—প্রতীকী চিত্র।
গণতন্ত্রকামী আন্দোলনে রাশ টানতে চার বছর আগেই হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করেছিল বেজিং। সেই কঠোর আইনের আওতায় স্বায়ত্তশাসিত এই এলাকার বহু গণতন্ত্রকামী নেতার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ বার বিরোধী কণ্ঠ আরও কঠোর ভাবে দমন করতে নতুন নিরাপত্তা আইন আনল হংকং প্রশাসন। আজই হংকংয়ের আইনসভায় পাশ হয়েছে সেই জাতীয় নিরাপত্তা আইন।
হংকংয়ের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা মুখে বলছেন, সংবিধানের ২৩ নম্বর ধারার আওতায় কার্যকর এই আইন আদতে এই ভূখণ্ডের স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করবে। এই আইন পাশ হওয়ার পরে প্রশাসক জন লি যেমন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘এটা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। হংকংয়ের মানুষ গত ২৬ বছর ধরে এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন।’’ জনের দাবি, কোনও বিদেশি শক্তি যাতে কোনও ভাবে হংকংয়ের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা লঙ্ঘনে কোনও ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই বিশেষ আইন আনা হয়েছে। জনের আরও বক্তব্য, যে কোনও ধরনের নাশকতা এবং গভীর গোপন ষড়যন্ত্র বিনাশ করতেই এই নতুন আইন কার্যকর করা হয়েছে। জনের কথায়, ‘‘স্বাধীন হংকংয়ের চিন্তাও যাতে কারও মাথায় না আসে, সেই জন্য এই আইন পাশ করানো হয়েছে।’’ ২০১৯ সালে চিন-বিরোধী আন্দোলনে হংকং যখন উত্তাল ছিল, তখন সেই আন্দোলনে ব্রিটিশ সরকারের সরাসরি মদত ছিল বলে অভিযোগ এনেছিলেন হংকংয়ের তৎকালীন বেজিংপন্থী প্রশাসক ক্যারি ল্যাম। ‘বহিরাগত সেই শক্তির’ উল্লেখ আজও করেছেন নতুন প্রশাসক জন।
নতুন আইনের আওতায় বিশ্বাসঘাতকতা, বিদ্রোহের সাজা হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তুলনামূলক লঘু অপরাধ অর্থাৎ সরকার-বিরোধী কোনও লেখা বা বই নিজের কাছে রাখলে হংকংবাসীর সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। চার বছর আগেই সরকার-বিরোধী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি এবং তার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিল হংকং প্রশাসন। নতুন এই নিরাপত্তা আইনের আওতায় সাংবাদিকদের স্বাধীনতা আরও খর্ব করা হবে বলে মনে করছেন গণতন্ত্রকামী নেতারা। চরবৃত্তি বা হংকংয়ের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপন তথ্য বিদেশি শক্তির কাছে ফাঁস করার সাজা হতে চলেছে যথাক্রমে ২০ এবং ১০ বছরের কারাদণ্ড। বিদেশি সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট বা ধ্বংস করা বা সেই ষড়যন্ত্র করার সাজার মেয়াদও হতে চলেছে ২০ বছরের কারাদণ্ড। দেশদ্রোহের সাজা হতে পারে সাত বছরের জেল। নতুন এই আইন বলছে, জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে এমন যে কোনও অপরাধের বিচার হবে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে।
বিরোধীদের দাবি, এই নতুন নিরাপত্তা আইনে পুলিশ চাইলে কোনও চার্জ গঠন না করেই যে কোনও অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই অভিযুক্ত কোনও আইনি সহায়তাও পাবেন না। বেজিং-বিরোধী যে কোনও ধরনের কণ্ঠস্বর রোধ করতেই হংকং প্রশাসন এই আইন এনেছে বলে দাবি অধিকাংশ গণতন্ত্রকামী নেতার। আমেরিকা বা ব্রিটেনের মতো পশ্চিমি দেশগুলি এখনও পর্যন্ত নয়া আইন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy