— প্রতীকী চিত্র।
তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাহিদার জেরে রাত বাড়লে নদিয়ায় শুরু হচ্ছে ঘনঘন লোডশেডিং। অন্ধকারের মধ্যে ঘেমেনেয়ে একশা মানুষ। কিন্তু কেন রাতে এত লোডশেডিং? সেই কারণ খুঁজতে গিয়ে ভিড়মি খাওয়ার অবস্থা বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের। দেখা যাচ্ছে, রাতে জেলার কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত টোটো চার্জ করতে দেওয়া হচ্ছে। সেই অতিরিক্ত চাহিদা সামাল দিতে না পেরে হচ্ছে ঘনঘন ‘পাওয়ার কাট’।
গরমে বিদ্যুৎ না থাকার সমস্যা নতুন কিছু নয়। দিনে দিনে গরম যে রকম বৃদ্ধি পাচ্ছে, লোডশেডিংয়ের দাপটও তেমনই। প্রাথমিক ভাবে, এত ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল এসি বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারকে। কিন্তু মাঠে নেমে কারণ খুঁজতে গিয়ে অবাক বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা। বিদ্যুৎ পর্ষদ সূত্রে খবর, নদিয়া উত্তর ডিভিশনের একাধিক সাবস্টেশনে রাত বাড়লেই বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি হচ্ছে। নির্দিষ্ট এলাকায় ট্রান্সফর্মারগুলির যে ‘ক্যাপাসিটি’ বা ক্ষমতা রয়েছে, চাহিদা পেরিয়ে যাচ্ছে সেই সীমা। ফলে বিদ্যুৎ থাকছে না। আবার কোথাও বিকল হয়ে পড়ছে ট্রান্সফর্মারই। শুধু তা-ই নয়, পরিষেবা চালু থাকলেও ভোল্টেজ কম জেলার প্রায় সর্বত্র। ঘটনার কারণ সরজমিনে খতিয়ে দেখতে জেলার বিদ্যুৎকর্তাদের একটি কমিটি একাধিক এলাকা পরিদর্শন করে। সেই পরিদর্শক দলটি প্রাথমিক ভাবে মনে করছিল যে, এসি লাগিয়েও অনেকেই বাড়তি বিদ্যুৎ বিলের কথা ভেবে লোড বৃদ্ধি করতে চান না। সেই জন্যই চাহিদার সঠিক অঙ্ক নির্ধারণ করা যায় না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, এসি নয়, রাত বাড়লে ব্যাটারিচালিত টোটো চার্জে বসানো হচ্ছে। এ জন্য প্রচুর চাপ পড়ছে। চাপ যে পড়ছে তা স্পষ্ট করিমপুরের টোটোচালক অনিল রাজবংশীর কথায়। অনিল বলেন, ‘‘দিনভর টোটো চালাই। রাতে ব্যাটারি চার্জে বসিয়ে দেওয়া হয়। সারারাত চার্জ হয়।’’ একই দাবি আরও কয়েক জন টোটোচালকেরও।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কয়েক হাজার টোটো চলাচল করলেও, তাদের কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই, নেই নম্বরপ্লেটও। টোটো চালানোর জন্য চালকদের কোনও লাইসেন্সও বাধ্যতামূলক নয়। এই সুযোগে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে টোটোর সংখ্যা। দুর্ঘটনার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রেও অন্যতম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে হিসাব বহির্ভূত কয়েক হাজার টোটো। বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে টোটোচালকদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা জরুরি বলে দাবি নদিয়া জেলা বিদ্যুৎ সরবরাহ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy