জলাশয় তৈরি করা হয়েছে আরামবাগের চাঁদুর বনাঞ্চলে। নিজস্ব চিত্র।
হুগলি জেলার একমাত্র বনভূমি আরামবাগের চাঁদুর রেঞ্জের পরিকাঠামো গড়ায় জোর দিল বন দফতর। চলতি বছর থেকে জঙ্গলে বনভোজন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হয়েছে। এ বার সেখানকার মাটি ও আদ্রতা সংরক্ষণে কিছু জলাশয় নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।
দ্বারকেশ্বর নদের দু’পাড় জুড়ে প্রায় ৬৪০ একর সেই জঙ্গলে প্রথম দফায় চাঁদুর মৌজার অংশে ৬০ ফুট লম্বা এবং ৪৫ ফুট চওড়ার জলাশয় তৈরি করা হয়েছে। আরামবাগের রেঞ্জ অফিসার আসরাফুল ইসলাম বলেন, “জঙ্গলভূমির মাটি ও আর্দ্রতা সংরক্ষণে কাজ শুরু হয়েছে।জঙ্গলের মাটির আর্দ্রতা যথাযথ রেখে মাটির উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই ব্যবস্থা। পাশাপাশি বন্যপ্রাণীরা জলও খেতে পারবে। আবার উভচর প্রাণীদেরস্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে।’’
চাঁদুর বনভূমি রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ ছিল পরিবেশপ্রেমীদের। বিশেষ করে গাছ চুরি, জঙ্গলে ডিজে বাজিয়ে বছরভর বনভোজন করার ফলে বন্য প্রাণীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে কয়েক বার ক্ষোভ-বিক্ষোভও হয়েছে। তা ছাড়া, জবরদখল এবং ধস নেমে নদের দু’পাড় বরাবর তলিয়ে যাওয়া নিয়েও বন দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অনেক অভিযোগ আছে।
তবে বন দফতরের চাঁদুর রেঞ্জ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, জবরদখল উচ্ছেদ প্রক্রিয়া জারি আছে। ইতিমধ্যে আরামবাগের চাঁদুর এবং গোঘাটের ভাদুরের বনভূমিতে বানানো দু’টি খেলার মাঠ পুনর্দখল নেওয়া হয়েছে। খান পনেরো মদ-গাঁজার ঠেক তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন করে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। রেঞ্জ অফিসার জানান, জবরদখল হয়ে থাকা বনভূমি চিহ্নিত করে সবটাই পুনর্দখল করা হবে। বনভূমি রক্ষায় দ্বারকেশ্বর নদের ভাঙন রুখতে কিছু জায়গায় বোল্ডার-পিচিং করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেগুন, শিশু, শাল, শিরীষ ইত্যাদি গাছ নিয়ে আরামবাগ রেঞ্জে মোট জঙ্গলের এলাকা ৬৪০ একর। সেখানে হনুমান, শেয়াল, সাপ, গোসাপ, নেউল-সহ নানা পশুর বাস। নজরে আসে প্রচুর পাখিও। হুগলি জেলার আরামবাগ, গোঘাট এবং বর্ধমান জেলার মাধবডিহি এলাকায় আরামবাগের পারআদ্রা, চাঁদুর, গোঘাটের ভাদুর ও রাঙামাটি এবং বর্ধমানের মাধবডিহি থানার বাবলা নিয়ে এর বিস্তৃতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy