Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Lok Sabha Election 2024

স্কুলকে টাকা দেওয়া নিয়ে সাংসদের দাবি ঘিরে প্রশ্ন

দিন কয়েক আগে বিদায়ী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁ লোকসভার বিদায়ী সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সাংসদ হিসেবে গত পাঁচ বছরে কী কাজ করেছেন, তার খতিয়ান দিয়ে একটি লিফলেট প্রকাশ করেছেন।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র  
গোবরডাঙা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৪ ০৮:৫৯
Share: Save:

বিদায়ী সাংসদের দাবি, স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের জন্য তিনি ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সাংসদ মিথ্যা বলছেন। তিনি কোনও টাকা দেননি। স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও কোনও টাকা ঢোকেনি।

লোকসভা ভোটের আবহে এই ঘটনায় সরগরম গোবরডাঙার রাজনৈতিক পরিবেশ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও টাকা পাননি।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

দিন কয়েক আগে বিদায়ী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁ লোকসভার বিদায়ী সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সাংসদ হিসেবে গত পাঁচ বছরে কী কাজ করেছেন, তার খতিয়ান দিয়ে একটি লিফলেট প্রকাশ করেছেন। ইস্তাহারে শান্তনুর দাবি, গোবরডাঙা খাঁটুরা হাই স্কুলে আধুনিক স্মার্ট ক্লাসরুমের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ওই তথ্যের কড়া সমালোচনা করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের দাবি, বিদায়ী সাংসদের দাবি ভুল। তিনি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন। সেখানে বলেছেন, ‘‘একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল গত পাঁচ বছরে বনগাঁ লোকসভায় কাজের খতিয়ান দিয়ে বলেছে, আমাদের বিদ্যালয় স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের জন্য ১০ লক্ষ টাকা খরচের হিসাব দেখিয়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে চাই, এ রকম কোনও স্কিম আমাদের স্কুলে কার্যকর হয়নি।’’ পরে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে কোনও আধুনিক স্মার্ট ক্লাসরুমই নেই। স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের জন্য কোনও টাকা স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কখনও ঢোকেনি। স্কুলে একটা পুরনো প্রজেক্টর আছে। কিন্তু কোনও স্মার্ট ক্লাসরুম নেই।’’ কী বলছেন শান্তনু? তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের জন্য আমি ১০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ তারপরে আমাকে আর কিছু জানাননি। ওঁরা কাজ করবেন কি করবেন না, কিছুই বলেননি। তা হলে আমি কী বুঝব? নথিপত্র আমার কাছে আছে।’’ শান্তনু অভিযোগ, ‘‘গোবরডাঙার পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত প্রধান শিক্ষককে চাপ দিয়ে, ভয় দেখিয়ে কাজ না করতে বাধ্য করেছিলেন। যেহেতু আমি টাকা অনুমোদন করেছিলাম, তাই লিফলেটে লিখেছি।’’

প্রধান শিক্ষক এবং পুরপ্রধান দু’জনেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। প্রধান শিক্ষক সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি জানানোর পরেই জেনেছি।’’

ভোটের প্রচারে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে কড়া সমালোচনা শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘এই ঘটনায় প্রমাণ হল, শান্তনু ঠাকুর কী ভাবে তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা জালিয়াতি করেছেন।’’ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার তিনি তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে গোবরডাঙায় সভা করতে এসেছিলেন। বিশ্বজিৎকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও ইউটিলাইজেশন শংসাপত্র পায়নি। কোনও অনুমোদন পায়নি। কোনও কিছুই পায়নি। সাংসদ তহবিলের টাকা কোনও প্রকল্পে দিতে হলে জেলাশাসককে চিঠি দিতে হয়। সাংসদ নিজেও সরকারি স্কুলকে টাকা দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে স্কুলে কোনও কিছুই হয়নি। অথচ, প্রচার করা হচ্ছে স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বিশ্বজিৎকে সঙ্গে নিয়ে আমি বলতে চাই, এই ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত। কেন এই মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে, মানুষকে বোকা বানানো হয়েছে।’’

শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে শান্তনুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ব্রাত্য বসুরা তো বাংলার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ঝুড়ি ঝুড়ি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সেই টাকার ভাগ কি উনি পেয়েছেন? সেই প্রশ্নের আগে উত্তর দিন ব্রাত্য।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Gobardanga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE