নমাজের মাঠ থেকে জল সরানো হচ্ছে। ছবি: উদিত সিংহ
ঝোড়ো হাওয়ায় লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল নমাজের জায়গা। ভেঙেছিল প্যান্ডেল। বৃষ্টিতে জমেছিল জল। সবাই যখন দুশ্চিন্তায়, তখন ঝাঁটা-কোদাল নিয়ে জল-কাদা সাফ করতে নেমে পড়লেন হিন্দু যুবকেরা। ফের বাঁধা হল মণ্ডপ। শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন এগিয়ে এলেন শরবত নিয়ে। মঙ্গলবার এই সম্প্রীতির সাক্ষী থাকল বর্ধমান শহর।
এ বছরই প্রথম বর্ধমান শহরের ‘দুবরাজদিঘি-বাজেপ্রতাপপুর কেন্দ্রীয় ইদ উদযাপন কমিটি’-র উদ্যোগে শোলাপুকুর মসজিদের সামনে ‘খেলা হবে’ ময়দানে নমাজের আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় নমাজ পড়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে মাঠে জল জমে যায়। প্যান্ডেলের কাপড়ও ঝড়ে উড়ে যায়।
বৃষ্টির দাপট কমতেই, কোদাল-ঝাঁটা নিয়ে মাঠের জল বার করতে নেমে পড়েন ভবানীপ্রসাদ গুপ্ত, মিঠুন দাসেরা। সুমন দত্ত, হিরন্ময় গড়াই, সুদীপ গায়েনরা হাত লাগান প্যান্ডেল ঠিক করতে। ভবানীপ্রসাদ বলেন, ‘‘এখানে আমরা এক সঙ্গেই থাকি। উৎসব উ়দ্যাপনে আমরা-ওরা করি না।’’ সকাল ৯টায় প্রায় ৩০০ জনকে নিয়ে শুরু হয় নমাজ। শিখ সম্প্রদায়ের লোকেরা নমাজে যোগ দেওয়া মানুষজনের হাতে শরবত তুলে দেন। তাঁদের তরফে অমৃত সিংহ বলেন, ‘‘বর্ধমান সম্প্রীতির শহর।
বাজেপ্রতাপপুর সম্প্রীতির মিলনস্থল।’’ দেবু মাল নামে এক যুবক নমাজ শেষে, সবাইকে মিষ্টিমুখ করান। স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল আলম বলেন, ‘‘বাজেপ্রতাপপুরে মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার রয়েছে। যে মাঠে আজ নমাজ হয়েছে, সে মাঠেই দুর্গাপুজো হয়। বাজেপ্রতাপপুর সম্প্রীতির বার্তা দেয় সারা বছর।’’ নমাজ পাঠ করানোর পরে, মৌলানা জহুর আলি বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোয় মুসলিম ভাইয়েরা মণ্ডপ তৈরি করেন। আর আজ হিন্দু ভাইয়েরা নমাজের মাঠ তৈরি করে দিলেন। এটাই আমাদের ঐতিহ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy