পাক্কা দু’দশক কেটে গিয়েছে। কত কীই না বদলেছে। পাতি পিচবোর্ডের তৈরি ব্যবসায়ী খেলার জায়গা আর নেই। ধুলো পড়া কাঠের বাক্সও নেই। সে সব ক্রমে ক্রমে দখল করেছে অত্যাধুনিক ঝাঁ-চকচকে গ্রাফিক্সের রেসিং, যুদ্ধ, ফার্মিংয়ের ভার্চুয়াল খেলা। তাই কুড়ি বছর পর ‘জুমানজি’ও যে বদলে যাবে, সে তো স্বাভাবিকই।
আর এই কারণেই বলতে হয়, ২০১৮-র দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এখনকার গেমিং ভালই রপ্ত করেছেন পরিচালক জেক ক্যাসড্যান। তাই নিউ হ্যাম্পশায়ারের ব্র্যান্টফোর্ডের কিশোর অ্যালেক্স (নিক জোনাস) পুরনো কাঠের বাক্সের যে জুমানজি খুঁজে পেয়ে খেলতে শুরু করেছিল, সেটা ম্যাজিকের মতো বদলে যায় ভিডিয়ো গেমের কার্ট্রিজে। আলেক্স আটকে থাকে খেলার ভিতরই। পরে চার কিশোর-কিশোরীর জঙ্গল অভিযান শুরু হয় জুমানজি ভিডিয়ো গেমের মাধ্যমে। খেলার মধ্যে ঢুকে বয়স বেশ বেড়ে যায় সকলের। গেমের চরিত্র অনুযায়ী তারা হয়ে ওঠে ব্রেভস্টোন (ডোয়েন জনসন), রুবি (ক্যারেন জিলান), মাউস (কেভিন হার্ট) ও শেলডন (জ্যাক ব্ল্যাক)। প্রত্যেকেরই কিছু ভাল গুণ আছে, কিছু দুর্বলতা। এবং স্বাভাবিক ভাবেই নায়ক ডোয়েন ওরফে ব্রেভস্টোনের কোনও দুর্বলতা নেই। তাই সে যেমন ৯০ ডিগ্রি কৌণিক ভাবে হেলিকপ্টার ঘুরিয়ে বাঁচিয়ে ফেলতে পারে মাউসকে, তেমনই জুমানজির শান্তি রক্ষায় বড় ভূমিকাটাও তারই হয়। চার জনের দেখা হয় কুড়ি বছর আগে হারিয়ে যাওয়া অ্যালেক্সের সঙ্গে। ভ্যান পেল্ট (ববি ক্যানাভেল) নামে একজন ভীষণ শয়তান জাগুয়ারের চোখের সবুজ মণি নিয়ে পালিয়েছে। তা হাত বদলও হয়েছে। পাঁচ জনের দায়িত্ব সেই মণি জাগুয়ারের চোখে ফেরত দেওয়া। তবেই মিলবে খেলা থেকে নিষ্কৃতি। কিন্তু প্রত্যেকের হাতে আছে তিনটে করে ব্যাটারির মতো দেখতে জীবন। তার মধ্যে লেভেল শেষ করতে পারলে তবেই সকলে ফিরতে পারবে বাস্তবে।
জুমানজি: ওয়েলকাম টু দ্য জাঙ্গল
পরিচালনা: জেক কাসড্যান
অভিনয়: ডোয়েন, জ্যাক, কেভিন,
ক্যারেন, নিক, ববি
৫.৫/১০
তাই তীব্র গতির বাইক সওয়ার, প্রচুর গোলাগুলি, জাগুয়ারের দল, সাপের নাচন, জলহস্তীর কামড়, হাতির তেড়ে আসা... সব কিছুকে সামলে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন হয় কি না— সেটাই দেখার। ত্রিমাত্রিক ছবির গ্রাফিক্স বেশ নজরকাড়া। অভিনয় নিয়ে আলাদা কিছু বলার নেই। তবে ছবির ভিলেন যে কেন এত টিপিক্যাল হয়ে গেল, কে জানে! রবিন উইলিয়ামসকে শ্রদ্ধা জানাতেই নাকি এই ছবি তৈরি হয়েছে। তাই অ্যালেক্স যখন বলে, ‘‘এটা অ্যালান প্যারিশের (১৯৯৫ সালের ‘জুমানজি’তে রবিনের নাম) জায়গা। আমি থাকছি মাত্র,’’ তখন সত্যিই মন ভাল হয়ে যায়।
আমরা যারা ’৯০-এর ছেলেমেয়ে, যারা কৈশোরে জানতাম না স্মার্টফোনের কেরামতি বা যারা হাঁ করে জলে কুমিরের হাত থেকে বাঁচার জন্য ঝাড়বাতিটা শক্ত করে ধরে থাকার রূপকথায় বিশ্বাস করি, তারা এখনও ছেলেবেলার সাপলুডো ভালবাসি। রবিন উইলিয়ামসকেই ভালবাসি, বড্ড ভালবাসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy