বাসের তলায় মুক্তার সাইকেল। — নিজস্ব চিত্র।
কখনও বা আপন মনে কানে হেডফোন গুঁজে আবার কখনও বা মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পারাপার। আর তারপরেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। কিন্তু দুর্ঘটনার পর পথচারীর আর কোনও দোষ থাকে না। সমস্ত ক্ষোভ গিয়ে পড়ে চালকের উপর। মারধর করা হয় চালককে। সঙ্গে গাড়ি ভাঙচুর। এই প্রবণতাই ধরা পড়ল সোমবার কল্যাণীতে। এ দিন কল্যাণীর বীরপাড়ায় অসাবধনতার জেরে এক স্কুল ছাত্রী জখম হয়। তার জেরে পুড়ল গাড়ি। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হল পুলিশকে।
ঘোষপাড়া নতুন পল্লীর ১৩ বছরের মুক্তা বাগচি কল্যাণী বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি থেকে রোজ সাইকেল চেপে সে স্কুলে যায়। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সে কল্যাণী বি ব্লকের ২ নন্বর বাজারের কাছে বীরপাড়ায় রাস্তা পার হচ্ছিল। সেই সময় আইটিআই মোড় থেকে কাঁচড়াপাড়াগামী ২৭ নম্বর রুটের একটি বাস দ্রুত গতিতে আসছিল। মুক্তা বাসটিকে খেয়াল করেনি। রাস্তা পার হওয়ার সময় সে আচমকা বাসের সামনে চলে আসে। চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। বাসের ধাক্কায় ওই ছাত্রী ছিটকে পড়ে রাস্তার ধারে। সাইকেলটি বাসের চাকার নিচে পড়ে। সেই সময় বাজারে প্রচুর লোকজন ছিল। ছুটে আসে তারা। আহত, সংজ্ঞাহীন মুক্তাকে জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাসের চালক পালাতে গিয়ে ধরা পড়েন। লোকজন বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। উত্তেজিত জনতা বাস ভাঙচুর করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয়। চালককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশকর্মীরা। ঘটনাস্থলে আসে দমকলও।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে, মুক্তার অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। তবে মাঝে মধ্যেই সে জ্ঞান হারাচ্ছে। তার মা সঞ্চিতা বাগচি জানিয়েছেন, তাঁরা এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে মেয়ের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন।
গত ৫ জুন ঠিক একই জায়গায় ২৭ নম্বর রুটের বাসের সঙ্গে মিনিবাসের রেষারেষিতে বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই রাস্তা দিয়ে ২৭ নম্বর রুটের বাসগুলি প্রচণ্ড গতিতে যাতায়াত করে। তার ফলে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। পুলিশ জানিয়েছে, বাসের চালক প্রদীপ শীলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি কাঁচড়াপাড়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy