কেন্দ্রের কাছে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পরে ত্রাণ ও সহায়তা খাতে কেন্দ্র এখনও এক পয়সাও দেয়নি বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বুলবুল ধাক্কা দেওয়ার পরের দিন প্রধানমন্ত্রী টুইট করেছিলেন। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছিলেন। কিন্তু এখনও কেন্দ্রীয় সাহায্য কিছু আসেনি।’’ তিনি জানান, রাজ্য কেন্দ্রের কাছে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দাখিল করেছে। কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল হেলিকপ্টারে দুর্গত অঞ্চল দেখেও গিয়েছে।
বিধানসভায় সোমবার তৃণমূল বিধায়ক গীতারানি ভুঁইয়ার প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বিপর্যস্ত কৃষকদের সাহায্যে রাজ্য ইতিমধ্যেই ১২০০ কোটি টাকা দিয়েছে। বুলবুলের জেরে ধানের জোগান নিয়ে আশঙ্কার কারণ নেই বলেও এ দিন আশ্বস্ত করেন মমতা।
ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত হিসেব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৫ হাজার হেক্টর চাষের জমি নষ্ট হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মেদিনীপুরে সর্বত্র পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। ধান সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়েছে। প্রায় পাঁচ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মমতার কথায়, ‘‘আমি মানি না, অল্প ক্ষতি হয়েছে। কারণ মাটির বাড়ির নীচে একটুও জল থাকলে পুরো বাড়িটাই পড়ে যাবে। সুতরাং ৫ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: পুলিশে সমন্বয়, গোয়েন্দা-তথ্যে জোর মুখ্যমন্ত্রীর
মমতা বলেন, ‘‘বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি বাংলা আবাস যোজনার মাধ্যমে করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। একটু সময় লাগবে। যাঁদের চাষের জমি নষ্ট হয়েছে, তাঁরা শস্য বিমার সুবিধা পাবেন। ক্ষতিগ্রস্ত পানের বরজের জন্য পাঁচ হাজার টাকা
করে সাহায্যের কথা ভাবা হচ্ছে।’’ তিনি আরও জানান, স্থানীয় ছেলেমেয়েদের ১০০ দিনের কাজে নিয়োগ করে পুকুর সাফ, গাছ সরানো ইত্যাদি করানো হচ্ছে।
আমন ধান চাষের মরসুমে রাজ্যের ৯টি জেলায় প্রায় ৫২ শতাংশ কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ধানের ফলন নিয়ে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তা নস্যাৎ করে মমতা বলেন, ‘‘এই সব বলা মানে আড়তদারদের আরও শক্তিশালী করা। বাংলায় যথেষ্ট ধান উৎপাদন হয় এবং উদ্বৃত্ত হয়। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই। নষ্ট পাকা ধান নিয়ে কী করা যায়, তার জন্য গবেষণা চলছে।’’
বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, সরকার সর্বদল বৈঠকে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিলে তাঁরাও কেন্দ্রের কাছে দরবার করবেন। আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ও তাঁর আধিকারিকদের দেওয়া হিসেব— দু’টো আলাদা। তাই কেন্দ্র হয়তো ঘাবড়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy