মিমি চক্রবর্তী
আমার বাড়ি জলপাইগুড়িতে হলেও ছোটবেলায় কোনও দিন দার্জিলিং যাইনি। ব্যাপারটা শুনতে লাগছে, যেন পাশের পাড়াতেই কখনও যাইনি! আমাদের বাড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে লাগে মোটে ২ ঘণ্টা। আমার আর আমার মায়ের পাহাড়ে উঠলে নিঃশ্বাসের সমস্যা হয়। প্রথম দার্জিলিং গেলাম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সফরে। তবে সে বার বেশি ঘুরতে পারিনি। ‘কাট-মুণ্ডু’র শ্যুটিংয়ের সময় অনেক ঘুরেছি। সকলের মুখে কেভেন্টার্স, গ্লেনারিজের কথা শুনেছিলাম। সব জায়গাগুলোয় ঘুরেছি, খেয়েছি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা আর কী বলব, যাঁরা দার্জিলিং গিয়েছেন সকলেই জানেন। ওখানে গিয়ে বুঝতে পারলাম, বাঙালিরা কেন এই জায়গাটার প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। কেন দিন চারেকের ছুটি পেলেই বারবার দার্জিলিংকেই বেছে নেন। আসলে হাতের নাগালে এমন জায়গা থাকলে কে আর রাজ্যের বাইরে যেতে চায়!
কোয়েল মল্লিক
এমন বাঙালি কম পাওয়া যাবে, যাঁরা দার্জিলিংয়ে যাননি। আমি অবশ্যই সেই দলের নই। ছোটবেলায় ভেকেশন পড়লে মা-বাবার সঙ্গে অনেকবারই দার্জিলিং গিয়েছি। সিনিক বিউটি। ওয়েদার তো বটেই, সেই সঙ্গে এই জায়গাটার একটা আলাদা অ্যাট্রাকশন হল গ্লেনারিজ আর কেভেন্টার্সে খাওয়া। ‘ছায়া ও ছবি’র শ্যুটিং চলাকালীন একটা লম্বা সময় দার্জিলিংয়ে ছিলাম। তখন ম্যালে ঘোরা, খাওয়া... খুব এনজয় করেছি। আমি হোটেলের যে রুমটায় ছিলাম, সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যেত। রোজ অপেক্ষায় থাকতাম, কবে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা পাব। ঘুম থেকে উঠে যে দিন তার দর্শন পেতাম, মন ভরে যেত। মনে হতো, নিজের সঙ্গে পাহাড়ের অনেক গল্প আছে। এ বার তো আমরা কনকনে ঠান্ডায় টাইগার হিলে শ্যুটিংও করেছি। জাস্ট জমে যাচ্ছিলাম। তবে এত বার দার্জিলিং গেলেও আমার কিন্তু টয়ট্রেন চড়া হয়নি।
আবির চট্টোপাধ্যায়
কতবার দার্জিলিং গিয়েছি সেই সংখ্যাটা বোধহয় গুনে বলা সম্ভব নয়। আমি নিজে ছোটবেলায় আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে গিয়েছি। আর এখন মেয়ে ময়ূরাক্ষীকে নিয়ে যাই। গত বছর ভাইফোঁটার সময় শেষ গিয়েছিলাম। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানো ছাড়া শ্যুটিং কিংবা ছবির প্রচারের দৌলতেই দার্জিলিং বেড়ানো হয়ে যায়। ‘কাট-মুণ্ডু’ আর ‘ছায়া ও ছবি’র সময় তো বেশ ভাল করে ঘুরে নিয়েছি। ঠান্ডার সময় ওখানে এক রকমের মজা। আবার কলকাতার গরম থেকে নিস্তার পেতে দার্জিলিংয়ে ছুট লাগানোটাও অন্য রকম। এ রকমও হয়েছে ডুয়ার্সে শ্যুট করছি, এক দিনের ছুটি পেতেই টুক করে দার্জিলিং ঘুরে এলাম। গ্লেনারিজ তো যেতেই হবে। দার্জিলিংয়ের পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, আমার কাছে ওখানকার চার্ম কোনও দিন নষ্ট হবে না।
তনুশ্রী চক্রবর্তী
ছোটবেলায় দার্জিলিং যাওয়ার স্মৃতি খুব একটা মনে পড়ে না। তবে বড় হয়ে অনেক বার গিয়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে, শ্যুটিংয়ে। আবার মা-কে নিয়ে আমি গিয়েছি। বাঙালির কাছে চির আকর্ষণের জায়গা দার্জিলিং। আমাদের গল্পে, উপন্যাসে কত উল্লেখ রয়েছে। সকালের কুয়াশা, দুপুরের মিঠে রোদ, রাতের হি-হি করা কাঁপুনি সব ক’টা আলাদা আলাদা স্বাদ। দার্জিলিং না গেলে ওখানকার চার্ম বোঝা সম্ভব নয়। আগে পলিউশন কম ছিল, এখন অল্প একটু বেড়েছে সেটা, তাও বলব দার্জিলিং আমাদের কাছে অনন্য।
রূপম ইসলাম
ছোটবেলা থেকে এত বার দার্জিলিং গিয়েছি যে, ঠিক কত বার সে সংখ্যাটা হারিয়ে গিয়েছে। দশ বারের বেশি তো বটেই! শিলিগুড়িতে যত বার কনসার্ট করতে গিয়েছি, এক বার দার্জিলিং ঘুরে এসেছি। তবে ২০১৫-র দার্জিলিং সফর ছিল স্মরণীয়। সে বার আমার ছেলে রূপ বায়না করেছিল দার্জিলিং যাওয়ার। কিন্তু যাওয়ার আগের রাতে ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। কানে সংক্রমণ থেকে জ্বর। তখন রূপসা (আমার স্ত্রী) বলল, আমি একাই যেন ঘুরে আসি। শুধু মাত্র গান লেখার তাগিদেই যাব বলে ঠিক করি। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে আমি প্রথম গানটা লিখি ‘দার্জিলিং ২০১৫’। ওই সফরে এক দিনের মধ্যেই আমি পাঁচটা গান লিখে ফেলি। এটা আমার জীবনে একটা রেকর্ড। গোটা সফরে মোট ছ’টা গান লিখেছিলাম। এদের মধ্যে ‘আদমের সন্তান’ গানটি একক কনসার্টে গেয়েছি। শ্রোতাদের খুব পছন্দও হয়েছে। আমার ‘আরও একবার’, ‘ভ্যাপসা ব্লুজ’ আর ‘ক্ষুধার্ত মাংসাশী’ গানগুলি লেখার অনুপ্রেরণাও ছিল দার্জিলিং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy