টলিউডের কমার্শিয়াল ছবির মিউজিকে জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একটা বড় খুঁটি। তাঁর ‘খামোশিয়াঁ’ নিয়ে বলিউ়ড এখনও সরগরম। তার মাঝেই রিয়্যালিটি শোয়ের বিচার-পর্ব, ধারাবাহিকের জন্য সুর করা... সবটাই চালিয়ে যাচ্ছেন।
রিয়্যালিটি শো নিয়ে যেখানে অধিকাংশেরই নাক উঁচু ভাব, সেখানে জিৎ শোয়ের প্রতিযোগীদের দিয়েই সফলভাবে গান গাইয়ে যাচ্ছেন। বললেন, ‘‘যাঁরা বলেন রিয়্যালিটি শো চলাকালানীই গাইয়েরা স্টার, তার পর তাদের কোনও অস্তিত্ব থাকে না, তাঁরা ভুল বলেন।’’ দেবের ‘চ্যাম্প’, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় ‘দেখ কেমন লাগে’ ছবিতে রিয়্যালিটি শোয়ের ছেলেমেয়েদের দিয়েই গান গাইয়েছেন জিৎ। জি বাংলার ধারাবাহিক ‘জামাই রাজা’র টাইটেল ট্র্যাকেও তাই।
মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অভিযোগ আর পালটা অভিযোগের পালা চলছে। পেশাদার গাইয়ের বদলে অভিনেতারা গান গাইছেন। পুরনো গানকে নতুন করে রিক্রিয়েট করা হচ্ছে। এগুলো সম্পর্কে তাঁর কী মতামত? স্পষ্টবক্তা জিতের জবাব, ‘‘অভিনেতাদের মধ্যে কেউ কেউ সত্যিই ভাল গান করেন। কিন্তু সকলে যদি গান গাইতে যান, তা হলে মুশকিল। পেশাদার তালিম ছাড়া এগুলো হয় না।’’ নানা রকম টেকনিক্যাল কারিকুরি, অটো টিউন করে গানের গলা বদলে দেওয়া যায়। যদিও জিতের মতে, এই সব করে গোটা দু’য়েক গান কেউ গাইতে পারে বড়জোড়। তার পর আর সেই গায়কের খোঁজ পাওয়া যাবে না। এমন উদাহরণ প্রচুর। তা হলে কি সেলেবদের দিয়ে গান গাওয়ানোটা একেবারেই গিমিক? ‘‘আমরা সংগীত পরিচালকেরা একেবারে গান পয়েন্টে থাকি! মাঝে মধ্যে স্টারদের দিয়ে গান গাওয়াতে হয়। কিন্তু সব গান তো তাঁদের দিয়ে হবে না। সেখানে পেশাদার গায়কই লাগবে,’’ সাফ জবাব জিতের।
পুরনো গান নতুন করে তৈরি করা নিয়ে খানিক আপত্তি আছে ওঁর। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, নতুনভাবে অ্যারেঞ্জ করার জন্য পুরনো গানের মেলোডি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ‘‘দেখবেন, রিয়্যালিটি শোগুলোতে প্রতিযোগীরা পুরনো গানগুলোই বেশি গায়। কিন্তু সিনেমার ক্ষেত্রে দেখছি, নতুনভাবে তৈরি করার ফলে পুরনো গানের মাধুর্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রিক্রিয়েট করা নিয়ে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু পুরনো গানকে যেন বিকৃত করা না হয়,’’ বললেন সুরকার।
সম্প্রতি অনেক হিন্দি ছবিতেই পুরনো গান ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলায় কিন্তু এই ট্রেন্ডটা নেই। তার কি বিশেষ কোনও কারণ আছে? ‘‘এটা তো ভাল যে, বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে পুরনো গান ধার করে চালাতে হচ্ছে না। আমরা এখানে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারছি। আর শ্রোতা সেটা পছন্দও করছেন,’’ বলার সময় খুশি ঝরে পড়ছিল তাঁর গলায়। বাংলার অরিজিন্যাল গানের জন্যই অনুপম রায় এ বার পুরস্কার পেয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে অবশ্য ঢুকতে চাইলেন না জিৎ। বললেন, ‘‘পুরস্কার প্রসঙ্গে যেতে চাই না। বাংলায় যে অরিজিন্যাল গান হচ্ছে সেটাই আশার কথা। পুরনো গান নস্ট্যালজিয়ার জায়গায় রয়েছে। সেগুলোকে নতুন করে কাটাছেঁড়া না করাই ভাল।’’
সদ্য ‘বস টু’-এর মিউজিক করলেন। আর মুম্বইয়ে? জানালেন অনুপম খের প্রযোজিত পরবর্তী ছবিতে সুর করছেন তিনি। এত কাজের ফাঁকে তাঁর নিজের অ্যালবাম কবে বেরোবে? জবাবে বললেন, ‘‘সেটারই তো সময় পাচ্ছি না। যে সব গান অ্যালবামে রাখব বলে ভাবি, পরে কোনও না কোনও ছবিতে সেগুলো ব্যবহার হয়ে যায়। ‘খামোশিয়াঁ’টাও তো আলাদা
রাখা ছিল। কিন্তু সেটাও তো....দেখা যাক কবে নাগাদ কিছু করে উঠতে পারি।’’
অ্যালবাম যখন হচ্ছে না, তখন সিঙ্গল হতে পারে। বলিউড-টলিউডে এটাই তো নতুন ট্রেন্ড। উচ্ছ্বসিত গলায় বললেন, ‘‘হ্যাঁ, এই ট্রেন্ডটা সত্যিই ভাল। অরিজিৎ, শ্রেয়ার সঙ্গে ওদের সিঙ্গলসের অ্যালবামে কাজ করলাম। এই ফরম্যাটটা আমার বেশ পছন্দের। শিল্পী নিজের মতো করে কাজ করতে পারে।’’
ছ’সাতটা গান নিয়ে অ্যালবাম করা বেশ খরচসাপেক্ষ। প্রযোজকের আবদার মেটানোরও দাবি থাকে। সে দিক থেকে নিজের মর্জিমতো একটা গান তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে দেওয়াটা অনেক নির্ঝঞ্ঝাটের। তাই সিঙ্গলস দিয়েই এখন আশার আলো দেখছে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি। ভবিষ্যদ্বাণী করার সুরে জিৎ বললেন, ‘‘ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্মের যুগে এই ফরম্যাটটা আরও জনপ্রিয় হবে। মিলিয়ে নেবেন আমার কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy