Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Durgapur Thermal Power Station

দখল তুলতে বাধার মুখে ডিটিপিএস

ডিটিপিএস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো কর্মীরা অবসর নেওয়ার পরে নতুন নিয়োগ হয়নি। ফলে, কলোনিতে প্রায় ৫০০ কোয়ার্টার্স ফাঁকা পড়েছিল।

দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশন।

দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশন। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪৫
Share: Save:

ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিটিপিএসে (দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশন) ৮০০ মেগাওয়াটের পঞ্চম ইউনিট গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই দখলকারীরা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। অভিযোগ, মাঝেমধ্যে সীমানা পাঁচিল দেওয়ার কাজে বাধা দিচ্ছেন তাঁরা। জবরদখল হওয়া কোয়ার্টার্স শুক্রবার ফাঁকা করতে গিয়েও কার্যত বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ ডিটিপিএসের আধিকারিকদের। শেষ পর্যন্ত ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তাঁরা ফিরে যান।

দুর্গাপুরের মায়াবাজারে ডিভিসি ১৯৬৬-তে ডিটিপিএস গড়ে তোলে। ২০১৬-র মার্চের পর থেকে চালু ছিল ২১০ মেগাওয়াটের একটি মাত্র ইউনিট। দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশে ২০২০-র ৩১ ডিসেম্বর সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। মাস ছয়েক পরে সাময়িক চালু হলেও, পরে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় সেটিও। তার পর থেকে উৎপাদনহীন হয়ে পড়ে ডিটিপিএস। সম্প্রতি ডিভিসি নতুন ৮০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সে জন্য মায়াবাজার, ডিটিপিএস কলোনি-সহ সংলগ্ন এলাকার দখলদারদের উঠে যাওয়াার জন্য নোটিস জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদে সেই সব এলাকার বাসিন্দারা ‘দুর্গাপুর ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরক্ষা কমিটি’র নেতৃত্বে পুনর্বাসনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।

ডিটিপিএস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো কর্মীরা অবসর নেওয়ার পরে নতুন নিয়োগ হয়নি। ফলে, কলোনিতে প্রায় ৫০০ কোয়ার্টার্স ফাঁকা পড়েছিল। কর্তৃপক্ষের দাবি, সেগুলি জবরদখল হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় বিপজ্জনকও হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি সেই সব কোয়ার্টার্স ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে নোটিস দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার ডিটিপিএসের আধিকারিকেরা গিয়েছিলেন সেগুলি ফাঁকা করতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘মাইকিং’ করে জানিয়ে দেওয়া হয়, অবিলম্বে ছেড়ে না গেলে সব কোয়ার্টার্সের জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হবে। আবাসিকদের কেউ কেউ আধিকারিকদের কাছে কয়েক দিন সময় চান। কেউ কেউ আবার পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে ক্ষোভ জানাতে শুরু করেন। কয়েকজনের অভিযোগ, কিছু কোয়ার্টার্সে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ ইতিমধ্যেই ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। সেই সব পরিবারগুলি বিপাকে পড়েছেন। এরই মধ্যে ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষ কোয়ার্টার্স খালি করার ১০ দিন সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ফিরে যান।

ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, এত তাড়াতাড়ি কোয়ার্টার্স ছেড়ে দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন, “আমাদের বাবা, কাকা’রা ডিটিপিএসে কাজ করতেন। অবসরের পরে অন্যত্র যাওয়ার জায়গা না থাকায় ২০-২৫ বছর ধরে এখানেই বাস করছেন। এখন কোয়ার্টার্স ছেড়ে দিতে হলে যাব কোথায়?”

ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, সময়সীমা আর বাড়ানো সম্ভব নয়। কোয়ার্টার্সগুলির অবস্থা খুব খারাপ। যে কোনও সময়ে বিপদ ঘটতে পারে। ডিটিপিপিএসের আধিকারিক অমিতকুমার মোদীর দাবি, “বাসিন্দারা কোয়ার্টার্স ছাড়ার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাই আপাতত এ দিন আধিকারিকেরা চলে আসেন।” ডিটিপিএস সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ দিন পরে ফের যাবেন আাধিকারিকেরা। তার মধ্যে আবাসিকেরা কোয়ার্টার্স না ছেড়ে দিলে কর্তৃপক্ষের তরফে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE