Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Mysterious Death

নির্মীয়মাণ বহুতলের সামনে থেকে ব্যাঙ্ককর্মীর দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য

তদন্তকারীরা জানান, মৃতের নাম অভিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় (৩০)। তাঁর বাড়ি বর্ধমানের চুয়াডাঙা এলাকায়। ছ’সাত মাস আগে সল্টলেকের নয়াপট্টি অঞ্চলের একটি বাড়িতে এসে ভাড়া থাকতে শুরু করেন তিনি।

অভিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০৫
Share: Save:

একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক কর্মীর দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। বুধবার সকালের দিকে ইকো পার্ক থানা এলাকার একটি বন্ধ, নির্মীয়মাণ বহুতলের সামনের ঝোপ থেকে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বছর ত্রিশের ওই যুবকের। তবে তিনি উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন, না কি তাঁকে খুন করে ওই ঝোপের কাছে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, মৃতের নাম অভিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় (৩০)। তাঁর বাড়ি বর্ধমানের চুয়াডাঙা এলাকায়। ছ’সাত মাস আগে সল্টলেকের নয়াপট্টি অঞ্চলের একটি বাড়িতে এসে ভাড়া থাকতে শুরু করেন তিনি। এ দিন সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ইকো পার্ক থানা এলাকার একটি জায়গায় ওই যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।

তার পর থেকে প্রায় সারা দিন দেহটি অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই ছিল। দুপুরের দিকে সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় অভিরূপের পরিবারের লোকজন নিখোঁজ ডায়েরি করতে এলে পুলিশের কাছ থেকে ওই অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের কথা তাঁরা জানতে পারেন। এর পরে ছবি মিলিয়ে অভিরূপের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। তবে, গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্য তৈরি হয়েছে। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইকো পার্ক ও টেকনো সিটি থানা এলাকার সংযোগস্থলে যাত্রাগাছি অঞ্চলে জৈব হাটের উল্টো দিকে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল রয়েছে। সেটিতে অবশ্য নির্মাণের কাজ বহু দিন ধরে বন্ধ। এ দিন সকালের দিকে ওই নির্মীয়মাণ বহুতলের সামনে একটি ঝোপের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায় অভিরূপের দেহ।

পুলিশ সূত্রের খবর, যুবকের পরিবার জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিরূপ অফিসে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে পরিজনদের কথাও হয়েছিল। কিন্তু, বুধবার সকাল থেকে তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। শেষে ছেলের খবর না পেয়ে দুপুর তিনটে নাগাদ ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে আসেন অভিরূপের বাড়ির লোক।

উল্লেখ্য, যে নির্মীয়মাণ বহুতলের সামনে ঝোপে অভিরূপের দেহ পড়েছিল, গত বছর সেই বহুতলের ছাদ থেকেই একটি অজ্ঞাতপরিচয় দেহ উদ্ধার করেছিল। বছর দুয়েক আগে ওই বাড়িটির সামনেই জমা জল থেকে উদ্ধার হয় এক যুবকের দেহ। স্থানীয়েরা জানান, ওই জায়গাটি বেশ নির্জন। রাতে অনেক সময়ে মাদকাসক্তদের জমায়েত হয় সেখানে। অভিরূপের দেহ ওই এলাকা থেকে কী ভাবে উদ্ধার হল, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।

বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, প্রাথমিক ভাবে অভিরূপের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে, তাঁর মাথায় একটি আঘাত রয়েছে। পুলিশের অনুমান, উপর থেকে পড়ে যাওয়ার কারণেই ওই আঘাত হয়ে থাকতে পারে। ওই পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘যুবকটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ছেলেটি অবসাদে ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। তাঁর ফোন কলের তালিকাও পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

unnatural death police investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE