ম্যাথু স্যামুয়েল। গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোটের মুখে হঠাৎই বাংলার নারদ কেলেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে সক্রিয় হল সিবিআই। এই মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন বাংলার প্রাক্তন এবং বর্তমান মন্ত্রী, বিধায়ক থেকে শুরু করে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এমনকি, বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও। বুধবার যদিও অভিযুক্তদের ডেকে পাঠানো হয়নি। সিবিআই এই মামলার সূত্রে তলব করেছে অভিযোগকারী ম্যাথু স্যামুয়েলকে।
ম্যাথু একজন সাংবাদিক। তিনি সংবাদমাধ্যম তেহলকার প্রাক্তন সম্পাদকও। তাঁর নেতৃত্বেই নারদ ‘স্টিং অপারেশন’ চালানো হয়েছিল বাংলার শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালের সেই অভিযানে গোপন ক্যামেরায় তোলা ভিডিয়োয় টাকা নিয়ে দেখা গিয়েছিল সাংসদ মুকুল রায়, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, সুলতান আহমেদ এবং তৎকালীন মন্ত্রী মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং ইকবাল আহমেদকে। তৎকালীন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে নারদ মামলায়।
২০১৪ সালে রেকর্ড করা সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে ২০১৬ সালে নারদনিউজ় ডট কম নামে একটি ওয়েবসাইটে। স্যামুয়েল বলেছিলেন, তিনি তেহলকার হয়ে ওই গোপন ক্যামেরা অভিযান চালালেও শেষ পর্যন্ত তেহলকা ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আনার বিষয়ে বিশেষ হেলদোল দেখায়নি। তাই দু’বছর পর অন্য ওয়েবসাইটে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ করেন স্যামুয়েল। নারদনিউজ়ের নামেই সেই অভিযানের নাম হয় নারদ স্টিং অপারেশন।
সেই ম্যাথুকেই আগামী ৪ এপ্রিল সকাল ১১টার সময় ডেকে পাঠানো হয়েছে কলকাতার নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে। ১৯ এপ্রিল থেকে ভোট শুরু হচ্ছে বাংলায়, তার ঠিক ১৫ দিন আগেই হঠাৎ নারদ মামলার মূল সূত্রধরকে ডেকে পাঠানোর ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা।
ম্যাথুকে পাঠানো চিঠিটি পাঠিয়েছেন কলকাতার সিবিআইয়ের ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার আধিকারিক রিসিনামোল কে সি। ম্যাথুকে তিনি চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আমি যে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছি, সেই মামলা সংক্রান্ত কিছু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আপনাকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে এসে দেখা করতে হবে।’’
ভোটর মুখে হঠাৎই দেশের অ-বিজেপি রাজ্য গুলিতে ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী সক্রিয় হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সম্প্রতি দিল্লিতে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তার আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে ইডি। গ্রেফতারও করে তাঁকে। তবে গ্রেফতারির আগে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। বিহারেও আরজেডি নেতা লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক ঘটনায় ইডি-সিবিআই অভিযান চলছে দীর্ঘ দিন ধরেই। সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। এই পরিস্থিতিতে এ বার নারদ মামলা নিয়ে নতুন করে সক্রিয় হল সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy