Advertisement
১০ জুন ২০২৪

‘কাউন্টারে চিকেন থেকে বাজে গন্ধ বেরোচ্ছিল, ওঁরা বলছেন, ওগুলো সাজিয়ে রাখার জন্য’

পুরপ্রধান জানান, ফুড কোর্টে সব ক’টি কাউন্টারের রান্নাঘরেরই অবস্থা শোচনীয়। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে ফ্রিজে খাবার রাখলেও আলাদা পাত্রে রাখা হয়।

সরেজমিন: চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে পুরকর্তারা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

সরেজমিন: চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে পুরকর্তারা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০২:২৬
Share: Save:

নিম্ন মানের খাবার দেওয়ার অভিযোগে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ক্রেতা। শুক্রবার যার জেরে ফাঁকা হয়ে গেল একটি শপিং মলের ফুড কোর্ট।

ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে এ দিন খাদ্য অভিযানে নেমেছিল দক্ষিণ দমদম পুরসভা। নয়াপট্টির চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট ঘুরে একটি শপিং মলের ফুড কোর্টে যান পুরপ্রধান এবং চেয়ারম্যান পারিষদেরা। সেখানে দেখা যায়, নামী রেস্তরাঁর পিৎজা থেকেও দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। মল সংলগ্ন এক আবাসনের বাসিন্দা অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় পুর প্রতিনিধিদলকে জানান, ওই পিৎজার রুটি পুরনো হয়ে শক্ত হয়ে গিয়েছে। পিৎজা কাউন্টারে গিয়ে অনিন্দিতা বলেন, ‘‘আপনারা কি মানুষ? এটা দিলে নিজেরা খাবেন তো?’’ ওই মহিলার এ কথা শোনার পরেই বাকি গ্রাহকেরা ফুড কোর্ট খালি করে চলে যান। পরে অনিন্দিতা বলেন, ‘‘আমরা চাকরিজীবী। দায়ে পড়ে সাতসকালে রেস্তরাঁয় খেতে এসেছি। এতগুলো টাকা নিয়ে এরা কি রসিকতা করছে?’’

পুরপ্রধান জানান, ফুড কোর্টে সব ক’টি কাউন্টারের রান্নাঘরেরই অবস্থা শোচনীয়। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে ফ্রিজে খাবার রাখলেও আলাদা পাত্রে রাখা হয়। এখানে একটা পাত্রের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে সব রাখা। একটি কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেল, ফিঙ্গার চিপসে ছাতা পড়ে গিয়েছে। আর একটি কাউন্টারে চিকেন থেকে বাজে গন্ধ বেরোচ্ছিল। দুর্গন্ধময় খাবার কেন রাখা, জানতে চাইলে ওঁরা বলছেন, ওগুলো সাজিয়ে রাখার জন্য।’’

ফুড কোর্টের পাশাপাশি ওই প্রতিনিধিদল এক রেস্তরাঁয় গিয়ে দেখে, সেখানে উচ্ছিষ্ট খাবার যত্নে রাখা। এক টুকরো মুখে দিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ গোপা পাণ্ডে বলেন, ‘‘এ তো টকে গিয়েছে!’’

ওই রেস্তরাঁর দাবি, কী খাবার নষ্ট হয়েছে, তার হিসেব নেওয়ার পরে রোজই সে সব ফেলে দেওয়া হয়। গ্রাহকের ক্ষোভ প্রসঙ্গে পিৎজা কাউন্টারের এক কর্মী বলেন, ‘‘মিডিয়া দেখে ওই কাণ্ড করেছেন মহিলা।’’ মল কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘‘আমাদের তরফে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়।’’

চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটে রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে বলে সন্দেহ পুর কর্তৃপক্ষের। গোপা বলেন, ‘‘দস্তানায় লাল রং লেগে রয়েছে। প্রশ্ন করলে বলা হচ্ছে, চিংড়ির ঘিলু ঘেঁটে দস্তানার ওই রং হয়েছে। তেমন হলে তো আঁশটে গন্ধ ছাড়বে। তা কিন্তু ছিল না।’’ পুরকর্তারা জানান, সন্দেহজনক সব খাবারের নমুনাই পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট থেকেও সংগ্রহ করা হয়েছে নমুনা। সন্দেহ সত্যি হলে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rotten foods Pizza
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE