দোষী: রায়দানের পর আদালতে। নিজস্ব চিত্র
স্বামীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক তিনি মানতে পারেননি। প্রতিবাদ জানানোয় চলছিল অশান্তি। তার জেরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে এক প্রৌঢ় এবং তার প্রেমিকাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত।
প্রায় চার বছর আগের ওই খুনের ঘটনায় সোমবার চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (প্রথম ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট) শুভেন্দু সাহা বলাগড়ের ঘোষালিয়া গ্রামের বাসিন্দা, দোষী বিশ্বনাথ হালদার এবং তার প্রেমিকা, ওই গ্রামেরই শিউলি হালদারকে ওই সাজা শোনান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
মামলার সরকারি আইনজীবী চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই দু’জনকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ৩২৬ (গুরুতর ভাবে জখম করা) ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন। অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড। মামলায় ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।’’
পুলিশ জানায়, খুন হওয়ার কয়েক বছর আগেই স্বামীর সঙ্গে শিউলির সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলেন বিশ্বনাথের স্ত্রী অণিমা (৪৬)। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি বাড়ছিল। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সকালে দু’জনের তুমুল বচসা হয়। বিশ্বনাথ তার প্রেমিকার সহযোগিতায় ওই রাতেই স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অণিমার চিৎকারে পড়শিরা চলে আসেন। বিশ্বনাথ ও শিউলি চম্পট দেয়। গুরুতর জখম অবস্থায় পড়শিদের ঘটনার কথা জানান অণিমা। তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকদের কাছেও জবানবন্দিতে অণিমা ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অণিমার বাপের বাড়িও ঘোষালিয়া গ্রামে। বাপের বাড়ির লোকজন বিশ্বনাথ এবং শিউলির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হলেও দু’জনে পরে জামিন পান। অবশ্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে তারা জেল হেফাজতে ছিল। এ দিনের রায় শুনে অণিমার বৌদি প্রতিমা সেন বলেন, ‘‘উপযুক্ত সাজা হয়েছে। দাম্পত্য সম্পর্কে তৃতীয় কেউ প্রবেশ করলে কী হয়, এ ঘটনা তার একটা উদাহরণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy