Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Earthquake in Turkey and Syria

মৃত্যু ছাড়াল ১১০০০, ভূমিকম্পে বেঁচে গিয়েও এ বার শীত আর ক্ষুধার জ্বালায় মৃত্যুমুখে মানুষ

তুরস্কের এমনই একটি শহর আন্তাকিয়ার বাসিন্দা বছর চৌষট্টির বৃদ্ধা মেলক বলেন, “শহরে উদ্ধারকারীদের দেখা নেই। কোনও শিবির তৈরি করা হয়নি যেখানে গিয়ে আশ্রয় নেব। খাবার, জল কিছুই পাচ্ছি না।”

Earthquake in Turkey

ভূমিকম্পের পর ঠান্ডা আর বৃষ্টিতে প্রাণ সংশয় দেখা দিচ্ছে তুরস্কে। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৩৬
Share: Save:

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেল। আহতের সংখ্যা ৩৫ হাজারেরও বেশি। ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা থেকে বেঁচে গিয়েও নতুন উপদ্রবের মুখে সে দেশে মানুষ। কোথাও তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৩ ডিগ্রিতে, কোথাও হিমাঙ্কের নীচে পৌঁছেছে তাপমাত্রা। তার সঙ্গে চলছে তুষারপাত আর বৃষ্টি। ফলে ভূমিকম্পের হাত থেকে বেঁচে গিয়েও স্বস্তিতে নেই তুরস্কের মানুষ। হাড় জমানো ঠান্ডায় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও জুটছে না। ফলে বাধ্য হয়েই খোলা আকাশের নীচে কাটাতে হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ সকলকে।

প্রবল ঠান্ডা আর বৃষ্টির মধ্যে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলেও তুরস্ক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। বহু এলাকায় রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরা পৌঁছতে পারছেন না। পৌঁছচ্ছে না ত্রাণও। ফলে এলাকায় এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভূমিকম্পে বেঁচে গিয়েও প্রাণ সংশয় তৈরি হচ্ছে। হাড় জমানো ঠান্ডা আর খিদের জ্বালায় অনেকেই মৃত্যুমুখে যেতে বসছেন। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন, চরম ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে যাঁরা দিন কাটাচ্ছেন, হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যাবে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

তুরস্কের এমনই একটি শহর আন্তাকিয়ার বাসিন্দা বছর চৌষট্টির বৃদ্ধা মেলক বলেন, “শহরে উদ্ধারকারীদের দেখা নেই। কোনও শিবির তৈরি করা হয়নি যেখানে গিয়ে আশ্রয় নেব। খাবার, জল কিছুই পাচ্ছি না।” তাঁর কথায়, “ভূমিকম্প থেকে তো বেঁচে গিয়েছি বরাতজোরে। কিন্তু এখন ঠান্ডা আর খিদের জ্বালায় মারা যাব।”

বহু জায়গায় উদ্ধারকাজ না হওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বুধবার দক্ষিণ তুরস্কের কম্পনবিধ্বস্ত এলাকাগুলিকে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট তায়িপ এর্দোয়ান। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ভূমিকম্পে বেঁচে ফেরা নাগরিকদের জন্য অস্থায়ী শিবিরের আয়োজন করা হবে।

earthquake in turkey

ধ্বংসস্তূপের নীচে কেউ আটকে কি না খোঁজ চলছে। ছবি: রয়টার্স।

সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সীমান্তলাগোয়া এলাকাগুলির। কাহরামানমারাস শহরের বাসিন্দা আলি সাগিরোগলু বলেন, “ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছে আমার ভাই, ভাইপো। ওঁদের কী ভাবে বাঁচাব! কোনও উদ্ধারকারী নেই। প্রশাসনের কোনও লোক নেই। কোথায় যাব, কী করব।”

আমেরিকা, চিন এবং উপসাগরীয় দেশগুলি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ৭০টি দেশ ত্রাণ এবং উদ্ধারকারী দল পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভারত ইতিমধ্যেই তুরস্ককে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য ৪৫ সদস্যের একটি মেডিক্যাল দল পাঠানো হয়েছে সেখানে।

সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টে ১৭ মিনিটে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয় তুরস্ক এবং সিরিয়ায়। কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। সেই কম্পনে যে ধ্বংসলীলা চলেছে তাতে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE