—প্রতীকী চিত্র।
স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দশম শ্রেণির ছাত্রকে ঘিরে ধরেন দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিশোরের শরীরে ইঞ্জেকশন ‘পুশ’ করেই বাইকে উঠে পালিয়ে যান দু’জন। শরীরে অস্বস্তিবোধ হয়। প্রায় টলতে টলতেই বাড়ি ফেরে ছেলেটি। অন্য দিকে, ওই ঘটনার কিছু ক্ষণ পরই ছাত্রের ব্যবসায়ী বাবা একটি ফোন পান। ফোনের ওপার থেকে অজানা কণ্ঠস্বর জানায়, তাঁর ছেলের শরীরে ‘বায়োলজিক্যাল ভাইরাস’ প্রবেশ করানো হয়েছে। তিন কোটি টাকা দিলে তবেই মিলবে তার ‘অ্যান্টিডোট’। শনিবার দুপুরে ওই ফোন পেয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ব্যবসায়ী গোপাল দেবনাথের। কী করবেন, ভাবতে ভাবতে রানাঘাট পুলিশ জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। অভিযোগ পেয়ে টানা তল্লাশি চালিয়ে সোমবার উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবড়া এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ওই কিশোর। তবে তার শরীরে ক্ষতিকর কিছু মেলেনি বলে জানা যাচ্ছে। তবে এই পুরো ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
নদিয়া জেলার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গোপাল দেবনাথের ১৬ বছরের পুত্র পড়াশোনা করেন রানাঘাট পুলিশ জেলার রামনগর আইশতলায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের। পুলিশ সূত্রে খবর রামনগর মিলন বাগান স্কুল মোড়ের কাছে শনিবার ওই ছাত্রকে ঘিরে ধরেন দু’জন। তার গলার পিছনের দিকে একটি ইঞ্জেকশন দিয়ে পালিয়ে যান দু’জন। পরে তাঁরাই ফোন করে ছাত্রের বাবাকে জানান, ছেলের শরীরে ক্ষতিকর ভাইরাস প্রবেশ করানো হয়েছে। তার পর দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা।
ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। যে ফোন নম্বর থেকে ব্যবসায়ীকে উফোন করা হয়েছিল, তা ‘ট্র্যাক’ করতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। তদন্তের দু’দিনের মধ্যে আকাশ এবং তন্ময় দেবনাথ নামে দুই সন্দেহভাজনকে হাবড়া থানা থেকে গ্রেফতার করেছে রানাঘাট থানার তদন্তকারী দল গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত দু’জনের মধ্যে এক জন ওই ব্যবসায়ীরই আত্মীয়। তবে ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি শুধু অর্থের টাকার জন্য এমন ‘অভিনব’ ব্ল্যাকমেল, তার তদন্ত করছে পুলিশ।
সোমবার ধৃতদের আদালতে পেশ তোলা হলে তাঁদের ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এই ঘটনা নিয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার সানি রাজ বলেন, ‘‘এমন অভিনব কায়দায় ব্ল্যাকমেলিং নজিরবিহীন। দ্রুততার সঙ্গে ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের উদ্দেশ্য কী ছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।’’
অন্য দিকে, একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্র। তবে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি বলে কিশোরের পরিবার সূত্রে খবর। তবে ওই ঘটনায় এক রকম ট্রমার মধ্যে রয়েছে পড়ুয়া। আতঙ্কর ঘোর কাটাতে পারছে না পরিবারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy