প্রতীকী ছবি।
কয়েক জনের মধ্যে তর্কাতর্কি চলতে চলতেই হঠাৎ শুরু হাতাহাতি। চোখের নিমেষে এক জন পকেট থেকে ছুরি বার করে ঝাঁপিয়ে পড়লেন সামনে থাকা চার-পাঁচ জনের উপরে! দু’জনকে কুপিয়ে দৌড়ে গিয়ে ঢুকলেন বহুতলের মধ্যে। চোখের সামনে রক্তারক্তি কাণ্ড দেখে অবাক প্রত্যক্ষদর্শীরা। গুরুতর জখম দু’জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এক জন সেখানেই চিকিৎসাধীন। যদিও ওই বহুতল অফিসের দরজায় তালা ঝুলিয়েও আততায়ীকে ধরা যায়নি। শেষে বহুতলে উপস্থিত সকলকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে নামতে হল পুলিশকে!
মহেন্দ্র রায় লেনের একটি বহুজাতিক পণ্য পরিষেবা সংস্থার শাখা অফিসে এমনই ঘটনা ঘটেছে বুধবার। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সংস্থারই এক ‘ডেলিভারি বয়’ ছুরি নিয়ে হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। বহুতল অফিসটি তপসিয়া থানা এলাকায়। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, দেবাশিস বিশ্বাস নামের ওই ডেলিভারি বয়ের সঙ্গে সম্প্রতি এক সহকর্মীর স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। তা নিয়েই এ দিন দুপুরে ওই বহুতলের বাইরে দাঁড়িয়ে দেবাশিসের সঙ্গে কথা বলছিলেন গৌতম গুপ্ত, সৌরভ দে, রোহিত জয়সওয়াল-সহ আরও কয়েক জন সহকর্মী। সেই আলোচনা হঠাৎই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ঝগড়া থেকে হাতাহাতি শুরু হতেই দেবাশিস পকেট থেকে ছুরি বার করে সৌরভদের উপরে ঝাপিয়ে পড়েন। সৌরভের পেটে এবং গৌতমের হাতে ছুরির কোপ মারেন তিনি। সৌরভ মাটিতে পড়ে যান। রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটিয়ে এর পরে দেবাশিস বহুতল অফিসের ভিতরে ঢুকে যান। তত ক্ষণে প্রত্যক্ষদর্শীদের চিৎকারে শোরগোল পড়ে যায় সেখানে। দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হয় বহুতলের মূল দরজা। খবর যায় তপসিয়া থানায়।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে সৌরভ ও গৌতমকে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে গৌতমকে ছেড়ে দেওয়া হলেও সৌরভকে ভর্তি নিয়ে নিয়েছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর পেটে গভীর ক্ষত হয়েছে।
আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি পুলিশকর্মীরা ৩২ নম্বর মহেন্দ্র রায় লেনের ওই বহুতলে ঢুকে তল্লাশি শুরু করেন। যদিও অভিযুক্ত দেবাশিসের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর পরে ওই বহুতলে উপস্থিত প্রায় চল্লিশ জনেরও বেশি কর্মীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশের গাড়ি। সেখানেই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। রাত পর্যন্ত খবর, দেবাশিসের পরিচয় জানাতে না চাওয়াতেই ওই অফিসের কর্মীদের থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে নাম-পরিচয় জানা গেলেও দেবাশিসকে রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করার খবর নেই। তাঁর বাড়িতেও হানা দিয়েছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy