ফাইল চিত্র।
নাক দিয়ে জল ঝরছিল। সঙ্গে তীব্র মাথার যন্ত্রণা ও অস্বস্তি। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করালেও সমস্যা মেটেনি। তাই চলে এসেছিলেন শহরে। পরীক্ষায় দেখা যায়, মস্তিষ্কের চার দিকে যে তরল পদার্থ থাকে, সেটিই নাক দিয়ে বেরিয়ে আসছে। যার কারণ, নাক ও মস্তিষ্কের মাঝে তৈরি হওয়া ফুটো। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে নেপালের বাসিন্দা ৬৩ বছরের প্রৌঢ়ার সেই সমস্যার সমাধান করল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
নেপালের হলদিবাড়ির বাসিন্দা শর্মিলা রাজবংশী গত ছ’মাস ধরে এই সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করেও উপশম না হওয়ায় চলে আসেন শিলিগুড়িতে।সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। গত ১৩ ডিসেম্বর সেখানকার নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসকেরা সিটি স্ক্যান করেন। মস্তিষ্কের চার ধারে থাকা তরল (সেরিব্রো-স্পাইনাল ফ্লুইড) যাতে বাইরে বেরিয়ে না আসে, তার জন্য নাকের পিছনের হাড়ে একটি মোটা পর্দা থাকে। কিন্তু সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, ৯ মিলিমিটার লম্বা এবং পাঁচ মিলিমিটার চওড়া একটি গর্ত তৈরি হয়েছে সেই পর্দায়। সেখান দিয়েই সেরিব্রো-স্পাইনাল ফ্লুইড নাকের মাধ্যমে প্রৌঢ়ার শরীর থেকে বেরিয়ে আসছিল।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক রামানুজ সিংহ বলেন, ‘‘নাক দিয়ে প্রবেশ করা যে কোনও সংক্রমণ সহজেই ওই ফুটো দিয়ে মস্তিষ্কে ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল। তাতে ঝুঁকি বেড়ে যেত।’’ তিনি জানান, নাকের এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে ওই গর্তের কাছে পৌঁছনো হয়। পা থেকে চর্বি নিয়ে প্রথমে গর্তটি বোজানো হয়। তার পরে পায়ের মাংসপেশির আবরণের অংশ নিয়ে সেখানে চাপা দেওয়া হয়। এর পরেও আর কয়েকটি প্রক্রিয়া এবং টিসু জোড়ার বিশেষ আঠার মাধ্যমে গর্তটি পুরোপুরি বন্ধ করেন রামানুজবাবু এবং ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক মৈনাক দত্ত, প্রশান্ত গুড়ে-সহ পাঁচ চিকিৎসকের দল।
বছর দশেক আগে একটি পথ-দুর্ঘটনায় মাথায় এবং নাকে চোট পেয়েছিলেন শর্মিলা। তা থেকেই এই সমস্যাটি তৈরি হয়েছিল বলে অনুমান চিকিৎসকদের। প্রৌঢ়া এখন সুস্থ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy