থেকে বেড়ে ওঠা সবটাই কলকাতায়।
আরও পড়ুন: কলকাতা, ভেবে দেখো যাবে কি না আমার সাথে
‘কলকাতার মানুষ শুধু নিজের সংস্কৃতি নয়, পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকেও ধারণ করছে’
কলকাতা! আমার মহানগরী এমনিতে খুব মিষ্টি। খুব প্রাচীন শহর। সেখানে রয়েছে বহু ধর্মের সমাগম। তবুও কলকাতা আর বাঙালি যেন একই সূত্রে বাঁধা।
কলকাতা আমার আধুনিকা। তবুও খারাপ লাগে যখন এক শ্রেণির মানুষের মনে রয়ে যায় বৃহৎ দৃষ্টিভঙ্গির অভাব। তাদের মানসিকতা কোথাও যেন একটা আটকে আছে, বৃহত্তর বা উদার হতে পারেনি। সেই বিষয়টা আমাকে অনেক সময় ভাবায়। কারণ কলকাতার মানুষ শুধু নিজের সংস্কৃতি নয়, পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকেও ধারণ করছে। তাই সে দিক থেকে ভাবতে গেলে কলকাতার মানুষের ভাবনায় আনতে হবে আধুনিকতার ছোয়া।
আরও পড়ুন: কালবৈশাখীর আঁচলের তলায় শান্তির ঘুম পাড়ায় আমার কলকাতা
কলকাতা নিয়ে তেমন কোনও স্মৃতি নেই। ছোট থেকে কলকাতাকে সেভাবে কখনও পাইনি। যখন আমি একটু বড় হলাম, ওই ধরা যাক, যখন ক্লাস ইলেভেন... তখন থেকেই কলকাতার পথ চেনা। যাদুঘর থেকে শুরু করে চিড়িয়াখানা, বিড়লা প্ল্যানেটরিয়াম, পর্যটকদের যা যা আকর্ষণ করে সবটাই দেখেছিলাম। তাই সেই গোটা সময়টাই আমার কাছে অনেক প্রিয়।
কলকাতায় যে পরিমাণ ফাস্ট ফুড পাওয়া যায় তা আর কোথাও মেলে না। আর সত্যি বলতে, আমার ওই রাস্তার ধারের খাবারগুলোই ভাল লাগে। চাউমিন, এগরোল থেকে শুরু করে ফুচকা, ঘুগনি সবই যেন অমৃত।
প্রবাসী বন্ধুর আগমন ঘটলে প্রিন্সেপ ঘাটের সন্ধ্যা আর কলকাতার বিরিয়ানি, এ দুটো প্রথম সারিতে থাকবে। তারপর বাকি যা কিছু...।