Advertisement
০১ জুন ২০২৪
Calcutta High Court

সন্দেশখালির মাম্পিকে মুক্তির নির্দেশ, ‘গ্রেফতারির মাস্টারমাইন্ড কে?’ রাজ্যকে প্রশ্ন হাই কোর্টের

সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রেফতারি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এর নেপথ্যে ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে, জানতে চেয়েছে আদালত।

সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাস।

সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাস। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ১৩:৪১
Share: Save:

সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রেফতারি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এর নেপথ্যে ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে, জানতে চেয়েছে আদালত।

গ্রেফতারির বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মাম্পি। গ্রেফতারিকে বেআইনি বলে দাবি করেছিলেন তিনি। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সেনগুপ্তের এজলাসে। বিচারপতি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত বন্ডে মামলাকারীকে অবিলম্বে হেফাজত থেকে মুক্তি দিতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৫এ ধারায় যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তা-ও স্থগিত থাকবে। আগামী ১৯ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

শুক্রবার শুনানি চলাকালীন মাম্পির গ্রেফতারি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। মাম্পির গ্রেফতারির ক্ষেত্রে ১৯৫এ ধারা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘ম্যাজিস্ট্রেট কী করেছেন? ১৯৫এ ধারা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। তার পরেও তিনি কী ভাবে এই নির্দেশ দিলেন? এমন গ্রেফতারের নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড কে? এই মামলাটি কোন অফিসার দেখছেন?’’

রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি সেনগুপ্ত জানান, এ ভাবে কাউকে গ্রেফতার করাই যায় না। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনারা হয়তো এই কোর্টকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশগুলি অন্তত মেনে চলুন।’’ পাশাপাশি, মাম্পিকে ফাঁসানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করে আদালত।

শুক্রবার মাম্পির আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার আদালতে সওয়ালে জানান, গত ৭ মে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় এফআইআর দায়ের হয়। তার দু’দিন পরে ৪১এ ধারায় নোটিস দেয় পুলিশ। গত ১৪ মে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনযোগ্য ধারায় জামিন নিতে গেলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ১২ দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করে নিম্ন আদালত। প্রথম দিন পুলিশের কেস ডায়েরি না দেখেই হেফাজতে পাঠিয়েছিল নিম্ন আদালত।

সন্দেশখালির ঘটনায় বহু অভিযোগে বার বার উঠে এসেছে মাম্পির নাম। তার মধ্যে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অসত্য মামলা রুজু করানোর মতো অভিযোগও রয়েছে। সম্প্রতি, সন্দেশখালির এক গৃহবধূও সেই অভিযোগ করেন সন্দেশখালি থানায়। পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর গ্রেফতার হওয়া ভাইকে ছাড়ানোর শর্তে ধর্ষণের অসত্য অভিযোগ দায়ের করতে বলেছিলেন এই মাম্পি। পরে অভিযোগ তুলে নিতে চাইলে বিজেপির তরফে তাঁকে শাসানোও হয়। মাম্পি ওরফে পিয়ালির নাম শোনা গিয়েছিল সন্দেশখালির ‘স্টিং’ ভিডিয়োতে, গঙ্গাধর কয়ালের মুখেও। (আনন্দবাজার অনলাইন সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।)

একের পর এক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের নোটিস পেয়ে গ্রেফতারি এড়াতে বসিরহাট আদালতে অগ্রিম জামিন চাইতে গিয়েছিলেন মাম্পি। সেখানে অন্য মামলা দিয়ে তাঁকে বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয় বলে অভিযোগ। নিম্ন আদালত তাঁকে সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে মামলা করেন মাম্পি। শুক্রবার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE