Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Meghna Cafeteria

প্রত্যন্ত করিমপুরে এক মুঠো তাজা হাওয়া ‘মেঘনা’ ক্যাফেটেরিয়া, উপচে পড়া ভিড়ে কর্মসংস্থানও প্রচুর

কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন সাংসদ তথা করিমপুরের বাসিন্দা মহুয়া মৈত্রের উদ্যোগে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তার পর ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয় মেঘনা ক্যাফেটেরিয়া। সেই ক্যাফেতেই এখন ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ।

করিমপুরের মেঘনা ক্যাফেতে ঘুরছেন পর্যটকেরা।

করিমপুরের মেঘনা ক্যাফেতে ঘুরছেন পর্যটকেরা। — নিজস্ব চিত্র।

প্রণয় ঘোষ
করিমপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:০৩
Share: Save:

মাত্র তিন মাসে বদলে গেছে ছবিটা। কৃষি বিপণন দফতরের কার্যত পরিত্যক্ত এঁদো পুকুর ও সংলগ্ন কয়েক একর জায়গা নিয়ে নদিয়ার প্রান্তিক জনপদ, সীমান্ত ঘেঁষা করিমপুরের ফার্মের মোড় আজ সেজে উঠেছে। অত্যাধুনিক বিনোদন পার্ক, ‘মেঘনা ক্যাফেটেরিয়া’ এখন সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রে। যেখানে খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি রয়েছে নানা স্বাদের গান এবং সেই সঙ্গে জমজমাট আড্ডার সব রকম উপাদান। সমসাময়িক রক, পপ ব্যান্ড ছাড়াও নদিয়ার বাউল শিল্পীদের সুরের মূর্ছনার সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পদ চেখে দেখতে পারেন যে কেউ। মোগলাই, কন্টিনেন্টাল, চাইনিজ, ভারতীয় বিভিন্ন পদ ছাড়াও রয়েছে লোভনীয় ‘মকটেল বার’। বাড়তি হিসাবে রয়েছে নানা ফ্লেভারের কফিও।

শুধু খানাপিনাই নয়, দ্রুত শুরু হচ্ছে নৌকাবিহারের সুবিধা। ১০টিরও বেশি বোট রাখা হবে পার্কে আসা সাধারণ মানুষের ভেসে বেড়ানোর জন্য। জন্মদিন হোক বা বিবাহবার্ষিকী— ক্যাফেটেরিয়ার লাউঞ্জ বুক করে অনুষ্ঠানের সুবিধাও রয়েছে। প্রকল্পটি হয়েছে রাজ্য সরকারের পর্যটন দফতর এবং করিমপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে। আর গোটা কর্মকাণ্ডের মূল রূপকার কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা করিমপুরের বাসিন্দা মহুয়া মৈত্র।

নবরূপে করিমপুর কৃষি খামার।

নবরূপে করিমপুর কৃষি খামার। — নিজস্ব চিত্র।

কী ভাবে শুরু? ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে রাজ্যের তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব পরিদর্শনে এলে ফার্মের মোড়ের ওই পুকুরকে কেন্দ্র করে একটি পার্ক তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহুয়া। তাঁর তদ্বিরেই দ্রুত অনুমোদন মেলে পার্কের। পর্যটন দফতর ও পঞ্চায়েত সমিতি মিলিয়ে প্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্ক। পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে গোটা এলাকা। প্রাতঃভ্রমণকারীদের জন্য সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা। মাত্র ১০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পার্কে আসা-যাওয়া করতে পারেন সাধারণ মানুষ। ক্যাফেটেরিয়ায় একসঙ্গে বসতে পারেন ৪০ জন।

কেমন সাড়া? মেঘনা ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্বে থাকা প্রতীক মণ্ডল জানালেন, শুধুমাত্র ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র দিন পার্কে এসেছিলেন প্রায় ১৪ হাজার মানুষ! টিকিটই বিক্রি হয়েছে ১ লক্ষ টাকার বেশি। আর দৈনিক টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৫০ হাজার টাকার মত। বর্ষশেষে সম্ভাব্য মুনাফার পরিমান কোটি ছুঁই ছুঁই। পার্ক ঘিরে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩০ জনের, অপ্রত্যক্ষ ভাবে এই পার্কের উপরে নির্ভর করছে শতাধিক মানুষের রুটিরুজি। সব মিলিয়ে, বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ৪ কিলোমিটার ভিতরে প্রত্যন্ত করিমপুরে এক মুঠো তাজা হাওয়া মহুয়ার মেঘনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahua Moitra Amusement Park Cafe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE