মার্কিন রণতরী ইউএসএস স্টেটহেম। এই গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারটিই গিয়েছে বিতর্কিত দ্বীপের কাছে। ছবি: এপি।
স্থলসীমান্তে বিবাদ চলছে ভারতের সঙ্গে। যুদ্ধের হুমকি দিয়েও সিকিম সীমান্ত থেকে চিন নড়াতে পারছে না ভারতের বিশাল বাহিনীকে। তার মধ্যেই জলসীমান্তে আর এক সঙ্ঘাত। দক্ষিণ চিন সাগরে টহল দিতে দিতে বিতর্কিত দ্বীপপুঞ্জ প্যারাসেলের খুব কাছে পৌঁছে গেল মার্কিন নৌসেনার রণতরী ইউএসএস স্টেটহেম। কড়া বিবৃতি দিয়ে বেজিং জানাল, আমেরিকা সামরিক প্ররোচনা দিতে শুরু করেছে। আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি চিনা বিদেশ মন্ত্রক বলল, ‘‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই বেজিং করবে।’’
রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ভূখণ্ডের বা দ্বীপের উপকূল থেকে জলভাগের মধ্যে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকা ওই ভূখণ্ডের বা দ্বীপের নিজস্ব জলসীমা। ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান-সহ বেশ কয়েকটি দেশের দাবিকে নস্যাৎ করে দক্ষিণ চিন সাগরের বুকে জেগে থাকা প্যারাসেল এবং স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ চিন নিজের দখলে নেওয়ার পর থেকে ওই সব দ্বীপের লাগোয়া জলভাগকেও চিন নিজস্ব জলসীমা বলে দাবি করতে শুরু করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালত ওই সব দ্বীপের উপর চিনের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। দক্ষিণ চিন সাগরকেও আন্তর্জাতিক জলভাগ বলেই আদালত মেনে নিয়েছে। তার পর থেকে ওই অঞ্চলে টহলদারি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকা। তারা এই সব টহলদারির নাম দিয়েছে, ‘ফ্রিডম অব নেভিগেশন’ টহল। অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক জলভাগে চলাচলের স্বাধীনতা অঘুণ্ণ রাখার জন্যই এই টহলদারি— বক্তব্য আমেরিকার।
আরও পড়ুন:চিনও ১৯৬২-তে পড়ে নেই: যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে হুঁশিয়ারি শুরু বেজিং-এর
আমেরিকা সামরিক প্ররোচনা দিচ্ছে বলে চিন মন্তব্য করেছে। প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপই হবে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। —প্রতীকী ছবি।
ফ্রিডম অব নেভিগেশন টহলের অঙ্গ হিসেবেই দক্ষিণ চিন সাগরে এখন টহল দিচ্ছে মার্কিন নৌসেনার গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস স্টেটহেম। দিন কয়েক আগেই প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের ট্রিটন আইল্যান্ডের খুব কাছে সেই মার্কিন যুদ্ধজাহাজ পৌঁছয়। দ্বীপের উপকূলের ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যেই ঢুকে পড়ে রণতরীটি। খবর পেয়েই দ্রুত সেখানে যুদ্ধজাহাজ এবং ফাইটার জেট পাঠায় চিন। এর ফলে দক্ষিণ চিন সাগরের উত্তাপ ফের বেড়ে গিয়েছে।
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই অবশ্য চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সেই কথোপকথনে নাকি মার্কিন রণতরীর গতিবিধি সম্পর্কে নিজের বিরক্তি শি গোপন রাখেননি। কিছু ‘নেতিবাচক বিষয়’ চিন-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে বলে শি নাকি ট্রাম্পকে জানান। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমেই এই খবর জানানো হয়। তবে হোয়াইট হাউসের তরফে সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
রবিবার চিনের বিদেশ মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। আমেরিকা এ বার ‘গুরুতর রাজনৈতিক ও সামরিক প্ররোচনা’ দেওয়া শুরু করেছে বলে সেই বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চিনের যে সব প্রতিবেশী দেশ রয়েছে, তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে বেজিং দক্ষিণ চিন সাগরের উত্তাপ অনেক কমিয়ে এনেছিল। আমেরিকা ফের দক্ষিণ চিন সাগরকে উত্তপ্ত করতে চাইছে বলে বেজিং-এর অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy