গড়বেতার সন্ধিপুরে প্রচারে তৃণমূল কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র RUPSANKAR BHATTACHARYYA
হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেলই বাতিল হয়ে গিয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। লোকসভা ভোটের মুখে এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতি এখন তোলপাড়। সেই রায়ের পরে তৃণমূলকে বিঁধছে বিরোধীরা। পাল্টা তৃণমূলের প্রচারেও উঠে আসছে 'চাকরি খেকো বিজেপি' এই স্লোগান। উল্লেখ্য, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত শুক্রবার গড়বেতার সভা থেকেই প্রথম 'চাকরি খেকো বিজেপি' বলে গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেন। লক্ষ্মীর ভান্ডার, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার মতো বিষয়কে পিছনে ফেলে দলনেত্রীর সেই বার্তাই এখন গড়বেতার তৃণমূল কর্মীদের প্রচারের মূল সুর।
প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ বাতিল নিয়ে ভোটের প্রচারে এখন কার্যত 'লু' বইছে। বিরোধীরা একযোগে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করছে। সাময়িক ভাবে এই বিষয়ে চুপ করে গেলেও এখন রাজ্যের শাসক দলও পাল্টা প্রচারে কোনও ফাঁক রাখছে না। চাকরি বাতিলের জন্য সরাসরি বিরোধীদের কাঠগড়ায় তুলেছে তারা। গড়বেতায় সভা করতে এসে গত শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "বাঘ মানুষ খায় শুনেছেন, চাকরি খেকো মানুষ শুনেছেন? সেটাই হয়েছে। বিজেপি চাকরি খেয়ে নিচ্ছে।" মমতার সভার পরের দিন থেকেই গড়বেতা ১ ব্লক এলাকায় সেই বার্তা ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। সন্ধিপুর, আগরা, আমকোপা, আমলাগোড়া, বেনাচাপড়া প্রভৃতি অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে 'চাকরি খেকো বিজেপি'র কথা বলছেন তাঁরা।
গড়বেতা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি মৃন্ময় শুকুল বলেন, "আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গড়বেতায় এসে বলে গিয়েছেন চাকরি খেয়েছে বিজেপি। তাই আমাদের প্রচারে এবার যুক্ত হয়েছে চাকরি খেকো বিজেপি স্লোগান। মানুষের কাছে গিয়ে আমরা দলনেত্রীর বার্তা তুলে ধরছি।" সোমবার সকালে গড়বেতার ময়রাকাটা, বনকাটা এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচার করেন তৃণমূল কর্মীরা। ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ সহ অনেকেই। প্রচারের শুরুতেই এই বিষয়ে সরব হন। দাবি করেন, রাজ্য সরকার চাকরি করে দিলেও বিজেপি থাকলে রাজনীতি করে সব বন্ধ করে দেবে।
এবার লোকসভা ভোটের প্রচারে লক্ষ্মীর ভান্ডার, একশো দিনের কাজ নিয়েই সরব ছিল তৃণমূল। এবার সেই কৌশলে কিছুটা বদল এনে চাকরি বিষয়ে বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণকে রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলছেন, "বিজেপির মুখোশ খুলে দিচ্ছেন দলের কর্মীরা। দলনেত্রীর চাকরি খেকো বিজেপি বার্তা প্রচারে তুলে ধরছেন তাঁরা।" গেরুয়া শিবির অবশ্য এই অভিযোগ হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ লোধা বলেন, "তৃণমূলের বদান্যতায় আদালতের রায়ে চাকরি হারা হয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। মুখ্যমন্ত্রী যতই আমাদের দিকে আঙুল তুলুন, তা হাস্যকর। মানুষ সব জানেন।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy