মেদিনীপুর শহরের কলেজ রোডে মমতার প্রচারে ক্লাব। নিজস্ব চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল নিয়ে জোর জল্পনা রয়েছে। আর সেই শুভেন্দু-পর্বের মধ্যেই মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার মেদিনীপুরে দলনেত্রীর সেই জনসভার সমর্থনে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। প্রচারে নেমেছে বিভিন্ন ক্লাবও। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকর্মে ক্লাবগুলিও অভিভূত। তাই তারা নিজে থেকেই প্রচারে নেমেছে। বিরোধীদের খোঁচা, রাজনৈতিক আনুগত্য নিশ্চিত করতেই তো ক্লাব-অনুদান চালু করেছে তৃণমূল সরকার।
মেদিনীপুরের কলেজ- কলেজিয়েট স্কুল মাঠে জনসভা রয়েছে মমতার। সভাস্থলের আশেপাশে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত বড় বড় ফেস্টুন দিয়েছে ‘অ্যারিয়ান্স’ ক্লাব। ক্লাবটি তৃণমূল প্রভাবিত বলেই পরিচিত। সরাসরি ক্লাবের নামেই ফেস্টুন দেওয়া হয়েছে। সেখানে মমতার ছবির সঙ্গে বার্তা— ‘বাংলা জুড়ে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক আমি’, ‘২১ শে দিদিই ফিরছে’ বা ‘আমাদের সাথে পাঙ্গা নিলে, আমরা চাঙ্গা হয়ে যাই।’ তৃণমূল সরকার যে প্রকল্পগুলি চালু করেছে, ‘কন্যাশ্রী’, ‘যুবশ্রী’-র মতো সে সব প্রকল্পের নামও রয়েছে ফেস্টুনে।
এর আগে মেদিনীপুরে কোনও ক্লাবকে এ ভাবে ‘দিদি’-র সমর্থনে প্রকাশ্যে প্রচারে দেখা যায়নি। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ক্ষমতায় আসার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্লাবগুলির জন্য অনুদান চালু করেছিল তৃণমূল সরকার। এক-একটি ক্লাবকে প্রথমে বছরে দু’লক্ষ টাকা এবং পরে চার বছরে এক লক্ষ করে টাকা দেওয়া হয়। এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতেও শোনা গিয়েছে, ‘ক্লাবের ছেলেরাই আমাদের সংস্কৃতি ধরে রেখেছে।’
পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক ক্লাবও সরকারি অনুদান পেয়েছে। বিরোধীরা গোড়া থেকেই রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপের পিছনে ভোট-রাজনীতির উদ্দেশ্য খুঁজেছে। অভিযোগ উঠেছে, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলো ও সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে যুক্ত ক্লাবগুলিকে বাদ দিয়ে অনুদান পাইয়ে দেওয়া হয়েছে ভুঁইফোড় বহু ক্লাবকে। ফেস্টুন যারা দিয়েছে, সেই ‘অ্যারিয়ান্স’ ক্লাব অবশ্য এখনও অনুদান পায়নি। তাও তৃণমূল সরকারের প্রচার কেন?
ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক অর্ঘ্য সাহু বলেন, ‘‘আমরা সরকারি অনুদানের জন্য এখনও আবেদনই করিনি। আগে ক্লাবঘর তৈরি হোক। প্রয়োজন হলে পরে অনুদানের জন্য আবেদন করব।’’ অর্ঘ্যের কথায়, ‘‘আমরা বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি করি। এই অতিমারির সময়েও নানা কর্মসূচি করেছি। দিদির সরকার ভাল ভাল কাজ করছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা দিদির প্রচার করছি।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের কটাক্ষ, ‘‘চাওয়া- পাওয়ার জায়গা থেকে এক-দু’টো ক্লাব তৃণমূলকে সমর্থন করতে পারে, তবে যুবসমাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নেই।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি পাল্টা বলেন, ‘‘খেলাধুলোর উন্নতির স্বার্থেই ক্লাবগুলিকে অনুদান দেয় আমাদের সরকার। আর আমাদের সরকারের কাজকর্ম ভাল লেগেছে বলেই ক্লাবগুলি নিজে থেকে প্রচারে নেমেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy